BRAKING NEWS

বিএনপির অস্তিত্ব সংকট ! তারেককে কেন্দ্র করে দলে বাড়ছে বিভাজন

বাসুদেব ধর (ঢাকা), ১১ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির অস্তিত্ব সংকট ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে। দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাসের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। মামলার পাহাড় ঠেলে মুক্ত জীবনে ফিরে আসা কার্যত অসম্ভব, যদি না বড় কোনও রাজনৈতিক পরিবর্তনে প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি মেলে। দল চালাচ্ছেন এখন খালেদা-পুত্র তারেক রহমান লন্ডন থেকে। এ নিয়ে দলের ভেতরেই একটা অংশের অসন্তোষ আছে, যদিও তা প্রকাশ্যে আসছে না। তবে দুই অংশের মানসিক দুরত্বটা আঁচ করা যায়। অভিযোগ রয়েছে, তারেককে কেন্দ্র করেই বিভাজন বাড়ছে। কেউ কেউ এ প্রশ্নটাও তুলেছেন, তারেক রহমান দলের জন্যে বোঝা কিনা তা আগে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।


দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির অবশ্য বলেছেন, বিএনপির মধ্যে কোন বিভাজন নেই। নেতৃত্ব নিয়েও কোনো প্রশ্ন নেই। সংসদ নির্বাচনের পর কোনও কর্মসূচি নেই, বিএনপিকে চোখে পড়ছে না এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি স্পষ্ট জবাব দেন, আমরা তো আন্দোলনেই রয়েছি। সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়ায় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। রাজপথেও প্রতিবাদ হয়েছে ‘ভোট ডাকাতি’র বিরুদ্ধে। শাসক আওয়ামি লিগের কয়েকজন নেতা বিশেষ করে তথ্যমন্ত্রী তো বলেই ফেলেছেন, বিএনপি ক্রমেই পাকিস্তানি আমলের মুসলিম লিগে পরিণত হচ্ছে। অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খোঁজার সময় আসছে।লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসে সংবাদ সম্মেলন করেন, কিন্তু সেখানে হাজির থাকেন না মহাসচিব। মহাসচিব শুধু বিভিন্ন আলোচনা সভা কিংবা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে তেমন কেউ উপস্থিত থাকেন না রিজভির সংবাদ সম্মেলনে। রিজভি কয়েকদিন আগে আচমকা বিক্ষোভ মিছিল করেন, সেখানেও কেন্দ্রীয় নেতাদের আর কাউকে দেখা যায়নি। কয়েকজন শীর্ষ নেতা সম্প্রতি বলেছেন, নতুন প্রজন্মকে সামনে নিয়ে আসতে হবে, নইলে বিএনপি দাঁড়াতে পারেব না। বিএনপি স্থবির হয়ে পড়ছে। অবশ্য এর বিরুদ্ধে মহাসচিবের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দলের পরবর্তী কাউন্সিলের কথা উঠলেও এ নিয়ে কোনো আলোচনা এখনও শুরু হয়নি। অন্যদিকে জামায়াত নিয়ে অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপির কোনো নেতাই পরিস্কার কোনো উত্তর দিচ্ছেন না।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের (কখনো বলা হচ্ছে ২২ দল) শরিকরা অভিযোগ করেছে, বিএনপি শরিকদের সাথে তেমন যোগাযোগ রাখছে না। নির্বাচনের পর মাত্র একবার জোটের বৈঠক হয়েছে। তাও নমো নমো করে। কোনো কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়নি। ওদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, যার প্রধান শরিক বিএনপি, আপাতত চুপচাপ। সংসদ অধিবেশনে যোগদান নিয়ে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে গণফোরামের সঙ্গে বিএনপির, এ অভিযোগ উঠলেও ড. কামাল হোসেন বলেছেন, যা করবো আমরা মিলিতভাবেই করবো। তিনি মনে করেন, নির্বাচনের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আরও শক্তিশালী হয়েছে। কারণ গণতন্ত্র বাঁচাতে শাসকদের বিরুদ্ধে ঐক্য সুদৃঢ় করা দরকার, এটা সবাই বুঝতে পেরেছেন। যেমন সামনে উপজেলা নির্বাচন, আমরা কেউ তাতে অংশ নিচ্ছি না। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *