নয়াদিল্লি, ২৭ মে (হি.স.): দেশের পরম্পরাগত খেলাধুলোর উপর বিশেষ অগ্রাধীকার দিতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার রেডিওতে মাসিক মন কি বাতে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খো-খো, পিট্টু, গুলি-ডাণ্ডার মতো খেলাধুলোগুলি হারিয়ে যাচ্ছে। এতে শৈশবের উদ্দীপনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই খেলাগুলিকে তুলে ধরার জন্য স্কুল, সমাজ, যুবশক্তিদের এগিয়ে আসা উচিত। পরম্পরাগত এই খেলাধুলোগুলিতে বিশাল সংখ্যাক জনসমাগম করলে ফের তা পুনরুজ্জীবিত হবে। এই খেলাগুলির ভিডিও রেকডিং করা হোক। নিয়ম এবং নীতি মেনে এই খেলাগুলি খেলা হোক। প্রথাগত তথা পরম্পরাগত খেলাধুলোর বিকাশের জন্য প্রধানমন্ত্রী অ্যানিমেশন ফিল্মের উপরও বিশেষ জোর দিয়েছেন।
গোটা দেশজুড়ে ‘ফিট ইন্ডিয়া’ প্রচার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, যত আমরা খেলাধুলো করব ততই আমরা দেশবাসী খেলাধুলো সম্পর্কে উৎসাহিত করতে পারবো। মানুষ এখন একে অপরকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ‘ফিটনেস-চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। এর ফলে ‘ফিট ইন্ডিয়া’ প্রচার সঙ্গে বহু মানুষ যুক্ত হতে পারছে। এই প্রসঙ্গে বিরাট কোহলির দেওয়া চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গটিও তিনি তুলে ধরেন।
‘হাম ফিট তো ইন্ডিয়া ফিট’ স্লোগানের বিষয়েটি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকা খেলোয়াড়রা, সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সশস্ত্র জওয়ান থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিরা সবাই এই স্লোগানটিকে সার্থক করে তোলার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
খেলাধুলোর গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রীড়া আমাদের জীবনের বিভিন্ন মূল্যবোধ শেখায়। যেমন লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে যাওয়া, দৃঢ় সংঙ্কল্প, দলগত ঐক্যবোধ এবং সংহতি। খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য বয়স কোনও বাঁধা হতে পারে না। শিশু থেকে দাদু- ঠাকুর মা সবাই খেলার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। তাতে করে বয়সের বিভাজন বা জেনারেশ গ্যাপ ঘুচে যায়।’ খেলাধুলোর সঙ্গে অ্যাডভেঞ্চারের দিকটি জড়িত সেটাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। আর অ্যাডভেঞ্চারই যে উন্নয়নের সোপান তাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
খেলাধুলোর প্রসঙ্গ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আইএনএস তারিণী মহিলা নাবিকদের ভূয়সী প্রশংসা করেন, ২৫০ দিন আইএনএস তারিণী জাহাজটি গোটা বিশ্ব পরিক্রমা করে। ২২,০০০ নটিক্যাল মাইল পথ অতিক্রম করেছে ওই জাহাজটি। পাশাপাশি বিএসএফের যেসব জওয়ান মাউন্ট এভারেস্টে বর্জ পরিষ্কার করেছেন তাদেরও শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী তার মন কি বাত অনুষ্ঠানে।
এছাড়াও কিংবদন্তি স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর সাভারকরকে শ্রদ্ধার সঙ্গে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এবং বীর সাভারকরকে দৃষ্টিকোণের প্রীত সমীহ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন বীর সাভারকরই প্রথমবার দৃঢ়ভাবে লেখেন, ১৮৫৭ সালে যা হয়েছিল সেটা বিদ্রোহ ছিল না। সেটা স্বাধীনতার জন্য প্রথম লড়াই ছিল। শাস্ত্র ও শস্ত্র দুইয়ের আরাধনা করতেন বীর সাভারকর।
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকেও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আয়োজন প্রসঙ্গে ৪৪ তম মন কি বাতে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসী প্লাস্টিক বর্জনের জন্য আহ্বান জানান। পাশাপাশি ‘মিশন শৌর্য’ অন্তগর্ত যে পাঁচ আদিবাসী ছাত্র এভারেস্ট জয় করেছে তাদের অভিনন্দন জানান তিনি।