শ্রীনগর, ১৫ ডিসেম্বর (হি. স.) : শনিবার সকালে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার খারপোরা সিরনু এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর জঙ্গি অভিযান চলাকালীন সাত সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের দানা বেধেছে। এদিনের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে খতম হয়েছে ৩ জন সন্ত্রাসবাদী| তবে, দুঃসংবাদ হল- জঙ্গি নিকেশ অভিযান চলাকালীন সন্ত্রাসবাদীদের পাল্টা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন জওয়ান| এছাড়াও আহত হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন| এখানেই শেষ নয় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে সংঘর্ষ-গণ্ডগোলের সময় মৃত্যু হয়েছে ৭ জন সাধারণ নাগরিকের| আবার ৩ জন সাধারণ নাগরিক গুরুতর আহত হয়েছেন| এব্যাপারে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ টুইট বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভিযান চলাকালীন একদল লোক বিভিন্ন স্থান থেকে বিপজ্জনকভাবে এসে পরে এবং জখম হয়। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে সাতজন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে, এই ঘটনার নিন্দা করে শনিবার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। ‘‘রাজ্যপালের শাসনকালে উপত্যকার এই হাল হওয়া কি আদৌ কাম্য ছিল? আর কতদিন তরতাজা শব বইতে হবে?’’ মোদী সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি। টুইটারে গোটা ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লাও। গভর্নর সত্যপাল মালিক ও কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘‘একটা মাত্র প্রশাসনিক দায়িত্ব ছিল গভর্নর মালিকের, তা হল রাজ্যবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। উপত্যকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এটাই একমাত্র কাজ, যা করছে না প্রশাসন। শুধুমাত্র প্রচার চালিয়ে, বি়জ্ঞাপন ছাপিয়ে শান্তি ফেরানো যায় না।’’
এরপরই টুইটারে পুলিশ জানিয়েছে, \”সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু গভীর দুঃখজনক। আমরা নাগরিকদের সংঘর্ষস্থল থেকে দূরে থাকার আবেদন করছি কারণ এটি এমন একটি সংরক্ষিত জায়গা যেখানে প্রতিপদে বিপদ জড়িয়ে। মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষস্থল থেকে অস্ত্র এবং গলা-বারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।\” উল্লেখ্য, জঙ্গি নিকেশ অভিযান চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানদের ছত্রভঙ্গ করতে তাঁদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে থাকে স্থানীয় বাসিন্দারা| প্রত্যুত্তরে কাঁদানে গ্যাস এবং ছররা গুলি ছুড়তে থাকেন নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা| সেই সময় আহত হন অন্ততপক্ষে ১০ জন সাধারণ নাগরিক| তাঁদের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, গুরুতর আহত অবস্থায় ৩ জন সাধারণ নাগরিক বর্তমানে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন| সংঘর্ষস্থল এবং সংলগ্ন এলাকায় আপাতত প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়| শনিবার সকালের এই ঘটনার জেরে গোটা এলাকা থমথমে| পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ না হয়ে পড়ে, সে জন্য প্রশাসনের তরফে পুলওয়ামা জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য|