একাধিক জেলায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা, অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

কলকাতা, ১২ আগস্ট (হি.স.) : কলকাতার মেয়ো রোডে শনিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভার পর পশ্চিমবঙ্গে জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ। সবথেকে বেশি হামলার অভিযোগ এসেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার থেকে। এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকেও হামলার অভিযোগ এসেছে। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে | হামলার প্রতিবাদ করে রবিবার বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। দলীয় পার্টি অফিসে ও দলীয় কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু | ত্রিণমূল ভয় পেয়েছে,তাই বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুর করছে । রবিবার এই মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ । সায়ন্তন বসু বলেন, আমরা পুলিশ প্রশাসনকে সাবধান করছি । তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন । কারন আমাদের কর্মীরা পাল্টা ভাঙচুর করলে সব হাতের বাইরে চলে যাবে’ । তৃণমূলের তরফে অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

অমিত শাহের মেয়ো রোডের সভায় যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা কর্মী-সমর্থকরা। সন্ধের মধ্যে অনেকে বাড়িতে পৌঁছে যান। কারও পৌঁছতে রাত হয়ে যায়। অভিযোগ, শনিবার রাতে রাজ্যের এেকাধিক জায়গায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। কোথাও হামলা হয় পার্টি অফিসে। কোথাও হামলা চলে দলের নেত্রীর বাড়িতে। শনিবারই কলকাতায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেছিলেন রাজ্য থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে উপড়ে ফেলে দেবেন। সেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কার্যত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটল। কোথাও বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আসবাব পত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথি লুট তো কোথাও বিজেপির দলীয় কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর করে তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটলো। শনিবার রাতে ডায়মন্ড হারবার টাউন, ফলতা, বজবজ ও নোদাখালীতে অবস্থিত বিজেপি কার্যালয়গুলিতে হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি কার্যালয়ের মধ্যে থাকা টিভি, আলমারি সহ গুরুত্বপূর্ণ নথি লুট করে নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এমনকি ওইসব এলাকার একাধিক বিজেপির দলীয় কার্যালয় বুলডোজার দিয়েও গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

নোদাখালিতে বিজেপি নেত্রীর বাড়িতে হামলা চলে। বাধা দিতে গেলে বন্দুকের বাঁটের ঘায়ে নেত্রীর স্বামীর মাথা ফাটে। নেত্রী শিশুকে রিভলভার দিয়ে ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ। বিজেপি নেত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগও করছেন। বিষয়টি নিয়ে নোদাখালি থানায় অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে।

এই ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা পশ্চিম জেলা বিজেপি কর্মীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিজেপি সভাপতি অভিজিত দাসের অভিযোগ, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মদতেই এই হামলা। বিজেপির দাবি ঘটনার পর বারে বারে পুলিশকে এ বিষয়ে বললেও পুলিশের তরফ থেকে দোষীদের গ্রেফতারের কোন উদ্যোগ দেখানো হয়নি।

দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বেলা সাড়ে দশটা থেকে রামনগর থানার সাধুরহাট এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচী ও পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরোধ বিক্ষোভ চলার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে উঠে যায় অবরোধ। যদিও এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

যদিও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবী, বিজেপিই তৃণমূল কংগ্রেসকে বদনাম করার জন্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে নিজেদের কার্যালয় ভেঙে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।

শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা নয় হামলা হয়েছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরেও | বরিবার বিকেলে ৪ টে নাগাদ প্রায় পাঁচশো জনের একটি মিছিল বের হয় তৃণমূলের । এদিন মিছিল বৈলা পাড়া অতিক্রম করার সময় হঠাৎ কিছু লোক নিকটস্থ বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে ধেয়ে যায় ।তারা কার্যালয়ে ঢুকে ল্যাপটপ, টিভি নিয়ে চম্পট দেয় ।আলমারি খুলে কাগজ পত্র, চেয়ার টেবিল সব তছনছ করে ।কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দলের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি ভাঙচুর করে।যাবার সময় সেখানে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দিয়ে যায় । জানা গেছে, এই ঘটনার খবর পেয়ে বিজেপি কর্মীরা হাজির হন এবং কার্যালয়ের বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে । তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানান ।বিষ্ণুপুর জেলার বিজেপি নেতা অমর শাখা জানান পরিকল্পিত ভাবে অফিসে হামলা চালায় তৃণমূল দুষ্কৃতীরা । সেই সময় অফিসে লোকজন বিশেষ ছিল না, দুষ্কৃতীরা অফিসে ঢুকে আলমারি ভেঙে কাগজ পত্র ফেলে দেয়, ল্যাপটপ, এল সি ডি টিভি নিয়ে পালায় । আলমারিতে রাখা টাকাও নিয়ে পালায় তারা ।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি ডা: সুভাষ সরকার বলেন, সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভা দেখে তৃণমূলের মাথা গোলমাল হয়ে গেছে । দিকে দিকে বিজেপি নেতা কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর হচ্ছে ।এসব ঘটনা যত ঘটবে তত বেশি বিজেপির সুবিধা হবে । মানুষ এসব জিনিস পছন্দ করেন না, বিরোধীতা করেন ।

বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, গতকালউত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে মেয়োর রোড ফেরত তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দলীয় পার্টি অফিসে ও দলীয় কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু | ত্রিণমূল ভয় পেয়েছে,তাই বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুর করছে । রবিবার এই মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ।

রবিবার বিজেপির রাজ্য সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে অন্যতম রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, সায়ন্তন বসু বলেন, ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনা উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং বাঁকুড়ায় বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতিরা | আমরা পুলিশ প্রশাসনকে সাবধান করছি । তারা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন । কারন আমাদের কর্মীরা পাল্টা ভাঙচুর করলে সব হাতের বাইরে চলে যাবে’ ।

যদিও কোনও রকম হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব | দাবী, বিজেপিই তৃণমূল কংগ্রেসকে বদনাম করার জন্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে নিজেদের কার্যালয় ভেঙে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।