নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি৷৷ রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলির সুফল যৃেন প্রত্যেকটি ত্রিপুরাবাসী পেতে পারে সেই বিষয়ে জমাতিয়া হদা সমাজের নেতৃত্বকে এগিয়ে আসতে হবে৷ রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নমূলক সরকারি প্রকল্পগুলি মানুষের কাছে সঠিক ভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রেও গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ আজ আগরতলার খেজুরবাগান এলাকায় নবনির্মিত নয়ুৎমা কমিউনিটি হলের উদ্বেধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য ছিলেন আধুনি ত্রিপুরার রূপকার৷ তার আদর্শকে সামনে রেখে বর্তমান রাজ্য সরকার কাজ করছেন৷ মহারাজা কিরীট বিক্রম কিসোর মানিক্য ২০০১ সালে এি জায়গা জমাতিয়া হদা-কে দান করেন৷ ত্রিপুরাকে মহান বানানোর যে স্বপ্ণ দেখেছিলেন বর্তান রাজ্য সরকার নিষ্ঠা সহকারে চেষ্টা করবে সেই স্বপ্ণকে বাস্তাবিত করতে৷ সমাজ ব্যবস্থাকেও দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন ব্যবস্থা চালু করার উদোগ নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি স্বচ্ছ নিয়োগনীতিও নিয়ে আসা হয়েছে আরক্ষা দপ্তরের নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলাদের ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করা হয়েছে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা হচ্ছে জাতির মেরুদণ্ড তাই রাজ্যে গুণগতমান সম্পন্ন শিক্ষা প্রসারের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করা হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে প্রথম গ্রামে গ্রামে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে গ্রামে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন৷ বর্তমান রাজ্য সরকারও রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে৷ বাংলাদেশের সঙ্গে জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্তার উন্নয়নে মনু -সিংলুম এবং কৈলাসহর থেকে কুমারঘাট হয়ে খোয়াই এই দুটি জাতীয় সড়কের নির্মাণের কাজ মঞ্জুরী দিয়েছে এবং টেন্ডার প্রক্রিায়র কাজ হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
জমাতিয়া হদা সমাজের প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেদের সমাজ ব্যবস্থাকে সংগঠিত করে রেখেছেন৷ সরকার হচ্ছে সাংবিধানিক একটা মাধ্যম৷ সাংবিধানিক ব্যবস্থা তখনই সুদৃঢ় হবে যখন সমাজকে সঠিকভাবে পরিচালিত করা হবে৷ আমরা যারা সমাজে রয়েছি আমাদের এই গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ রাজ্যের কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার এফসিআই-এর মধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে নূ্যনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্র করা শুরু করেছে৷ এতে রাজ্যের কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন৷ আগামী তিন বছরের মধ্যে রাজ্যকে তথ্য-প্রযুক্তি, শি৭া, লজিস্টিক হাবে পরিণত করা হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন৷
অনুষ্ঠানে উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া বলেন, রাজ্যের জনজাতিদের সার্বিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে৷ সমগ্র জাতি গোষ্ঠীর উন্নয়নে মানব সম্পদ তৈরি করার লক্ষ্যে সরকার গুরুত্ব দিয়েছে৷ তিনি বলেন, শান্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ যে কোনও রাজ্যের বিকাশের ক্ষেত্রে শান্তি, উন্নয়ন ও সুবিচার ব্যবস্থা ঠিক থাকতে হবে৷ তবেই রাজ্যের উন্নয়ন অবিশ্যম্ভাবী৷ তিনি বলেন, জনজাতিদের উচ্চশিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার গুরুত্ব দিয়েছে৷ ৬০ জন উপজাতি ছাত্র-ছাত্রীকে বহির্র্রজ্যে পাঠানো হয়েছে৷ ১৮টি একলব্য মডেল আবাসিক সুকল স্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন দিয়েছে৷ এরমধ্যে ১০টির জন্য অর্থমঞ্জুরীও মিলেছে বলে জানান শ্রী জমাতিয়া৷
অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাকেন বিশেষ অতিথি জমাতিয়া হদা অক্রা পদ্মলীলা জমাতিয়া, অনুষ্ঠানে সভাপতি বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন জমাতিয়া হদার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ জমাতিয়া৷ এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জমাতিয়া হদার উপদেষ্টা আইন সচিব দাতামোহন জমাতিয়া ও উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা সি কে জমাতিয়া৷ অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন জমাতিয়া হদা অক্রা পুলিন্দ্র কুমার জমাতিয়া৷ মুখ্যমন্ত্রীজমায়িা সমাজের কুলদেবতা বাবা গড়িয়ার কাছে প্রার্থনা করে সকল ত্রিপুরাবাসীর জন্য মঙ্গল কামনা করেন৷ তিনি জমাতিয়া হদার নেতৃত্বের নিকট নবনির্মিত ভবনের দায়িত্বভার একটি সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তুলে দেন৷
অনুষ্ঠানে জমাতিয়া সমাজের উপস্থিত জনগণ সরকারের নেশামুক্ত ত্রিপুরা অইভযানের সমর্থনে কুলদেবতা বাবা গড়িয়াকে সাক্ষী রেখে নেশা জাতীয় দ্রব্যের সেবন না করার শপথ গ্রহণ করেন৷
উল্লেখ্য ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে পরিকল্পনা ও সমন্বয় দপ্তর স্পেশাল ডেভেলপমেন্ট স্কীমে উপজাতি কল্যাণ দপ্তরেক এই ২০০ আসন বিশিষ্ট মিলনায়তন নির্মাণের জন্য মোট ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা অনুমোদন দিয়েছিলো৷ উপজাতি কল্যাণ দপ্তর এই মিলনায়তনের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব দেয় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরকে৷