BRAKING NEWS

বিরোধীদের ক্ষীণবল রাজ্যে, বনধে মিশ্র সাড়া

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ সেপ্ঢেম্বর৷৷ পেট্রোল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশের সাথে রাজ্যেও কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট বনধ পালন

সোমবার ভারত বনধের প্রভাব পড়েছে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা শহরেও৷ ছবি নিজস্ব৷

করেছে৷ বনধে সারা রাজ্যেই মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে৷ তবে, কংগ্রেসের গতিবিধি থাকলেও এই বন্ধে বামেদের গতিবিধি খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি৷ এই বন্ধে বিরোধীদের ক্ষীণবল ফুটে উঠেছে৷ তা সত্বেও সারা রাজ্যে বন্ধের মিশ্র প্রভাব রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের৷

সোমবার সারা দেশের সাথে রাজ্যেও সিপিএমের সমর্থনে কংগ্রেসের ডাকা ১২ ঘন্টা ধর্মঘট শান্তিপূর্ণ ভাবে অতিবাহিত হয়েছে৷ রাজ্যে কোথাও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷ কোথাও কোথাও দোকানপাট খুলেছে, রাস্তায় স্বাভাবিক গাড়ি চলেছে, আবার কোথাও অন্য দিনের তুলনায় রাস্তা ফাঁকা এবং দোকানও বন্ধ ছিল৷ পেট্রোপণ্যের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার ১২ ঘন্টার ভারত বনধের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস৷ রাজধানী আগরতাল সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বনধের মিশ্র সাড়া পড়েছে৷ জানা গেছে, কিছু কিছু স্থানে বনধের সাড়া তেমন পড়েনি৷ তবে আগরতলায় সকাল থেকে বাজার বন্ধ ছিল৷ তবে, খোলা ছিল অফিস-আদালত৷ সুকল কলেজও খোলা ছিল৷ কিন্তু, ছাত্র ছাত্রীরা অধিকাংশ সুকল, কলেজেই আসেনি৷ রাস্তাঘাটে বেসরকারি যানবাহন ছিলনা বললেই চলে৷ যদিও বাইক, সুকটি, সরকারি পরিবহণ ইত্যাদি রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে৷

এদিন সকাল থেকে কংগ্রেস দলের কর্মী সমর্থকরা হরতালের সমর্থনে আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করেন৷ প্রদেশ কংগ্রেস ভবনের সামনের রাস্তায় গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে বনধের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা৷ এদিকে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহার নেতৃত্বে দলের কর্মী সমর্থকরা মহাকরণের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং মন্ত্রীদের অফিসে যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করার কারমে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে৷ অপর দিকে প্রাক্তন বিধায়ক তথা কংগ্রেস নেতা গোপাল রায় রাজধানীর হরিগঙ্গা বসাক রোডে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় অন্যান্য কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে গ্রেফতার বরণ করেন৷ হরতালে যাতে কোনও ধরনের হিংসাত্বক ঘটনা না ঘটে তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বাড়তি পুলিশ, আধা সেনাসহ জল কামান, রায়ট কন্ট্রোল ভ্যান রাখা হয়েছিল৷ বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যে এই বনধের তেমন কোনও প্রভাব পরেনি৷ তাদের মতে, রাজ্যে সুকল, কলেজ খোলা ছিল না, অফিসগুলিতে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে৷ কোলা ছিল না বাজারহাট, রাস্তায় গাড়ি চলাচল করেছে বলে দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সম্পাদক রাজীব ভট্টাচার্য৷ জানা গেছে, সুকল কলেজ খোলা থাকলেও ছাত্রছাত্রী আসেনি৷ তবে বিভিন্ন অফিসে স্বাভাবিক কাজকর্ম চলেছে৷ কর্মচারীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল৷ তবে যানবাহন কম থাকায় অফিসে পৌছতে একটু সমস্যা হয়েছে কর্মীদের৷ আগরতলা বিভিন্ন স্ট্যান্ডে বিশেষ করে মোটর স্ট্যান্ড, নাগেরজলা স্ট্যান্ড, চন্দ্রপুর স্ট্যান্ড এবং রাধানগর স্ট্যান্ড থেকে বেসরকারি গাড়ি কম চলাচল করেছে৷ দূরপাল্লার কোনও গাড়িই চলাচল করেনি৷ রাজধানী আগরতলার বাজারগুলি ছিল আংশিক বন্ধ৷ দোকানপাট বন্ধ ছিল৷ তবে ফলের দোকান, ওষুধের দোকান, ফাস্ট ফুডের দোকান খোলা ছিল৷ শহরের প্রধান প্রধান রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিকের চাইতে কম ছিল৷ রাত পর্যন্ত চলছে পুলিশের টহলদারি৷

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহার দাবি, হরতাল সফল হয়েছে৷ সাধারণ মানুষ এই হরতাল ব্যাপকভাবে সমর্থন করেছেন৷ এই হরতালকে সমর্থন জানিয়েছিল বামফ্রন্টও৷ এদিকে বিমান এবং ট্রেন চলাচল করেছে বলে জানা গেছে৷ বনধে যাতে বিমান যাত্রীদের কোনও প্রকার অসুবিধে না হয় সেদিক দিয়ে এক বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন৷ জানা গেছে, যাত্রীদের যাতে এয়ারপোর্টে আসা যাওয়া করতে কোনও অসুবিধে না হয় সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল৷ সব যাত্রীকে পোস্ট অফিসের সামনে থেকে পশ্চিম থানার বিশেষ বাসের মাধ্যমে এয়ারপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়৷ আবার এয়ারপোর্ট থেকে যাত্রীদের আরেকটি বাসের মাধ্যমে পশ্চিম থানার সামনে নিয়ে আসা হয়েছে৷ পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার অজিতপ্রতাপ সিং সংবাদ মাধ্যমকে জানান, হরতালকে ঘিরে কোনও ধরনের সংঘর্ষের খবর নেই৷ সব মিলিয়ে হরতালকে ঘিরে রাজ্য জুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে৷ সন্ধ্যা ছয়টায় শেষ হয় হরতাল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *