BRAKING NEWS

জলপথে যোগাযোগ গড়ে উঠলে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব আশিয়ান দেশগুলির প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে , মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ ফেব্রুয়ারী৷৷ এক সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভৌগোলিক কারণে পিছিয়ে ছিলো৷ ২০১৪ সালে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর কেন্দ্র সরকারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গৃহীত কর্মসূচির মাধ্যমে এটা প্রমাণিত যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই রাজ্যগুলি সামনের সারিতে এগিয়ে যেতে পারে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে প্রধানমন্ত্রী অষ্টলক্ষী হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি রূপায়ণ করা হচ্ছে৷ আজ গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় আশিয়ান-ইণ্ডিয়া ইয়ুথ সামিটে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷ সামিটে আলোচনার বিষয় ছিলো ‘নর্থ-ইস্ট ইণ্ডিয়ানস গেটওয়ে টু আশিয়ান’৷


মুখ্যমন্ত্রী এই সামিটে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরও বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার জলপথে যোগাযোগের ব্যবস্থা গড়ে উঠার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে৷ আগামী ১ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে ত্রিপুরার জলপথে যোগাযোগের লক্ষ্য নিয়ে ত্রিপুরা সরকার কাজ করছে৷ জলপথে যোগাযোগ গড়ে উঠলে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল আশিয়ান দেশগুলির প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে৷ মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত আসিয়ান দেশগুলির এবং ইণ্ডিয়ান ফাউণ্ডেশনের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আগামী দিনে ব্যবসার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে৷ ত্রিপুরায় আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী যুবা উদ্যোগীদের আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, শিল্পের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে ত্রিপুরায়৷ ত্রিপুরায় নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর স্বল্প সময়ের মধ্যে শিল্পের বিকাশে সিঙ্গেল উইণ্ডো সিস্টেম চালু করেছে৷ এইজন্য সঠিক শিল্পনীতি করা হয়েছে৷ শিল্প স্থাপনের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিদ্যৎ৷ যা ত্রিপুরায় উদ্বৃত্ত রয়েছে৷ রাজ্যে তিনটি গ্যাসভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট রয়েছে৷ এগুলিতে পর্যাপ্ত বিদ্যৎ উৎপাদিত হচ্ছে৷ যা ত্রিপুরার প্রয়োজন মিটিয়েও বাংলাদেশ এবং অন্যান্য রাজ্যে সরবরাহ করা হয়৷ ত্রিপুরাতেই বিদ্যৎ সবচেয়ে কম দামে সরবরাহ করা হয়৷

রাবারের ক্ষেত্রে কেরালার পর ত্রিপুরায় সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়৷ ত্রিপুরাতে গ্যাস রয়েছে৷ ত্রিপুরাতে ইলেকট্রিক মোটর চালিত যানবাহনের প্রোডাকশন ইউনিট গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ নরেন্দ্র মোদি সরকার কেন্দ্রে আসার পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে৷ ত্রিপুরায় বডগেজ রেল সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে৷ কয়েকটি দ্রতগামী রেল চলাচল করছে৷ তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির রাজধানীর সাথে যোগাযোগের উপর গুরুত্বারোপ করেন৷
তিনি বলেন, কেন্দ্রের অন্তর্বর্তী বাজেটে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য অর্থবরাদ্দ ২১ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বড় সংখ্যায় এস টি, এস টি-ভুক্ত সম্পদায়ের মানুষ রয়েছেন৷ তাদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী আশিয়ান প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যটন হচ্ছে বড় একটি সেক্টর৷


ত্রিপুরার উদয়পুরের ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের মন্দিরকে কেন্দ্র করে আধ্যাত্মিক পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে৷ অরুণাচল প্রদেশের বৌদ্ধ ধর্মের নিদর্শন, আসামের কামাক্ষ্যা দেবীর মন্দির এবং মিজোরামের গির্জা রয়েছে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কম সময়ের মধ্যে পর্যটনের ক্ষেত্রে বিচিত্র ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়৷ অন্যান্য রাজ্য আয়তনে বড় হওয়ায় ভ্রমণে সময় বেশি লাগে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাংস্ক’তিক বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়৷ ত্রিপুরায় ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠী রয়েছে৷ অরুণাচলেও জনজাতিদের বহু সম্পদায় রয়েছে এবং এদের বিভিন্ন সংস্ক’তি রয়েছে৷ এ বছর জনজাতি অংশের শিল্পী বাঁশি বাদক থাঙ্গা ডার্লংকে পদ্মশ্রী দেওয়া হয়েছে৷

কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেধাবীদের অন্বেষণ করে পুরস্কার প্রদান করছে৷ এটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সংস্কৃতির প্রতি দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্মাননার নিদর্শন৷ আসাম তথা সারা দেশের গর্ব শিল্পী ভূপেন হাজারিকাকেও ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে৷ আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে আমাদের শক্তি৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির নিজ নিজ সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে৷ সংস্কৃতিগত বৈচিত্র্যের মধ্যেও আমরা সবাই এক৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সকল মুখ্যমন্ত্রী সে দিশায় কাজ করছে৷ তাতে নরেন্দ্র মোদির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে উচ্চশিখরে নিয়ে যাওয়ার যে স্বপ তা বাস্তবায়িত হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *