BRAKING NEWS

পরকীয়া ফৌজদারী অপরাধ নয়, ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক, ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

নয়াদিল্লি, ২৭ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : বৃহস্পতিবার সকালে যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট৷ এদিন দেশের শীর্ষ আদালত রায়ে ঘোষণা করল, পরকীয়া ফৌজদারী অপরাধ নয়৷ ইংরেজ শাসনকালে তৈরি এই আইনের ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক। এতদিন ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারার বলে পরকীয়া ছিল অপরাধ৷ সেই ৪৯৭ ধারাকেই অসাংবিধানিক বলে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের৷
দেশের শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, মহিলাদের মর্যাদা সবার উপরে৷ স্ত্রী, স্বামীর সম্পত্তি নন৷ তাই বাতিল হল ১৫৭ বছরের পুরনো আইন৷
১৮৬০ সালে তৈরি ৪৯৭ ধারায় বলা হয়েছে কোনও ব্যক্তি কোনও মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করলে এবং ওই মহিলার স্বামীর অনুমতি না থাকলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে। এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে৷
এর আগে, মামলাকারীরা দাবি করেন, এই আইনে মহিলাদের সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করা হয়৷ বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে এই আইন বাতিল করা হোক।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী পরকীয়া একটি অপরাধ এবং যে পুরুষ বা মহিলা এ ধরণের সম্পর্কে যুক্ত থাকবেন বলে আদালতে প্রমাণিত হবে, তাঁর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের সাজা ছিল এই আইনে৷ কিন্তু প্রায় দেড়শ বছর আগে ভারতীয় দণ্ডবিধিতে যুক্ত হওয়া এই ধারার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে সর্বোচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ বলে, কোনও মহিলা তাঁর স্বামীর সম্পত্তি নয়। কোনও আইন ব্যক্তির মর্যাদা খর্ব করতে পারে না, বিশেষত এই আইন মহিলাদের অধিকার ও সম্মান ক্ষুণ্ণ করছে৷ ইংরেজ আমলে তৈরি হওয়া এই আইনের সাংবিধানিকতাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া একটি মামলার প্রেক্ষিতেই এই রায় শীর্ষ আদালতের।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ পরকীয়া প্রেম নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অবতারণা করেন৷ বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ ছিল পরকীয়া শব্দটাকে আগে যেভাবে দেখা হতো, এখন আমরা নিশ্চয়ই সেভাবে দেখি না। অন্যদিকে পরিবার, সমাজ – এগুলোকেও রক্ষা করার প্রয়োজন। তাই দেড়শ বছরের পুরনো আইনের এই ধারাটার বদল ঘটানো প্রয়োজন, সব দিকে সামঞ্জস্য রেখে৷ এদিনের রায়ে আরও বলা হয়েছে, কারও যৌনতার অধিকারকে আইনি পরিসরে বেঁধে দেওয়া ঠিক নয়। কাউকে সমাজের ইচ্ছানুযায়ী ভাবতে এবং কাজ করতে বাধ্য করার অর্থ তাঁর স্বাধীনতা খর্ব করা। এটা মহিলাদের অধিকার রক্ষা এবং সমানাধিকারের পরিপন্থী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *