কলকাতা, ২৯ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : বস্ত্র বাজারে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সফল হতে গেলে পণ্যের মানের সঙ্গে কোনও ভাবে আপোষ করা চলবে না। শনিবার কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী বণিকসভায় এই মন্তব্য করে বলেন, বাজারে টিঁকে থাকার লড়াইয়ে ক্ষুদ্র শিল্পগুলিকে মাঝারী মাপের ব্যবসায়ে উন্নীত হতে হবে।
বস্ত্রশিল্পের প্রসারে চাষি ও শ্রমিকরা যথেষ্ঠ সুফল পাচ্ছেন না বলে স্বীকার করেন স্মৃতি ইরানি। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে উদ্যোগপতিদের সচেতন এবং সক্রিয় করতে বণিকসভাগুলিকে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে। বস্ত্রশিল্পে ভারতে প্রতি বছর অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকার বাইরের বরাত আসে। এর বিকাশের জন্য কেন্দ্র আর্থিক সহায়তা দেয়। এই সহায়তা আসে করদাতাদের টাকা থেকে। কাঁচামালের উৎপাদককারী চাষি ও চটকলের শ্রমিকদের অভিযোগ, এর পুরো সুফল পাচ্ছেন উদ্যোগপতিরা। কেন এ রকম হবে? কেন্দ্র তাই চাষি ও শ্রমিকদের বাড়তি সুযোগ দিতে আইন প্রণয়নে বাধ্য হয়েছে।
এ দিন একটি পাঁচতারা হোটেলে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তরপর্বে কিছু উদ্যোগপতি অভিযোগ করেন, চিনা পন্যে বাজার ছেয়ে যাচ্ছে। মেটিয়াবুরুজের বস্ত্রশিল্পের মালিক সংগঠনের তরফে এ দিন মন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়, এ রকম চিনা পণ্যের বাজারে বিধিনিষেধ আরোপ না করলে প্রতিযোগিতার মুখে সঙ্কটে পড়ছে বাংলার বস্ত্রশিল্প। জবাবে স্মৃতি বলেন, আপনি যে দাবিই করুন, বাস্তবে তার রূপায়ণ সম্ভব নয়। বিশ্ব বানিজ্য সংগঠন (ডব্লুটিও) বা এ ধরণের সংগঠনের নানা রীতিনীতি আছে। ‘ডাম্পিং‘-এর দাবি করতে গেলে বণিকসভার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে যথাযথ যুক্তি ও তথ্য দিয়ে বোঝাতে হবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভারতীয় বস্ত্রশিল্পর প্রসার ও ব্যাপ্তির জন্য নকশার ‘ইনোভেশন অ্যান্ড আন্ডারস্ট্যান্ডিং‘ অর্থাৎ শিল্পীর উন্মেষের ওপর জোর দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি এ দিন বলেন, ভারত এমন একটা দেশ যেখানকার বস্ত্রশিল্পে হস্তশিল্প ও যন্ত্রের পণ্য— দুইই সমান তালে চলছে। বলতে পারেন পেশাদার শিল্পী বনাম গাঁয়ের মহিলা। দুটোকেই আমরা গুরুত্ব দিতে চাই। কিছুকাল আগে রাজস্থানের একটি গ্রামের কিছু মহিলা কোনও নির্দেশ ছাড়া এমন কিছু বস্ত্রের নকশা করেছেন, যেগুলি জার্মানির বিশ্ব প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছে। এই যে অন্তর্নিহিত শক্তি, তাকে তো কুর্নিশ করা দরকার!