নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ সেপ্ঢেম্বর৷৷ মিনি সেক্রেটারিয়েট গঠনের প্রশাসনিক প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে৷ প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অঙ্গ হিসেবে সচিবালয়কে মানুষের পাশে পৌছে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার৷ তাই, আপাতত রাজ্যের তিনটি স্থানে মিনি সেক্রেটারিয়েট খুলবে রাজ্য সরকার৷ বিলোনীয়া, আমবাসা এবং ধর্মনগরে মিনি সেক্রেটারিয়েট গঠনের প্রশাসনিক প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে৷ সে মোতাবেক অতিরিক্ত মুখ্য সচিবদেরও বাছাই করা হয়েছে৷ মহাকরণ সূত্রে খবর, সুশিল কুমার, জি এস জি আয়েঙ্গার, এল কে গুপ্তা এবং এম ভেঙ্কেটশরুলু অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের দ্বায়িত্ব পাচ্ছেন৷ ওই তিনটি স্থানে মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রিসভার সকল সদস্যদের অফিস থাকবে৷ পাশাপাশি প্রধান সচিব থেকে শুরু করে পদস্থ আধিকারীকরাও সেখানে কাজ করবেন৷ রাজ্য সরকার এই প্রক্রিয়াকে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অঙ্গ হিসেবে তুলে ধরতে চাইলেও মহাকরণ কর্মচারী সমিতি এই যুক্তি মানতে চাইছে না৷ সমিতির মতে, সচিবালয়ে সরকার বিরোধী মনোভাবাপন্ন কর্মচারীদের বদলির উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার৷
বাম জমানায় প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অঙ্গ হিসেবে চারটি জেলা থেকে আটটি জেলা হয়েছিল৷ তখন বামফ্রন্ট সরকার প্রশাসনকে জনগনের দৌড়গোড়ায় পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছিল৷ কিন্তু, এই প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সুফল রাজ্যবাসী কতটা পেয়েছে হয়তো বা সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে এর প্রতিফলন দেখা গেছে৷ নিয়ম অনুযায়ী, সচিবালয়ের কর্মচারীদের অন্যত্র বদলি করা যায় না৷ কিন্তু, সরকার বিরোধী মনোভাবাপন্ন কর্মচারীদের নিয়েও বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকার ভিষণ চিন্তায় রয়েছে৷ তাই, মহাকরণ কর্মচারী সমিতি মনে করছে, রাজ্যের তিনটি স্থানে মিনি সেক্রেটারিয়েট গঠন করে বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে সচিবালয় থেকে সেখানে বদলি করা হবে৷ রাজ্য সরকার অবশ্য যুক্তি দিয়ে দাবি করেছে, সচিবালয়কে রাজ্যবাসীর কাছে পৌছাতে চাইছে বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকার৷ সেক্ষেত্রে মিনি সেক্রেটারিয়েট গঠন দারুণ সুফল দেবে বলে দাবি রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ আধিকারীকদের৷ সেই মোতাবেক বিলোনীয়া, আমবাসা এবং ধর্মনগরে মিনি সেক্রেটারিয়েট গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে রাজ্য সরকার৷ এরই সাথে প্রশাসনিক শীর্ষ আধিকারিকদেরও বাঁছাই করা হয়ে গিয়েছে৷ সূত্রে খবর, দুই-একদিনের মধ্যে এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে৷ তার আগে বুধবার অতিরিক্ত মুখ্য সচিবের পদে সুশিল কুমার, জি এস জি আয়েঙ্গার, এল কে গুপ্তা এবং এম ভেঙ্কেটশরুলু নামে সিলমোহর পড়েছে৷ সমালোচকদের মতে, ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরাতে মিনি সেক্রেটারিয়েট গঠনের কোনও যৌক্তিকতা নেই৷ বড় রাজ্য গুলিতে সচিবালয়ের শাখা অন্যত্র করা হয়ে থাকে কাজের সুবিধার্থে৷ কিন্তু, ১০৪৯২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই রাজ্যে যে কোন স্থানে খুব অল্প সময়েই পৌছে যাওয়া সম্ভব৷ ফলে, নতুন করে মিনি সেক্রেটারিয়েট গঠনের মাধ্যমে প্রশাসনিক খরচ বৃদ্ধিরও কতটা যৌক্তিকতা রয়েছে সেই প্রশ্ণ ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে৷