BRAKING NEWS

জিএসটির বর্ষপূর্তি, দেশবাসীকে শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর

নয়াদিল্লি, ১ জুলাই (হি.স.) : রবিবার দেশজুড়ে জিএসটি দিবস পালন করল কেন্দ্রীয় সরকার। জিএসটির বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতীয় অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদি উপকার করবে জিএসটি। দেশজুড়ে জিএসটি দিবস পালনের উপলক্ষ্যে এমনই জানালেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পী্যূষ গোয়েল। জিএসটি দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, পণ্য এবং পরিষেবা কর বিরাট আর্থিক সংস্কার। আগেকার পরোক্ষ কর কাঠামো জটিল থাকার কারণে জিএসটির দরকার ছিল। জিএসটি-কে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, জিএসটি সাধারণ মানুষের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন এনেছে। পরিসংখ্যানই তা বলে দিচ্ছে। অন্যদিকে জিএসটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী |
বরিবার গোটা দেশজুড়ে জিএসটি দিবস পালন করে কেন্দ্রীয় সরকার। জিএসটির বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মাইক্র ব্লোগিং সাইট ট্যুইটারে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, জিএসটির প্রথম বর্ষপূর্তির বিশেষ উপলক্ষ্যে আমি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাই। এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। ভারতীয় অর্থনীতির জিএসটি ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। আরও একটি ট্যুইটবার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লেখেন, জিএসটি বৃদ্ধি, সরলতা এবং স্বচ্ছতা এনেছে। এটি আনুষ্ঠানিকতাকে উন্নত করেছে, উৎপাদনের বৃদ্ধি হয়েছে, ‘ইস অফ ডুয়েনিং বিজনেস’ –এর বিস্তার ঘটিয়েছে। মাঝারি এবং ছোট উদ্যোগ এর ফলে উপকৃত হয়েছে।
পাশাপাশি জিএসটি-র বর্ষপূর্তিতে সিঙ্গল ট্যাক্স রেট অর্থাত্ একই হারে করের দাবি খারিজ করলেন প্রধানমন্ত্রী | মার্সিডিজ গাড়ি ও আর দুধের ওপর একই কর বসতে পারে না বলে সওয়াল করে তিনি বলেন, কংগ্রেসের একটিই হারে অর্থাত্ ১৮ শতাংশ কর বসানোর দাবি মানতে হলে খাদ্য ও নিত্যপণ্যের কর বেড়ে যাবে। তাঁর দাবি, জিএসটি চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যেই পরোক্ষ করদাতাদের বেস অর্থাত ভিত্তি ৭০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, চেকপোস্টগুলি উঠে গিয়েছে, ১৭ রকমের কর ও ২৩ ধরনের সেস মিশে একটিই কর হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নয়া কর ব্যবসার, যাতে এক্সাইজ ডিউটি, সার্ভিস ট্যাক্সের মতো কেন্দ্রীয় লেভি ও ভ্যাটের মতো রাজ্যের বসানো কর মিশে গিয়েছে, লক্ষ্য হল, অপ্রত্যক্ষ কর সহজ করার পাশাপাশি ইনস্পেক্টর রাজ খতম করা। একাধিক রাজ্য সরকার, বণিক মহল ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষের ফিডব্যাকের ওপরই জিএসটি তৈরি হয়েছে, এটি এক উদ্ভাবনী ব্যবস্থা। বলেন, মাত্র একটাই করের স্ল্যাব রাখা খুবই সহজ হত। কিন্তু তাতে খাদ্যের ওপর শূন্য শতাংশ হারে কর বসতে পারত না। দুধ আর মার্সিডিজে একই হারে কর বসতে পারে কি? ফলে কংগ্রেসি বন্ধুরা যখন বলেন, জিএসটি-তে একটাই করের হার রাখবেন, তাঁরা এটাই কার্যত বলেন যে, খাদ্যপণ্যের ওপর ১৮ শতাংশ কর বসবে, যা বর্তমানে শূন্য থেকে ৫ শতাংশ।
দেশজুড়ে জিএসটি দিবস পালনের উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পী্যূষ গোয়েল দাবি করেন, ভারতীয় অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদি উপকার করবে জিএসটি। এদিন রেলমন্ত্রী বলেন, পণ্য এবং পরিষেবা কর (জিএসটি) অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদি উপকার করবে। জিএসটিতে সহযোগিতা করার জন্য আমি সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই। জিএসটি স্বচ্ছতা এনেছে।
জিএসটি দিবস উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, পণ্য এবং পরিষেবা কর বিরাট আর্থিক সংস্কার। আগেকার পরোক্ষ কর কাঠামো জটিল থাকার কারণে জিএসটির দরকার ছিল।
জিএসটি-কে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, জিএসটি সাধারণ মানুষের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন এনেছে। পরিসংখ্যানই তা বলে দিচ্ছে।
দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে জিএসটির ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের সচিব হাসমুখ আধিয়া জানিয়েছে, জুন মাস পর্যন্ত জিএসটি থেকে আয় হয়েছে ৯৫৬১০ কোটি টাকা। দলীয় লাইন থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের রাজ্যের স্বার্থের জন্য ২৭টি জিএসটি কাউন্সিলে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের নেতারা। রেকর্ড সময়ের মধ্যে ৩১ টি রাজ্য জিএসটি বিল পাশ করিয়েছে।
অন্যদিকে জিএসটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী |
অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানিয়েছেন, বিজেপি সরকারের জিএসটির সংশোধিত বিল থেকে শুরু করে প্রতিটি পদক্ষেপ ত্রুটি পূর্ণ। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্ঠার সুপারিশকে অগ্রাহ্য করে জিএসটি কার্যকর করা হয়েছে। নোটবন্দির মতো জিএসটিও সরকারের খারাপ কাজগুলির মধ্যে অন্যতম। জিএসটির নকশা, কাঠামো, পরিকাঠামোগত মেরুদন্ড, হার সবই ত্রুটিপূর্ণ। ব্যবসায়ী, রফতানিকারী, সাধারণ মানুষের কাছে জিএসটি একটি খারাপ শব্দ।
অন্যদিকে পি চিদম্বরমের এই আক্রমণের পাল্টা রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন, জিএসটি কার্যকর হওয়ার পরে কোনও বাঁধা বা আর্থিক বৃদ্ধিতে তার কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। আমি পি চিদম্বরমকে বলতে ‘আঙুর ফল টক।
প্রসঙ্গত,২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয় জিএসটি। ধুমধাম করে আরম্ভ হয়। পণ্য বিক্রি ও পরিষেবা ব্যবহারের উপর শুধু একটা কর। আপাতদৃষ্টিতে, জিএসটি আনার লক্ষ্য ছিল নানা রকম কর- সিএসটি, ভ্যাট, সার্ভিস ট্যাক্স ইত্যাদির বদলে একটি মাত্র কর যা সারা দেশে একটি অভিন্ন কর ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করবে। সেই কর ব্যবস্থার এক বছর পূর্ণ হল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *