নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ আগস্ট৷৷ শীঘ্রই ত্রিপুরা পেতে চলেছে এক আধুনিক, উন্নতমানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম৷ তারই লক্ষ্যে আজ আগরতলার সন্নিকটে নরসিংগড়ে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হলো আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়ামের৷ আজ সকালে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এই স্টেডিয়ামের শিলান্যাস করেন৷ আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করেছে ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশন৷ রাজ্যের ক্রিকেট প্রেমী মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী সহিদ চৌধুরী, বিধায়ক হরিচরণ সরকার, বিধায়ক ঝুমু সরকার, ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের সভাপতি রণজিৎ কুমার মজুমদার, সচিব তাপস দে সহ ত্রিপুরা স্পোর্টস কাউন্সিল ও ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মকর্তাগণ৷ তদানীন্তন পলিটেকনিক তথা বর্তমান ত্রিপুরা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ( টি আই টি) মাঠের ১৪৫ একর এলাকা জুড়েে এই স্টেডিয়ামটি গড়ে তুলবে ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশন৷ যার জন্যে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৫ কোটি টাকা৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী দু বছরের মধ্যেই এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে৷ নির্মীয়মান এই স্টেডিয়ামে থাকবে ২২,৫০০ লোকের বসার ব্যবস্থা৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, আজকের এই দিনটি আনন্দের হলেও সম্পূর্ণ আনন্দ সেদিনই হবে যেদিন স্টেডিয়ামটির কাজ শেষ হবে৷ আমরা সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করবো৷ মুখ্যমন্ত্রী শ্রীসরকার টি আই টি এর ইতিহাস তুলে ধরে ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশনকে সংলগ্ণ এলাকাতে একটি খেলার মাঠ তৈরী করে দিতে অনুরোধ করেন যাতে এই বিকল্প মাঠে টি আই টি এর গতানুগতিতে খেলাধূলার অনুষ্ঠান চলতে পারে৷ সেজন্য তিনি এসোসিয়েশনকে শিক্ষা দপ্তর ও ক্রীড়া দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন৷ তিনি আরো বলেন, ক্রিকেট এখন শুধুমাত্র আগরতলায় সীমাবন্ধ নয়৷ সেই লক্ষ্যে গ্রামীণ এলাকা থেকে ক্রিকেট খেলোয়াড়দের তুলে আনতে আগরতলা ও পানিসাগরের স্পোর্টস সুকলের সাথে সম্ভাব্য প্রতিভাবনা ছেলেমেয়েদের যুক্ত করতে পরামর্শ দেন৷ তিনি বলেন, ক্রিকেট এসোসিয়েশান যেন শিক্ষা এবং ক্রীড়া দপ্তরের সাথে মিলে প্রথম পর্যায়ে আগরতলাস্থিত স্পোর্টস সুকলে এ ধরণের ছেলে-মেয়েদের থাকার বন্দোবস্ত করে এবং ক্রিকেট একাডেমিতে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে৷ এখানে এই উদ্যোগে সফল হলে পরবর্তীতে পানিসাগরস্থিত স্পোর্টস সুকলেও এই পরিকল্পনা সম্প্রসারিত করা যেতে পারে৷
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি তথা শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী ক্রিকেট স্টেডিয়ামাটির নির্মাণ কাজে গুণগত মান বজায় রেখে সময়মতো কাজ শেষ করার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ক্রিকেট এসোসিয়েশানকে দেখতে হবে স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে যেন এই মাঠে যেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলাধূলা অনুষ্ঠিত হতো সেগুলি যেন বিঘ্নিত না হয়৷ এই কথা মাথায় রেখেই রাজ্য সরকার টি সি এ-কে এই মাঠ তুলে দিয়েছে৷ তিনি খেলাধূলাকে শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তিনি ১৫-২০ বছরে শিক্ষার উন্নয়নে এবং শিক্ষার পরিপূরক হিসেবে রাজ্যে ক্রীড়া উন্নয়নের কাজের ধারা চলে আসছে৷ তিনি বলেন, খেলার মাঠ হচ্ছে ঐক্যের ও সংহতির প্রতীক৷
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী সহীদ চৌধুরী বলেন, খেলাধুলার মাধ্যমে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে এবং তাদের শিক্ষাগত উন্নয়নেরও কাজে লাগে৷ সেই উদ্দেশ্যেই রাজ্যের সর্বত্র খেলাধূলার উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে৷ বর্তমানে রাজ্যের ১৯টি ইভেন্টের খেলার আসরের আয়োজন করা হচ্ছে৷ রাজ্যের গ্রামীণ ক্রীড়ার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ১৪৮৮ টি গ্রামীণ ক্রীড়া ইউনিটে যে সমস্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল তাতে চার লক্ষের কাছাকাছি ছেলে মেয়েরা অংশ গ্রহণ করেছে৷ সেখান থেকে নির্বাচিত ছেলে মেয়েদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে৷
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মদ্যে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক হরিচরণ সরকার, বিধায়ক ঝুমু সরকার, এসোসিয়েশানের সভাপতি রণজিৎ কুমার মজুমদার, সচিব তাপস দে প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানে এসোসিয়েশানের উদ্যোগে ২০১৫-১৬ সালের জন্য বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠক, প্রশিক্ষক, খেলোয়াড় ও ক্লাবগুলিকে বার্ষিক পুরস্কার দেওয়া হয়৷ পাশাপাশি রাজ্যে ক্রিকেটের উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য ৯ জনকে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ উপস্থিত অন্যান্য অতিথিগণ এদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন৷
2017-08-21