গুয়াহাটি, ২৬ নভেম্বর, (হি.স.) : বহুচৰ্চিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিককালে রাজ্য সরকারের শরিক দুই দল বিজেপি এবং অগপ-র মধ্যে ক্ৰমশ দূরত্ব বাড়ছে। দল দুটির এই দূরত্ব গত দুদিনে একটু বেশি বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গতকাল দুপুরে বিজেপির প্রদেশ সদর দফতরে রাজ্যের অর্থ-স্বাস্থ্য এবং পূর্তমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা শরিক অগপ দলকে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলকে কেন্দ্র করে বেজায় ঠুকেছিলেন। এর পরই আজ অগপ নেতৃত্ব দিশপুরে এক জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠকে জোট ভঙ্গের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তে যেতে পারেনি অগপ। তবে হিমন্তবিশ্বের বক্তব্য, জোটে থাকা না থাকা সম্পর্কে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কাছে চিঠি লিখে স্পষ্টীকরণ চাইবে অগপ।
অসম বিধানসভার অগপ বিধায়িনী দলের কোঠায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর এক সাংবাদিক সম্মলনে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল সম্পর্কে দলের স্থিতি স্পষ্ট করেছেন অগপ সভাপতি তথা মন্ত্রী অতুল বরা। তিনি বলেন, নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল কোনও অবস্থাতেই অগপ মেনে নেবে না। এর সঙ্গে কখনও আপস করবে না তাঁর দল। দিল্লি বললেই হবে নাকি, দিল্লির কথায় তাঁরা ওঠ-বস করেন না, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন আঞ্চলিক দলের সভাপতি বরা।
অগপ সভাপতি তথা মন্ত্ৰী অতুল বরা বলেন, অসমে এসে মোদী বলেছিলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশিদের যেতেই হবে। অগপ এবং অসমের জনসাধারণ তাঁর কথায় বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু গতকাল মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা যে নতুন ভিত্তিবৰ্ষের কথা বলেছেন তাতে পরস্পর বিরোধিতা রয়েছে।
পঞ্চায়েত নিৰ্বাচন সম্পর্কেও অতুল বরা বলেছেন। বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোট বজায় রাখার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল এবং মন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা। তাঁদের উলটো পথে গিয়ে বিজেপি-র প্রদেশ সভাপতি রঞ্জিতকুমার দাস বার-বার আলাদাভাবে একক শক্তিতে এই নিৰ্বাচন খেলার কথা বলেছিলেন। ফলে অগপ-র তৃণমূল কৰ্মীরাও পঞ্চায়েতস্তরে একা নির্বাচনে অবতীর্ণ হতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। তাই তৃণমূল কৰ্মীদের জন্য অগপ পঞ্চায়েত নিৰ্বাচন একক শক্তিতে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে আজ খোলসা করেছেন অগপ সভাপতি।
অন্যদিকে গতকাল মন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা বলেছিলেন, অগপ বার-বার হুমকি দেবে আর বিজেপি তা শুনে যাবে। তা কখনও হয় না। বিজেপি ভীষ্ম নয়। হিমন্তবিশ্বের এই মন্তব্যের প্ৰতিক্ৰিয়া ব্যক্ত করে অগপ সভাপতি বলেছেন, বিজেপি যদি ভীষ্ম না হয় তা হলে অগপও কৰ্ণ নয়, অৰ্জুন। সাংবাদিক সম্মেলনে সভাপতি অতুল বরার সঙ্গে ছিলেন আরও দুই মন্ত্রী যথাক্রমে প্রবীণ অগপ নেতা ফণীভূষণ চৌধুরী এবং দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি কেশব মহন্ত।