নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ ফেব্রুয়ারী৷৷ সড়ক সুরক্ষা সপ্তাহে সম্ভবত কথার ফুলঝুড়িই সাড়৷ কারণ, ট্রাফিক পুলিশের ব্যর্থতায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি এখন মন্ত্রিদের প্রাণও অসুরক্ষিত৷ বুধবার সকালে সচিবালয়ে প্রবেশের মুখে উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রীর গাড়ীর সাথে বাইকের সংঘর্ষে মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া ও বাইক চালক অনুপ কৌশিক আহত হয়েছেন৷ উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, বাইক চালক মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে৷ তাঁর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় জি বি হাসপাতাল থেকে তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে৷ এদিনের ঘটনায় জন্য ট্রাফিক পুলিশকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করা হয়েছে৷ দূর্ঘটনাস্থলে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের কথা থাকলেও, ওই সময় সেখানে কোন পুলিশ ছিল না৷
এদিন সকালে উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়ার কনভয় সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল৷ সচিবালয়ে প্রবেশের মুখে উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রীর গাড়ীর সাথে বাইকের সংঘর্ষ হয়৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, রাজভবনের দিক থেকে বাইকটি দ্রুত গতিতে এসে উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রীর গাড়ীতে ধাক্কা খায়৷ পুলিশ জানিয়েছে, এমএল০৫এন২১৫২ নম্বরের বাইকে করে আসাম রাইফেলসের ৯০ নং ব্যাটেলিয়ানের জওয়ান অনুম কৌশিক রাজভবনের দিক থেকে এসে মন্ত্রীর গাড়ীতে ধাক্কা দেয়৷ তাতে, বাইকের সামনের অংশ এবং মন্ত্রীর গাড়ী মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ এই ঘটনায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন ওই বাইক আরোহী৷ এদিকে, গাড়ীর জানালার কাঁচ ভেঙ্গে মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া আহত হয়েছেন৷ তাঁর নাঁক দিয়ে তখন রক্ত বের হতে থাকে৷ কপালে ও ঘাড়েও তিনি আঘাত৷ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ এদিকে, দূর্ঘটনার পর ওই বাইক চালক অজ্ঞান হয়ে যান৷ দমকল কর্মীরা এসে তাঁকে উদ্ধার করে জি বি হাসপাতালে নিয়ে যান৷ হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর মাথায় ও ঘাড়ে মারাত্মক আঘাত লেগেছে৷ উন্নত চিকিৎসার জন্য এদিন সন্ধ্যায় তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়৷
এদিকে, মেবার কুমার জমাতিয়াকে চিকিৎসার পর সন্ধ্যায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ তাঁর মুখে এবং কপালে ভাঙ্গা কাঁচের টুকরো গেঁথে গিয়েছিল৷ চিকিৎসকরা ওই টুকরোগুলি বের করেছেন বলে জানা গেছে৷ তিনি এখন সম্পূর্ণ নিরাপদ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ সন্ধ্যায় দুর্ঘটনায় আহত রাজ্যের উপজাতি কল্যাণ ও বনমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়ার সরকারি আবাসে যান৷ তিনি আহত মন্ত্রীর চিকিৎসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় খোঁজখবর নেন৷ অল্পতে বড় ধরণের আঘাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং তার দ্রত আরোগ্য কামনা করেন৷ সন্ধ্যায় উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মাও মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়ার বাসভবনে গিয়ে তাঁর স্থাস্থ্যের খোজখবর নিয়েছেন৷ তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন৷
এদিনের ঘটনার জন্য ট্রাফিক পুলিশকেই সম্পূর্ণভাবে দায়ী করা হচ্ছে৷ উচ্চ নিরাপত্তা প্রবণ এলাকা হিসেবে ওই স্থানে সবসময় ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকার কথা৷ কিন্তু, দিনের অধিকাংশ সময়ই সেখানে ট্রাফিক পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না৷ মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভার সকল সদস্য এবং মুখ্য সচিব সহ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারীকরা এই পথ দিয়েই সচিবালয়ে প্রবেশ করেন৷ তা সত্বেও ওই স্থানটি অসুরক্ষিত ভাবে থাকে প্রতিদিনই৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনার সয় ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকলে দূর্ঘটনাটি ঘটত না৷ পাশাপাশি তাঁদের আরও বক্তব্য, সচিবালয়ের মূল ফাটকের সামনে ট্রাই জংশনটিও দিনের অধিকাংশ সময় অসুরক্ষিতভাবে থাকে৷ ট্রাফিক পুলিশ প্রায় সময় সেখানে থাকেন না৷ দিনের শুরুতে কিছুটা সময় ট্রাফিক পুলিশকে সেখানে দেখা গেলেও বাকি সময় কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে না৷ এমনকি দিনের শেষে অন্ধকার হয়ে গেলে সেখানে আলোর ব্যবস্থাও থাকে না৷ ফলে, যানবাহন নিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিতেই চলাফেরা করতে হয় মানুষকে৷ এদিনের দূর্ঘটনার পর দুপুরে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক এ কে শুক্লা দূর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন৷ সেখানে ট্রাফিক ব্যবস্থার খোঁজ খবর নিয়েছেন৷ তাতেও আগামীকাল থেকে পরিস্থিতি বদল হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে৷
চাম্পাহাওয়রে রাবার বাগানে মহিলাকে ধর্ষণ গ্রেপ্তার প্রতিবেশী যুবক
নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ৬ ফেব্রুয়ারী৷৷ দুই সন্তানের জননীকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক ব্যক্তিকে৷ তাকে আদালত জেল হাজতে পাঠিয়েছে৷ ঘটনা খোয়াই জেলার চাম্পাহাওয়রে৷ সংবাদে প্রকাশ, সোমবার তকচায়া গ্রামে দুই সন্তানের জননীর একাকিত্বের সুযোগ নিয়ে ধর্ষণ করেছে এক ব্যক্তি৷ তার নাম সমীরণ দেববর্মা৷ তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে৷ ওইদিন ও মহিলা নিজের রাবার বাগানে রাবার সংগ্রহ করতে যায়৷ সেখানে আগে থেকেই উৎ পেতে বসেছিল সমীরণ দেববর্মা৷ গৃহবধূর একাকীত্বের সুযোগে রাবার বাগানেই তাকে ঝাপটে ধরে এবং ধর্ষণ করে৷ স্থানীয়রা ঘটনাটি জানতে পেরে সমীরণকে ধাওয়া কলে সে পালিয়ে যায়৷ পরবর্তী সময়ে ওইদিন দুপুর আড়াইটা নাগাদ ধর্ষিতা নিজেই চাম্পাহাওয়র থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্দে মামলা দায়ের করেন৷ পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় একটি মামলা লিপিবদ্ধ করে৷ মঙ্গলবার বিকালেই অভিযুক্ত সমীরণ দেববর্মাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ বুধবার তাকে খোয়াই আদালতে সোপর্দ করা হয়৷ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠায়৷
এদিকে, পুলিশ ধর্ষিতা মহিলার ডাক্তারী পরীক্ষা করিয়েছে৷ এলাকার লোকজন অভিযুক্ত সমীরণ দেববর্মার কঠোর শাস্তির দাবী করেছেন৷ প্রসঙ্গত, রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে৷ কোথাও গৃহবধূকে পণের জন্য নির্যাতন, আবার কোথাও ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুন করা হচ্ছে৷ শুধু তাই নয় প্রকাশ্যে মহিলা অটো যাত্রীকে মারধরের মতো ঘটনাও ঘটে চলেছে৷ তাতে রাজ্যের বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে৷