BRAKING NEWS

ওয়েব কাস্টিং, পোস্টাল ব্যালট, ভোটকর্মী নিযুক্তি সহ গুচ্ছ দাবীতে কমিশনে বৈঠক বিজেপি নেতৃত্বের, নির্বাচনের আগেই রাজ্যের নিরাপত্তা কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে

৷৷ অভিজিৎ রায় চৌধুরী৷৷ নয়াদিল্লি, ৪ জানুয়ারি৷৷ নির্বাচনের আগেই রাজ্যের নিরাপত্তার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে, এমনটা ইঙ্গিত মিলেছে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে৷ শুধু তাইনয়, পুলিশ সহ অন্যান্য কর্মীদের ভোটের কাজে লাগানোর জন্য এবং তাঁদের দায়িত্বস্থল চিহ্ণিত করতে এট-রেন্ডেমাইজেশান ব্যবস্থা চালু করার কথা জানিয়েছে কমিশন৷ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে একথা জানিয়েছেন নেডার কনভেনার তথা ত্রিপুরায় বিজেপির নির্বাচন প্রভারী ড হিমন্ত বিশ্ব শর্মা৷ সাথে যোগ করেন, কর্মচারী সংগঠনের নেতা, সদস্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিকদের নির্বাচনী দায়িত্বে যুক্ত না রাখার প্রস্তাব কমিশনে দিয়েছে বিজেপি৷

এদিন দুপুর দেড়টায় নির্বাচন কমিশনে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের সাথে দেখা করেন বিজেপি প্রতিনিধি দল৷ এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আববাস নকভি, নেডার চেয়ারম্যান তথা ত্রিপুরায় বিজেপির নির্বাচন প্রভারী, বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব, বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ এবং বিজেপি রাজ্য কমিটির মুখপাত্র ডাঃ অশোক সিনহা৷ এদিন নির্বাচন কমিশনের কাছে বিজেপি প্রতিনিধি দল সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে গুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে৷ ড শর্মা জানিয়েছেন, সারা রাজ্যে প্রত্যেকটি বুথের জন্য মাইক্রো অবজারভার বর্হিরাজ্য থেকে আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ কারণ, বিগত নির্বাচনগুলিতে দেখা গেছে মাইক্রো অবজারভাররা কর্মচারী হলেও তাঁরা শাসক দলের অনুগত হয়ে কাজ করেন৷ পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের নেতা এবং সাধারণ সদ্যস্যদেরও নির্বাচনী কাজে যুক্ত না রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কমিশনে৷ শুধু তাই নয়, যাদের নির্বাচনী কাজে নিয়োগ করা হবে তাঁদের কোন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকার বিষয়ে আগাম স্বীকারোক্তি প্রদান করতে হবে৷ একই সাথে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত রাজ্যের কোন আধিকারিককে নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত না করার জন্যও কমিশনের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে৷ কারণ, দুর্নীতিগ্রস্থ আধিকারিকদের সকলেই শাসক দলের অনুগত হয়ে কাজ করে থাকেন৷

তিনি আরো জানান, নির্বাচনী কর্মকান্ডে নিযুক্ত কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা সুনিশ্চিত করেই তাদের সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োগ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন আশ্বাস দিয়েছে৷ পাশাপাশি জানান, নির্বাচন ঘোষণার আগেই রাজ্যে চলে আসবে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী৷ কমিশনের কাছ থেকে এমনটা ইঙ্গিত মিলেছে৷ একই সাথে দিল্লি থেকে নির্বাচনী কাজ পরিচালনার জন্য ওয়েবকাস্ট সিস্টেম চালু করা হচ্ছে বলে কমিশন জানিয়েছে৷
এদিন ড শর্মা জানান, প্রতি নির্বাচনে সরকারী কর্মচারীরা যেভাবে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়ে থাকেন তাতে পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন৷ তিনি বলেন, কমিশন জানিয়েছে সরকারী কর্মচারীদের জন্যও এবার থেকে নির্দিষ্ট পোলিং সেন্টার থাকবে৷ যেখানে নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত নির্বাচনী আধিকারিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পোলিং এজেন্টরাও থাকতে পারবেন৷ সেই পোলিং সেন্টারে সরকারী কর্মচারীরা ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট দেবেন এবং ব্যালট পেপারটি ভোট বাক্সে ফেলবেন৷ তারপর নির্বাচন আধিকারিকদের তত্বাবধানে সেই ব্যালট বাক্স স্ট্রং রুমে নিয়ে যাওয়া হবে৷

এদিন তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন পুলিশ সহ অন্যান্য কর্মীদের ভোটের কাজে নিযুক্তির জন্য এবং তাঁদের নিযুক্তিস্থল চিহ্ণিত করতে এট-রেন্ডেমাইজেশান ব্যবস্থা চালু করবে৷ একই সাথে চালু হবে ওয়েব কাস্ট সিস্টেমও৷ যাতে করে দিল্লি থেকে বসে সমস্ত নির্বাচনী কর্মকান্ড সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সকলে অবগত হতে পারেন৷ তিনি জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে নির্বাচন ঘোষণার আগেই সারা রাজ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী পাঠানোর জন্য৷ যাতে নির্বাচন ঘোষণার আগেই তারা সারা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারেন এবং নির্বাচন ঘোষণার পর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য তারা বুথ স্তরে গিয়ে জনমনে আস্থা অর্জনের জন্য ফ্লেগ মার্চ করেন৷ তিনি বলেন, বিজেপির এই দাবি কমিশন মেনে নেবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে৷ তিনি আরো জানান, এদিন কমিশনে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে৷ ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে তাদের মতাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করার দাবি কমিশনের কাছে জানিয়েছে বিজেপি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *