BRAKING NEWS

শুধুমাত্র আদালত বা পুলিশ নারী সংক্রান্ত অপরাধ কমাতে পারে না, প্রয়োজন সচেতনতার ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ তিনি

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আগরতলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ শুক্রবার তোলা নিজস্ব ছবি৷

বলেছেন নারী সংক্রান্ত অপরাধ অভিশাপ, তবে আদালত ও পুলিশ তা কমাতে পারে না৷ এই অপরাধ কমাতে সচেতনতাই উত্তম দাওয়াই বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তিনি৷ নারীর শ্লীলতাহানি সহ নানা ধরনের অপরাধ কোন্ রাজ্যে সংখ্যায় প্রথম সেটাকে পেছনে ফেলে সামাজিক ভাবে তা নির্মূল করার উপর গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি আরও বলেন, প্রতিটি পরিবার থেকে এই কাজ শুরু করতে হবে৷ মা-বাবাকেই সন্তানদের এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে৷ নিজের ঘর থেকে যখন ছেলেমেয়েরা এইসব অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন হবে তখন বাড়ির বাইরেও সতর্ক থাকবে তারা৷
মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১নং প্রেক্ষাগৃহে রাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসের উদ্বোধন করে এই কথা বলেন৷ পশ্চিম জেলা সাক্ষরতা সমিতি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে৷ আন্তর্র্জতিক সক্ষরতা দিবসের রাজ্য ভিত্তিক অনুষ্ঠানের প্রদীপ জ্বেলে উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, শুধু আগরতলায় নয়, এরূপ অনুষ্ঠান আজ আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমা এবং জেলাতেও হচ্ছে৷ তিনি বলেন পৃথিবী হল এক পাঠশালা৷ আমরা সবাই শিক্ষার্থী ও শিক্ষক৷ তাই লেখাপড়া শেখার ক্ষেত্রে বয়স কোন বাঁধা নয়৷ সাক্ষরতা কর্মসূচীর উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের রাজ্যে সাক্ষরতার হার ৯৭২৭ শতাংশ৷ ২০১১ সালে ছিল ৮৭ শতাংশ৷ অথচ ভারত সরকারের নীতি অনুসারে ৮০ শতাংশ সাক্ষর হলেই কোন রাজ্যকে পূর্ণ সাক্ষর হিসেবে ঘোষণা দেওয়া যায়৷ বর্তমানে আমাদের রাজ্যে ১৭০০০ থেকে ১৮০০০ নিরক্ষর ব্যক্তি আছেন, যাদের বয়স মূলতঃ ৫০,৫৫,৬০ বা এর অধিক৷ এখন আমরা সার্বিক সাক্ষরতা অভিযান কিংবা সাক্ষরোত্তর অভিযান কর্মসূচি নয় প্রবহমান শিক্ষা কর্মসূচীকে এগিয়ে এগিয়ে নিতে চাই৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেবল পাঠদান নয় নব সাক্ষরদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিতেও যুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ যাতে তারা আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে পারেন৷ তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সারা রাজ্যে এমন ২৫টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু রয়েছে৷ প্রায় ১০ হাজার নব সাক্ষর এতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন৷ অনেকে ঋণ নিয়ে স্ব-উদ্যোগী হচ্ছেন৷ সরস সহ অন্যান্য মেলায় অংশ নিচ্ছেন৷ আমরা চাই মহিলাদের আরো শিক্ষিত করে তুলতে, গার্হস্থ্য হিংসা হ্রাস করতে, জাত, ধর্ম, বর্ণ নয়, সাম্প্রদায়িকতা নয়, সকলকে নিয়ে মিলে মিশে বসবাস করতে৷ আমাদের রাজ্যে সুকল ছুটের সংখ্যা দিন দিনে কমছে৷ মেয়েদের বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে বাইসাইকেল, বই, খাবার প্রভৃতি৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরায় এখন এক সুন্দর আবহ তৈরী হয়েছে৷ এটাকে সকলে মিলে কাজে লাগাতে হবে৷ এটা যদি করা না যায় তবে আজকের যে এই কর্মসূচি তা আনুষ্ঠানিকতায় পর্যবসিত হবে৷ সম্মানীয় অতিথির ভাষণে আগরতলা পুর নিগমের ডেপুটি মেয়র সমর চক্রবর্তী বলেন, ১৯৬৫ সালে ইউনেস্কো ৮ সেপ্ঢেম্বরকে আন্তর্র্জতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে৷ আমাদের রাজ্যে সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাক্ষরতা ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচী এগিয়ে চলেছে৷ এখন প্রবহমান কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে হবে৷
বিশেষ অতিথির ভাষণে মুখ্যসচিব সঞ্জীব রঞ্জন বলেন, সাক্ষরতার অর্থ হল অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণ৷ আমাদের রাজ্য সার্বিক সাক্ষরতা অভিযান, সাক্ষরোত্তর অভিযান, পি আর আই অতিক্রম করে এখন প্রবহমান শিক্ষা কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে৷ আনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মধ্যশিক্ষা অধিকারের অধিকর্তা উত্তম কুমার চাকমা৷ নব সাক্ষরদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভাটি অভয়নগরের হেনা বেগম৷ স্বাগত বাষণ রাখেন পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডাঃ মিলিন্দ রামটেকে৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সরকার হেজামারার স্ট্যান্ডার্ড ফোর উত্তীর্ণ নব সাক্ষর তরুণ দেববর্র্মর হাতে পুরস্কার তুলে দেন৷ এছাড়া, অন্যান্য অতিথিগণ গত ২০১৬ সালের চূড়ান্ত মূল্যায়ণ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৭ জনকে, স্ট্যান্টার্ড থ্রী উত্তীর্ণ ৭ জনকে পুরসৃকত করেন৷ সভাপতির ভাষণে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ কুমার দাস বলেন, দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রয়াস চালাললে সাক্ষরতা কর্মসূচিতে আরও সফলতা আসবে৷ অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিব সুশীল কুমার, আগরতলা পুর নিগমের কমিশনার দেবপ্রিয় বর্ধন, বুনিয়াদী শিক্ষা আধিকারের অধিকর্ত কুন্তল দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *