নয়াদিল্লি, ১৮ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : হিন্দু ধর্মে পশ্চিমে প্রচলিত শব্দ ‘রিলিজিয়ন’-এর মতো কোনও সংকীর্ণতা নেই। হিন্দু ধর্ম একটি বিশ্বব্যাপী ধর্ম। যা ভারতের মূল্যবোধ এবং পরম্পরার সার কথা। এই ধর্ম ব্যক্তি এবং সমাজকে সৃষ্টির সঙ্গে জোড়ে। এই সংযোগ ‘অস্তিত্বের একতা’ বিশ্বাস করে। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে শুরু হওয়া তিনদিনের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ‘ভবিষ্যত ভারত : আরএসএস-এর দৃষ্টিভঙ্গী’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন এমন ভাবে হিন্দু ধর্মের প্রসঙ্গে বললেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত।
মোহন ভাগবত বলেন, হিন্দু ধর্ম একটি বিশ্বব্যাপী ধর্ম। যা ভারতের মূল্যবোধ এবং পরম্পরার সার কথা। হিন্দু ধর্ম পশ্চিমে প্রচলিত শব্দ ‘রিলিজিয়ন’-এর মতো কোনও সংকীর্ণতা নেই। এই ধর্ম ব্যক্তি এবং সমাজকে সৃষ্টির সঙ্গে জোড়ে। এই সংযোগ ‘অস্তিত্বের একতা’ বিশ্বাস করে। যেখানে বৈচিত্র এবং বিভিন্ন মতকে স্বীকার করে নেওয়া হয়। এখানে বৈচিত্রের উৎসব পালিত হয়। আমরা ভারতের সনাতন পরম্পরার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। আর তাই হিন্দু, আর্য, সনাতনী মত শব্দ নিয়ে বিবাদের কোনও প্রয়োজন নেই। এটি সত্য ‘হিন্দু’ শব্দটি প্রাচীন এবং এই শব্দের প্রচলন নবম শতাব্দী পর থেকে শোনা গিয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার মানুষেরা ‘সিন্ধু নদী’ পারে থাকা মানুষদের ‘হিন্দু’ রূপে অভিহিত করেছিল। পরে এই শব্দবন্ধটাই লোকমুখে প্রচারিত হয়েছিল এবং সমাজ জীবনের অঙ্গ হিসেবে পরিণত হয়েছিল। এই ইতিহাসটি আমাদের পরিচয় হয়ে গিয়েছে।
ভারতে বসবাসকারী মানুষদের হিন্দু বলা উচিত নাকি ভারতীয় সেই বিষয়ে বলতে গিয়ে মোহন ভাগবত বলেন, ভারতীয় ধর্ম দর্শনে ব্যক্তি এবং সমাজের মধ্যে কোনও রকমের বিরোধ নেই। একই যেমন ভাবে বিকাশ এবং পরিবেশের মধ্যে কোনও রকমের বিরোধ নেই। সমঝোতার মাধ্যমে সবার সংরক্ষণ এবং উন্নতি হতে পারে।
হজযাত্রা প্রসঙ্গত উল্লেখ করে মোহন ভাগবত বলেন, হজযাত্রা যাওয়া ভারতীয় মুসলমানদের হিন্দবী মুসলমান বলা হয়। এই ধরণের ধারণাগুলিকে ইন্ডিক এবং ভারতীয় শব্দ হিসেবে অভিহিত করা হয়। হিন্দু শব্দ কারও একার নয়। যারা ভারতে বসবাস করে তাদের সবার জন্য এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়।
হিন্দুশাস্ত্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে মোহন ভাগবত বলেন, হিন্দুর ধর্মশাস্ত্র মানব ধর্মের শাস্ত্র। যা সংসারে সবার জন্য প্রযোজ্য। ভারতে জন্মানো সমস্ত ধর্মই গোটা বিশ্বের স্বপক্ষে সওয়াল করেছেন। আমরা বিশ্ব মানবতার সঙ্গে কখনও নিজেদের পৃথক করিনি। সারা পৃথিবীই আমাদের পরিবার। নিজের অস্তিত্বের পরিচয়ের মধ্যে ভারতের পরিচয় নিহিত রয়েছে। আমাদের রাষ্ট্র ধারণা সুপ্রাচীন। পাশ্চাত্য ধারণার ‘নেশন’, ‘স্টেট’ থেকে আমাদের ‘রাষ্ট্র’ ধারণা সনাতন চিন্তার অঙ্গ।