ব্যর্থ রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও হবেই ঃ দেওধর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জুলাই৷৷ কেন্দ্রীয় সরকারের কোন মন্ত্রী বা রাষ্ট্রমন্ত্রী আইপিএফটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব৷ যদিও সোমবার সকালে রাজ্য প্রশাসনের তরফে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজজুর উদ্ধৃতি দিয়ে আইপিএফটির সঙ্গে আগামীকাল কথাবর্তা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ রাজ্য বিজেপির প্রভারী সুনীল দেওধর রাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের কোন মন্ত্রী বা রাষ্ট্রমন্ত্রী ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রীর আবদারে আইপিএফটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলবে না৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং, মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজুজুর এবং প্রধানমন্ত্রী দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বিস্তারিত কথাবার্তা হয়েছে৷ এই কথাবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে আইপিএফটির কোন নেতার সঙ্গেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কোন আলাপ আলোচনা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন৷ তবে তারা কোন ধরনের আলোচনা করতে চাইলে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন ৷ তিনি আরো বলেন, মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব এড়াতে চাইছেন৷
আইপিএফটির চলতি অবরোধ নিয়ে জটিলতার অবসানে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংএর উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন তাতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিজেপি৷ বিজেপি মনে করে মুখ্যমন্ত্রী তার দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে রাজ্যের শাসকদলের ইন্ধনেই এই অবরোধ চলছে৷ বিজেপির প্রদেশ প্রভারী তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক সুনীল দেওধর বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সাংবিধানিক বিষয় সম্পর্কে কোন ধারনা নেই৷ মুখ্যমন্ত্রী জানা উচিত পৃথক রাজ্যের বিষয়টি যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন বিষয় কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব আসতে হয় এবং এই প্রস্তাব পাস হওয়ার পরই তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়৷ নতুন রাজ্য গঠনের জন্য তখনই কেন্দ্রীয় সরকারে বিবেচনা করতে পারে৷ রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে কেন্দ্রের কিছু করার এক্তিয়ারই নেই৷ এখন বিপাকে পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপর দায়ভার চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করেছেন৷ এই ধরনের চেষ্টা কোন মুখ্যমন্ত্রীকে শোভা পায় না’’৷ দেওধর আরও বলেন, ‘‘বিজেপি আরও আগে থেকেই বলে আসছিলো এর পেছনে শাসক দলের মদত রয়েছে৷ অন্যথায় তারা এই ধরনের আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারে না৷ রাজ্য সরকার এই বিষয়ে তার দায়িত্ব এড়ানোর কোন সুযোগ নেই৷ অবরোধ মুক্ত করা, জনজীবন স্বাভাবিক রাখ্য রাজ্য সরকারের দায়িত্ব৷ এই দায়িত্ব থেকে পিছুপা হবার কোন সুযোগ নেই৷ কেন্দ্রের উপর দায়িত্ব তুলে দিলে হবে না’’৷ তিনি আরও জানান, বিজেপি আগেই ঘোষণা করেছে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ মুক্ত করে জনজীবন স্বাভাবিক করতে হবে৷ কারণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের বিজেপি ৪৮ ঘন্টার সময় দিয়েছে৷ আর এই সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে যাবার পর সড়ক ও রেলপথ অবরোধ মক্ত না হলে মুখ্যমন্ত্রীকে অবশ্যই অবরুদ্ধ থাকার মজা বোঝানো হবে৷ বিজেপির ১০ হাজার কর্মী মুখ্যমন্ত্রীকে তার সরকারে আবাসেই ঘেরাও করে রেখে দেবে৷ রাজ্যের জনগণ যে সমস্যায় ভুগছে তার অনুভূতি তাকেও কিছুটা নিতে হবে’’৷ বিজেপি এই সিদ্ধান্ত অনড় এবং অবরুদ্ধ হওয়া থেকে রেহাই পেতে গেলে জাতিয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ মুক্ত করতে হবে বলেও তিনি জানান৷