BRAKING NEWS

বিরল রাজনৈতিক সৌজন্যতার নজির

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ মার্চ৷৷ রবিবাসরীয় দিনে এক বিরল রাজনৈতিক সৌজন্যতার সাক্ষী রইল রাজধানী আগরতলাবাসী৷ বিজেপি রাজ্য

রবিবার আগরতলায় সিপিএম পার্টি অফিসে প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর দলের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের সাথে আলাপচারিতায় বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব৷ নিজস্ব ছবি৷

সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব সিপিএম পার্টি অফিসে গিয়ে প্রয়াত প্রাক্তন মৎস্য ও সমবায় মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়াকে শ্রদ্ধা জানান৷ সৌজন্য বিনিময় করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর এবং অন্যান্য নেতাদের সাথেও৷ সাথে সেখানে উপস্থিত বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকেও কড়জোরে প্রণাম জানান এবং আশীর্বাদ নেন তিনি৷

গোটা বিষয়টি কেন্দ্র করে সারা রাজ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে৷ অনেকে বলেছেন, প্রতিপক্ষীয় দলের কার্যালয়ে যাবার এমন দৃষ্টান্ত রাজনীতিতে সচরাচর দেখা যায় না৷ অনন্য নজির স্থাপন করে বিপ্লব দেব হাজির হন মেলারমাঠে সিপিএমের রাজ্য সদর কার্যালয়ে৷

এদিন হঠাৎ তাঁকে দেখে সেখানে উপস্থিত সকলেই রীতিমতো হতবাক হয়ে পড়েন৷ অপ্রস্তুত হয়ে পার্টির রাজ্য নেতারা তাঁর কাছে এগিয়ে যান৷ তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীও৷ প্রয়াত মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়ার মরদেহে মাল্যর্পণ করেন বিপ্লব দেব৷

তিনি এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্ণের উত্তরে বলেন, প্রয়াত মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়ার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে৷ রাজনীতিতে আসা মানেই সর্বজনীন জীবনে চলে যাওয়া৷ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত জীবন বলে কিছু থাকে না৷ রাজনীতিতে আমরা যারা নবাগত তাঁদের শিক্ষা নিতে হবে প্রয়াত মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়াদের মতো ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে৷ অপর এক প্রশ্ণের উত্তরে তিনি বলেন, জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময়ই প্রয়াত নেতাকে দেখে আসি৷ মৃত্যুর খবর পেয়েই ভাবছিলাম একবার শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসতে হবে৷ কিন্তু নির্বাচনের ডামাডোলের জন্য অন্যত্র যেতে পারিনি৷ খবর নিয়ে জেনেছি মরদেহ সিপিএম রাজ্য সদর কার্যালয়ে রাখা হয়েছে৷ তাই এখানে চলে এসেছি৷ তাঁর কথায়, বিজেপি সবাইকে নিয়ে চলতে চায়৷ বিজেপির বিজয়ী প্রার্থীরা সকলেই ব্যাপক হারে সিপিএম কর্মী ও সমর্থকদের ভোটও পেয়েছেন৷ এখানে যাঁরা আছেন তাদের বিজেপি ঘৃণা করে না৷ এমনটা ভারতীয় আদর্শও নয়৷

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার ফাঁকে আচমকাই তিনি এগিয়ে পার্টি অফিসের ভেতরে ঢুকে পড়েন৷ সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ বিপ্লব সরাসরি কড়জোরে তাঁর কাছে এগিয়ে যান৷ তাঁর কাছে আশীবাদ প্রার্থনা করেন বিপ্লব৷ এধরনের আচরণে বিস্মিত হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ এরপর উভয়ের মধ্যে কিছুক্ষণ কথাবার্তাও হয়েছে৷ বিরলতম এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত সকলেই হতবাক হয়ে পড়েন৷

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতা শেষ হতেই সাংবাদিকরা আবার তাঁকে ঘিরে ধরেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কী বিষয়ে কথা হল জানতে চান৷ বিপ্লব দেব বলেন, মানিকদা’র কাছে আশীর্বাদ চেয়েছি৷ তিনি বয়সেও বড়, আর রাজনীতি ও রণনীতিতেও প্রবীণ৷ টানা ২০ বছরের মুখ্যমন্ত্রী তিনি৷ তাঁর সঙ্গে মতাদর্শগত দূরত্ব থাকবেই৷ আমরা যে বিশ্বাস করি, তা বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রণাম করতেই শেখায়৷ বিপ্লব দেবের কথায়, মানিকদাকে বলেছি রাজ্য পরিচালনায় কোথাও কোনও সমস্যা হলে বুদ্ধি পরামর্শ নিতে অবশ্যই আসব৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *