নিজস্ব প্রতিনিধি, চোরাইবাড়ি, ২৮ জানুয়ারী৷৷করিমগঞ্জের পোয়ামারা থেকে চোরাইবাড়ি, অসম-ত্রিপুরার জীবনরেখা স্বরূপ আট নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থা কেমন, তা টের পান একমাত্র ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী ভুক্তভোগীরা। প্রায় দুই দশক থেকে বেহাল সড়ক নির্মাণে তদানীন্তন কংগ্রেস সরকার আন্তরিক ছিল না অনুরূপ বর্তমান বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।এবার রাস্তার নরক যন্ত্রণায় কাতর ভুক্তভোগীরা সড়ক সংস্কারের দাবিতে জাতীয় এই সড়ক অবরোধ গড়ে তুলেন। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ সোমবার আট নম্বর জাতীয় সড়কে ১২ ঘণ্টার অবরোধ গড়ে তুলেন। অবরোধ গড়ে তোলা হয় পাথারকান্দির পৃথক পৃথক স্থানে।

অবরোধে শামিল হয়েছেন সাধারণ জনতার পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীও। আজ সকাল পাঁচটা থেকে পাথারকান্দির তিনখাল এলাকায় জাতীয় সড়কে অবরোধ গড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে নাগরিক জীবন স্তব্ধ করে দেন এলাকার পার্শ্ববর্তী গ্রামের নানা বয়সের নাগরিকরা। অনুরূপভাবে পাথারকান্দি মহকুমা সদরেও সড়ক অবরোধ গড়ে তুলেছে কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়ারা। অবরোধের ফলে জাতীয় সড়কে স্থানীয় ও দূরপাল্লার যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
এদিকে জাতীয় সড়ককে অবরোধমু্ক্ত করতে পাথারকান্দি থানার পুলিশ সংশ্লিষ্ট স্থলে গিয়ে বহু চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা সড়ককে অবরোধমুক্ত করতে ব্যর্থ হয়। মাঠে নামেন পাথারকান্দির সার্কল অফিসার এল খিংনতে। তিনিও জাতীয় সড়কের পৃথক পৃথক জায়গায় গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। কোনও কাজ হয়নি। অবরোধকারীদের স্পষ্ট বক্তব্য, আর সরকারি আশ্বাসে তাঁরা বিপথে পরিচালিত হবেন না। কোনও বাহানার ফাঁদে তাঁরা পড়বেন না। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার সরকারকে দেওয়া হয়নি। তাঁধের দাবি, আগামীকাল থেকে সড়কের কাজ শুরু না হলে এই অবরোধ কর্মসূচি ১২ ঘণ্টার মধ্যে সীমিত থাকবে না।
এদিকে খবর যায় পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালের কানে। বেলা দুটো নাগাদ তিনি কথা বলেন সড়ক অবরোধকারীদের সঙ্গে। রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের বলেন, বিজেপি সরকার বিগত কংগ্রেস সরকারের মতো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও ভাওতাবাজির রাজনীতি করে না। এই সড়কেবর বেহাল দশার জন্য বিজেপি সরকার নয়, তদানীন্তন কংগ্রেস সরকারই দায়ী। তাদের দুর্নীতি ও ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হচ্ছে সকলকে। তবুও বেহাল সড়কের হাল ফেরাতে আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছে বিজেপি সরকার। এই সড়কের জন্য সরকারের এসএপিডি ফান্ড থেকে দশ কোটি টাকা মঞ্জুর করে টেন্ডারও ডাকা হয়ে গেছে বলে জানান বিধায়ক। সে হিসেবে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এর কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।
তবে জনতা ও স্কুল ছাত্রদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে সড়কটি শীঘ্র মেরামতের জন্য কথা চলছে এবিসিআই কন্ট্রাকশন সংস্থার সাথে। তাদের পাঁচ দিনের মধ্যে সড়কের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, জানান বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। এদিকে অবরোধের খবর পেয়ে মাঠে নামেন পূর্ত ও জাতীয় সড়কের ইঞ্জিনিয়ার বিপি দাস। তিনিও অবরোধকারীদের জানান পাঁচ দিনের মধ্যে সড়কের কাজ শুরু হবে। এ ব্যাপারে তিনি লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অবরোধকারীদের। লিখিত প্রতিশ্রুতি পেয়ে প্রায় নয় ঘণ্টা পর বেলা আড়াইটা নাগাদ আট নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত করা হয়।