BRAKING NEWS

পশ্চিমবঙ্গে ‘সন্ত্রাসে’র অভিযোগ তুলে রাজধানীতে ধরনায় বঙ্গ বিজেপি, দলে যোগ দিলেন তৃণমূল নেতাও

নয়াদিল্লি, ২ জুলাই (হি.স.) : পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ‘সন্ত্রাসে’র অভিযোগ তুলে রাজধানীতে ধরনায় বসলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা৷ বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সঙ্গে এদিন দিল্লিতে হাজির ছিলেন পঞ্চায়েত ভোটে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মীদের পরিবারের সদস্যরাও৷ হাতে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে মুখে তৃণমূল বিরোধী স্লোগান তুলে এদিন জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব৷ নির্বাচনোত্তর পর্বে সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ত্রিলোচন মাহাতো-দুলাল কুমাররা। তাঁদের পরিবারকে নিয়েই এদিন দিল্লিতে ধরনা শুরু করে বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই ঘরছাড়া বহু কর্মী-সমর্থক। তাঁদের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এই ধরনায় সামিল হয়েছেন রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতা, কেন্দ্রীয় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রকাশ ও কেন্দ্রীয় নেতা সুরেশ পূজারি প্রমুখ।
রাজ্যে গণতন্ত্র ‘লুণ্ঠিত’ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে দিল্লিতে সরব হন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিনহা, লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে৷ তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস চলছে বলে অভিযোগ তুলে দিল্লির রাজঘাটে এদিন দিনভর অবস্থান বিক্ষোভ চলতে থাকে৷ রাজ্যে অমিত শাহের সভার পর এবার জাতীয়মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতে চলেছে বিজেপি। ধরনার পর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে নালিশ করবে বিজেপি।
সম্প্রতি রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে ‘সন্ত্রাসে’র অভিযোগ তুলে রাজ্যে রাজনীতি প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে রাজ্যে বিজেপি৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এর নেপথ্যে রয়েছে বিজেপির ২০১৯ জয়ের লক্ষ্য৷ কেননা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শাসক দলের ভিত দুর্বল করতে গ্রাম-বাংলাকে টার্গেট করেছে বিজেপি৷ আর সেই কারণে বিজেপি কর্মীর খুনের প্রতিবাদ জানাতে পুরুলিয়ায় অাসেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ৷ ইতিমধ্যেই বঙ্গ শিবিরের নেতাদের গলায় কমপক্ষে ২২টি আসন দখলের টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন অমিত শাহ৷ ফলে, যে কোনও ভাবেই হোক না কেন, সভাপতির বেঁধে দেওয়া টার্গেট পূরণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বঙ্গের গেরুয়া নেতৃত্ব৷ আর সেই কারণেই দিল্লিতে গিয়ে ধরনা-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন বেশ লাভজনক বলে মনে করছেন দিলীপ-মুকুল-লকেটের মত নেতারা৷
বিজেপির অভিযোগ, আমাদের ৩৩ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২৫ জন কর্মী-সমর্থন খুন হয়েছেন। ভোট শেষ হওয়ার পরও ‘শাস্তি’র বিধান চলছে বিভিন্ন এলাকায়। তাঁদের দাবি, বিজেপি করার অপরাধে খুন করা হয়েছে ত্রিলোচন মাহাতো, দুলাল কুমারদের। তাঁদেরকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। রাজ্যের শাসক দলের এই চেহারাই তাঁরা তুলে ধরতে চান সারা দেশের মানুষের কাছে। সেই কারণেই ধরনার মঞ্চ সাজানো হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। এদিন রাজ্যের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বিজেপি সম্পাদক সায়ন্তন বসু সরব হন।
এদিন খাতড়া মহকুমার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শ্যামল সরকার ওরফে বেনু দিল্লির ধরনা মঞ্চে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিলেন। গত ২৪ জুন মুকুল রায় বাঁকুড়ায় সভা করতে অাসেন। সে সময় একদা সহকর্মী শ্যামল সরকারের বাড়িতে যান। তৃণমূলের গোষ্ঠী কলহে কোণঠাসা দলের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন। এবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি যোগদানের খবরে এক জেলা নেতা বলেন, সবে তো শুরু, এবার সবাই দল ছেড়ে বিজেপিতে ঢুকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *