BRAKING NEWS

নারী দিবসের মঞ্চ থেকে মোদীর বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ মমতার

কলকাতা, ৮ মার্চ (হি.স.): নারী দিবসের মঞ্চকে কার্যত রাজনৈতিক মঞ্চে রূপান্তর করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়| এই নারী দিবস উপলক্ষে প্রতিবারের মত এবারও রাজপথে মিছিল করেন মুখ্যমন্ত্রী| তবে এই মিছিলকে আসন্ন লোকসভা ভোটের প্রচার বলেই মনে করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল| শ্রদ্ধানন্দ পার্ক থেকে মিছিল শুরু হয়ে ধর্মতলা পর্যন্ত আসে| এরপরেই ডরিনা ক্রসিংয়ে সভা করেন তৃণমূল নেত্রী। আর সেই সভাতে একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রে বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন মিছিলে পা মেলান কাকলি ঘোষদস্তিদার, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মালা রায়, স্মিতা বক্সী, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ নেত্রী।

নারী দিবস উপলক্ষ্যে মিছিল করলেও ‘মোদী বিরোধী’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে মিছিলের পরিবেশ| সমগ্র মিছিল জুড়ে আওয়াজ চড়ে ‘মোদী হঠাও, দেশ বাঁচাও।মহিলাদের উন্নয়ন হোক কিংবা রাজ্যের সার্বিক উন্নতি সবেতেই কেন্দ্রের থেকে এগিয়ে তাঁর রাজ্য সরকার বলেও দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের সুপ্রিমো এদিন বলেন, ‘মহিলারা সমাজের আসল শক্তি। ভোট আসলেই সবাই নারী সংরক্ষণ বিলের প্রসঙ্গ তোলেন।কিন্তু ‌সংসদে তৃণমূলই একমাত্র দল, যাঁদের সাংসদদের মধ্যে ৩৫ শতাংশই মহিলা। আগামীদিনে সেই সংখ্যটাকেও বাড়ানো হবে। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত এবং পৌরসভায় মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে”| এরপরই মহিলা উন্নয়নেও বাংলা দেশের মধ্যে সেরা বলে দাবি করে মমতা| পাশাপাশি তিনি আরও জানান, “আমরা রাজ্যে মাতৃত্বকালীন ছুটি, শিশুদের শরীর অসুস্থ থাকলে মায়েদের ছুটি প্রভৃতি চালু করেছি। ‘‌স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে‌ সাড়ে সাত কোটি মানু্ষ সুবিধা পাবে। তবে সেক্ষেত্রে পরিবারের মাথা হিসেবে আমরা মহিলাদের রাখার কথাই আমরা বলেছি। এছাড়া এই প্রকল্পে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সহ ৫ লক্ষ টাকা বিমার ব্যবস্থা করেছি। কৃষক,শ্রমিকদের উন্নয়নে বাংলা সবার থেকে এগিয়ে। ১০০ দিনের কাজে ৪৮ শতাংশ মহিলা কাজ করছেন। ‌এই রাজ্যে আমরা সবাই একসঙ্গে থাকি, উৎসব একসঙ্গে পালন করি, একে–অপরকে ঘৃণা করি না”| দেশের শান্তি–সম্প্রীতি–সংস্কৃতিকে রক্ষা করার কথা বলে ঐক্যবদ্ধ দেশ গড়ার ডাক দেন তিনি|

এরপরেই মোদী বিরোধী সুরে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়| মোদি ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে কটাক্ষ করে একের পর এক বাক্যবাণে বিদ্ধ করতে থাকেন তিনি| রাফাল থেকে পুলওয়ামা, নোটবন্দি থেকে নীরব মোদী, সিবিআই, আরবিআই-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলি ধ্বংস বাদ দিলেন না কোনও বিষয়ই| তিনি বলেন, ‘একদিকে আমরা যেমন বেকারত্ব কমিয়েছি তেমনই অপরদিকে কেন্দ্র ২ কোটি যুবক–যুবতীর চাকরি কেড়ে নিয়েছে। এই কেন্দ্র সরকারের আমলে ২০০ শতাংশেরও বেশি জঙ্গি উপদ্রব বেড়েছে”| আগে থেকে খবর থাকা সত্ত্বেও জওয়ানদের সুরক্ষায় এই সরকার কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বিজেপির কর্মকান্ডকে টিপ্পনি কেটে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আসলে নির্বাচন তো বড় বালাই, তাই এখন মিসাইল দেখাচ্ছে। যুদ্ধ যুদ্ধ খেলছে। কিন্তু আগে থেকে খবর থাকা সত্ত্বেও কেন পুলওয়ামার ওই হামলা রোখা গেল না?‌’‌ এরপরই রাফাল থেকে নোটবন্দি নিয়েও সরব হন তিনি।

রাফাল প্রসঙ্গে বলেন, ‘‌এখন বলছে রাফালের ফাইল চুরি হয়েছে। ‌কিন্তু আপনি তো দেশটাকেই চুরি করে নিয়েছেন। দেশের অভ্যন্তরীণ তথ্য চুরি হয়েছে। যাঁরা রাফালের ফাইল সামলে রাখতে পারে না, তারা নাকি দেশকে সুরক্ষিত রাখবে, দেশকে সামলাবে|‌ এই সরকার ইতিহাসকে পাল্টে দিয়েছে। যত তাড়াতাড়ি এই সরকার যাবে, মোদি–শাহ জুটি বিদায় নেবে ততই দেশের মঙ্গল। আগে যারা খেতে পেত না, তারাই এখন কোটি কোটি টাকার বাইক কিনছে। এগুলো আসলে নোটবন্দি আর রাফালের চুরির টাকা।’‌ এরপরেই স্লোগান তোলেন, \”গলি গলি মে শোর হ্যায়, মোদীবাবু চোর হ্যায়”|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *