BRAKING NEWS

হট্টগোলে মুলতুবি সংসদের অধিবেশন, অনাস্থা আনতে ব্যর্থ বিরোধীরা

নয়াদিল্লি, ১৯ মার্চ (হি.স.) : অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে হট্টগোলের মধ্যে মুলতুবি সংসদের উভয় কক্ষের অধিবেশন | অনাস্থা প্রস্তাব আনতে ব্যর্থ বিরোধীরা | সোমবার বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে লোকসভায় শুরু হয় তুমুল হট্টোগোল৷ আর হট্টোগোলের জেরে সোমবারের মতো মুলতুবি হয়ে গেল লোকসভার অধিবেশন৷ যার জেরে পেশ হল না অনাস্থা প্রস্তাব৷ এদিকে আগেই মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভার অধিবেশ ৷
অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ রাজ্যের তকমা দেওয়ার দাবিতে সোমবার সংসদে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করার কথা ছিল তেলুগু দেশম পার্টির । চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এনডিএ ছেড়ে সরকারের বিরুদ্ধে আজ অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করতে চাইলেও বিরোধীদের তুমুল হইহট্টগোলের জেরে স্পিকার মঙ্গলবার পর্যন্ত লোকসভা মুলতুবি করে দিলে তা পেশ করতে ব্যর্থ হয় টিডিপি| একা টিডিপি নয়, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় ওয়াইএসআর কংগ্রেসও। তবে এদিন শুরু থেকেই লোকসভায় ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখায় টিডিপি, ওয়াইএসআর ও কংগ্রেস৷ বিক্ষোভে সামিল হয় টিআরএস-এর সাংসদরাও৷ এদিন শুরুতেই বিরোধীদের তুমুল হইহট্টগোলের জন্য প্রথমে বেলা ১২ টা পর্যন্ত লোকসভা এবং বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। পরে বেলা ১২টা নাগাদ ফের প্রশ্নোত্তর পর্ব দিয়ে লোকসভা শুরু হয়। কিন্তু, হইহট্টগোল না থামায় গোটা দিনের জন্যই অধিবেশন মুলতুবি করে দেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। যার জেরে বিরোধীরা লোকসভায় আজ পেশই করতে পারল না নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আনা প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব। তবে কেন্দ্র জানিয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর তারা আলোচনা করতে তৈরি।
অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ রাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি নিয়েই এনডিএ সরকার থেকে শুক্রবার বেরিয়ে আসে চন্দ্রবাবু নাইডুর নেতৃত্বাধীন তেলুগু দেশম পার্টি(টিডিপি)। এনডিএ ছাড়ার পরই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে শুক্রবারই প্রথম অনাস্থা আনে টিডিপি ও ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি(ওয়াইএসআরসিপি)। লোকসভায় ৩টি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছিল৷ ২টি অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় টিডিপি৷ ১ টি প্রস্তাব জমা দেয় ওয়াইএসআর কংগ্রেস৷ অনাস্থা আনতে ৫০ সদস্যের সম্মতি প্রয়োজন বলে তা গৃহিত হয় নি |
শুক্রবার অনাস্থা প্রস্তাব আনার আগে টিডিপি ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের দেওয়া নোটিস গ্রহণ করা হয়নি লোকসভায়। কারণ হিসেবে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমার ব্যাখ্যা দেন, সংসদের কাজ ঠিকঠাক চলছে না। তাই ওই নোটিস গ্রহণ করা হয়নি। এরপর ফের আজ, সোমবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার জন্য তৈরি হয় বিরোধীরা। কিন্তু, সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা মুলতুবি ঘোষণা করেন স্পিকার। ফলে, আরও একদিন এই প্রস্তাব আনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে বিরোধীদের।
উল্লেখ্য, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এটাই বিরোধীদের প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব। ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও টিডিপির এই প্রস্তাবকে সমর্থন করবে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, আরজেডি, আম আদমি পার্টি ও এআইএমআইএম। তবে, এই প্রসঙ্গে এখনও যারা নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে এআইএডিএমকে, বিজু জনতা দল ও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি।
এদিকে, বিরোধীদের এই প্রস্তাব ইস্যুকে গুরুত্ব দিতে নারাজ মোদী সরকার। কারন বিজেপি একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়েই লোকসভায় রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে তাদের জোটশরিকগুলিও। যদি সকল শরিক এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে গেলিও বিজেপি-র সরকার চালাতে কোনও সমস্যা হবে না। এই মুহূর্তে লোকসভায় ৫৩৯(স্পিকার বাদে) আসনের মধ্যে বিজেপির হাতে রয়েছে ২৭৫টি আসন(স্পিকার ও দুই মনোনীত সদস্য ধরে), যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭১-এর থেকে বেশি। অন্যদিকে, অনাস্থার পক্ষে রয়েছে কংগ্রেস(৪৮), তৃণমূল কংগ্রেস(৩৪), টিডিপি(১৬), ওআইএসআর কংগ্রেস ও সিপিআইএম(৯টি করে), এনসিপি(৬), আপ(৪), আরজেডি(৪) এবং এআইএমআইএম(১)।
এদিকে এখনও পর্যন্ত নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছে এআইএডিএমকে, বিজু জনতা দল ও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি | এই দলগুলির সংসদ সংখ্যা কম নয় | এর মধ্যে এআইএডিএমকে-র রয়েছে ৩৭জন সাংসদ, বিজু জনতা দলের ২০ ও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির ১১ জন সদস্য রয়েছেন। যা যথেষ্ট স্বস্তিতেই রেখেছে কেন্দ্র সরকারকে |

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *