BRAKING NEWS

নেডা-র নেতৃবর্গের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্ৰ মোদী এবং অমিত শাহের গুণকীর্তন

গুয়াহাটি, ২০ মে (হি.স.) : নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-এর সব নেতৃবর্গের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্ৰ মোদী এবং বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের গুণকীর্তন শোনা গেছে। গুয়াহাটির শংকরদেব কলাক্ষেত্রের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নেডা-র তৃতীয় সম্মেলনের সূচনা হয় আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মার স্বাগত ভাষণের মধ্য দিয়ে। এর পর এক-এক করে বক্তব্য পেশ করতে উঠেন অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল প্রমুখ। তাছাড়া বিভিন্ন শরিক দলের প্রধানরাও বক্তব্য পেশ করেন। এরই মধ্যে অমিত শাহের সামনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল যে কোনও মূল্যে বাতিল করার দাবি তুলে নেডা-র অন্দরে এক বিতর্কের বীজ বপণ করেছেন অসমের শরিক অগপ-প্রধান তথা মন্ত্রী অতুল বরা।
আজকের কনক্ল্যাভে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী নংথমবাম বীরেন সিংহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মজবুত হচ্ছে উত্তরপূর্বের সামগ্রিক পরিস্থিত। তাঁদের নেতৃত্ব প্রদানের বিচক্ষণতা দেখে তিনি গৌরবান্বিত। তাই এই অঞ্চলের সকল শরিক দলকে জোটবদ্ধ হয়ে মিজোরাম থেকে কংগ্রেস সরকারকে উৎখাত করার আহ্বান জানিয়েছেন বীরেন সিংহ। বলেন, আমাদের সবাইকে মিলে মিজোরামে গিয়ে জোরদার প্ৰচারাভিযান চালাতে হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটের মধ্যে সাত রাজ্যে ইতিমধ্যে নেডা সরকার ক্ষমতাসীন। তা হলে একটি রাজ্য কেন হাতছাড়া থাকবে।
এদিকে, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও মনে করেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক-এক রাজ্যের সমস্যা এক-এক ধরনের। তাই নেডা-র মঞ্চ থেকে সব নেতাকে সমস্যাসংকূল রাজ্যগুলির সমস্যা সমাধান করতে পারলে সমস্যামুক্ত হবে উত্তরপূর্ব। বলেন, নাগাল্যান্ডের রাজনীতি অন্য রাজ্য থেকে আলাদা। কেননা, যুদ্ধবিরতিতে অবস্থান করেও এখনও অনেক প্রাপ্য রয়ে গেছে উগ্রপন্থীদের। অসমের সঙ্গে সীমা-বিবাদের বিষয়ে খোলসা না-করে নেইফিউ বলেন, তিনি বা তাঁর সরকার অন্য কোনও রাজ্যের ক্ষতি চায় না। কোনও ব্যক্তি-বিশেষের তো নয়ই। কেননা, তাঁর সরকারের ধর্ম শান্তি ও উন্নয়ন। তাই নাগাল্যান্ডকে একটি অন্যতম উন্নত রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট তাঁর সরকার।
অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু বলেন, গত চার বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত হয়েছে। অরুণাচলে তীব্রগতিতে চলছে উন্নয়নমূলক কাজ। উড়ান প্রকল্পের বলে ছয়টি বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ চলছে। তিনি বলেন, কৰ্ণাটকে বিজেপি সরকার গড়েনি ঠিক, কিন্তু জনতা যে দলের পক্ষে রায় দিয়েছেন তা কী করে লুকনো যাবে। লুক-ইস্ট পলিসি রূপান্তরিত হয়ে অ্যক্ট-ইস্ট পলিসি হয়েছে, সে প্রসঙ্গেও বলেছেন পেমা খান্ডু।
এদিকে নেডা-র সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন অসমের মন্ত্রী অগপ সভাপতি অতুল বরা। তিনি বলেন, অসমের জাতীয় জীবনের রক্ষাকবচ-স্বরূপ অসম চুক্তির প্রতি হুমকি ডেকে আনবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। তাই এই বিল বাতিল করার আবেদন জানিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের কাছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে নেডা-র আহ্বায়ক ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজকের দিনকে উত্তর–পূর্বাঞ্চলের কাছে ঐতিহাসিক দিন বলে ব্যাখ্যা করেছেন। বলেন, এক মঞ্চে ছয় মুখ্যমন্ত্ৰীর অবস্থানকে ছোট করে দেখার নষ়। তিনি জানান, ২০১৬ সালে অসমের ক্ষমতায় এনডিএ সরকার আসার পর সে বছরই নেডি-র প্রথম কনক্ল্যাভ হয়েছিল। এর পর ২০১৭-এর ৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় সম্মেলন। এবার তৃতীয়। গতবার অনুষ্ঠিত নেডা-র দ্বিতীয় সম্মেলনে গৃহীত সংকল্প অনুযায়ী গুয়াহাটিতে স্থাপন হবে নেডা-র সদর কাৰ্যালয়। অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছেন হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা। তিনিও কংগ্রেস-শাসিত মিজোরাম দখলের জন্য নেডা-অন্তর্ভুক্ত সব দলকে সম্মিলিতভাবে ঝাঁপানোর আর্জি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অসমের মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল, মেঘালয়ের কনরাড সাংমা, ত্ৰিপুরার বিপ্লবকুমার দেব, নাগাল্যান্ডের নেইফিউ রিও, মণিপুরের এন বীরেন সিংহ, অরুণাচল প্রদেশের পেমা খান্ডু আজ এক মঞ্চে বিরাজিত। সিকিমের মুখ্যমন্ত্ৰী পবন চামলিং যদি আজ উপস্থিত থাকতেন তা হলে ষোলকলা পূর্ণ হয়ে যেত, ভালো লাগত।
প্রসঙ্গত, আজকের অনুষ্ঠানে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু, রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোহাঁই, সাংসদ রমেন ডেকা, বিজয়া চক্রবর্তী, কামাখ্যাপ্রসাদ তাসা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *