BRAKING NEWS

শিল্পে মন মজেছে রাজ্য সরকারের, বিনিয়োগ বাড়াতে নীতিতে পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ এপ্রিল৷৷ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর অবশেষে শিল্প নীতিতে পরিবর্তন আনল রাজ্য সরকার৷ বেকারত্ব রাজ্যের অন্যতম প্রধান সমস্যা৷ এক্ষেত্রে বিকল্প কর্মসংস্থান শিল্প ছাড়া সম্ভবও হচ্ছে না৷ তাই বেকারদের কথা মাথায় রেখেই নয়া শিল্প ও তথ্য ও প্রযুক্তি (আইটি) নীতির অনুমোদন দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা৷ কর্মসংস্থান হলেই মিলবে ভর্তূকি, লোভনীয় এই স্কীম বিনিয়োগকারীদের টানতে সহায়ক হবে, দৃঢ় বিশ্বাস রাজ্য সরকারের৷
মঙ্গলবার মহাকরণে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী এবিষয়ে জানান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টমেন্ট ইনসেন্টিভ স্কিম ২০১২ সালে প্রণয়ন করা হয়েছিল ৫ বছরের জন্য৷ সে মোতাবেক এই স্কিমের সময়সীমা ৩১ মার্চ ২০১৭’তে সমাপ্ত হয়ে গেছে৷ নতুন স্কিম প্রণয়নের লক্ষ্যে শিল্প দপ্তর বিগত তিন মাস ধরে নানা পরীক্ষা নিরিক্ষা করেছে৷ অবশেষে আজ মন্ত্রিসভায় নতুন স্কিমের মঞ্জুরি দেওয়া হয়েছে৷ তাতে মূলত, বিনিয়োগকারীদের আরো বেশি করে উৎসাহ দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি বন্ধ কলকারখানাগুলি পুণরায় চালু করার বিষয়ে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ শিল্পমন্ত্রী জানান, নতুন স্কিমের মূল লক্ষ্য কর্মসংস্থান বাড়ানো৷ তিনি জানান, রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যেসমস্ত শিল্প গড়ে উঠবে তাদের জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে নতুন স্কিমে৷ এবিষয়ে তাঁর বক্তব্য, রাবার, বাঁশ, চা, উদ্যান এবং গ্যাসকে ভিত্তি করে যে সমস্ত শিল্প গড়ে উঠবে তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে৷ রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদগুলি দিয়ে উৎপাদিত দ্রব্য বর্হিরাজ্যে রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের উপর ১০ শতাংশ ভর্তূকি দেবে রাজ্য সরকার৷ পাশাপাশি, যে সমস্ত কলকারখানা শ্রমিকদের মজুরি মিটিয়ে দিতে সমস্যা পড়বে সেখানেও রাজ্য সরকার মজুরির সর্বাধিক ২০ শতাংশ ভর্তুকি বহন করবে৷ রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদ দিয়ে উৎপাদিত দ্রব্য বর্হিরাজ্যে মেলা কিংবা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার উৎসাহ দেবে৷ শিল্পমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রেই এই স্কিম কার্যকর হবে৷ তিনি জানান, ২০১২ সালের স্কিম অনুসারে ৩৯টি শিল্প ইউনিটের জন্য ১৬৫ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকার বিনিয়োগে রাজ্য সরকার ভর্তূকি দিয়েছে ৭ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা৷ নতুন এই স্কিম অনুসারে ভতূর্কির মাত্রা ১৬ কোটি টাকা পর্যন্ত ধার্য্য করা হয়েছে৷ তিনি মনে করেন, তাতে ২০০০ নতুন কর্মসংস্থান সম্ভব হবে৷
এদিন তিনি আরো জানিয়েছেন, শিল্প নীতির অধীন আইটি নীতি ছিল৷ ২০০০ সালে আইটি নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল যা শিল্প নীতির অধীন চলছিল৷ এরপর থেকে আইটি নীতি পরিবর্তনের বিষয়ে কোন কিছুই চিন্তাভাবনার মধ্যে ছিল না৷ এখন আইটি সেক্টরের বিশাল প্রসার ঘটেছে৷ ফলে, রাজ্য সরকারও পৃথক আইটি নীতি প্রনয়ণ হউক চেয়েছে৷ সে মোতাবেক তৈরি করা হয়েছে নতুন আইটি নীতি৷ আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন এই নীতির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ এবিষয়ে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান সচিব এম নাগারাজু জানিয়েছেন, যত বেশি কর্মসংস্থান, তত বেশি ভর্তূকি, নতুন স্কিমে এই বিষয়টি রাখা হয়েছে৷ তিনি জানান, বিপিও কিংবা কল সেন্টার স্থাপন করা হলে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ’র উপর ৫ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তূকি দেওয়া হবে৷ তাছাড়া যত বেশি কর্মসংস্থান হবে, তত বেশি ভর্তূকি দেওয়া হবে৷ তিনি জানান, বিপিও কিংবা কল সেন্টার স্থাপন করতে যত টাকা বিনিয়োগ হবে সেখানে কর্মসংস্থানের নিরিখে বিনিয়োগের উপর সর্বাধিক ৬০ শতাংশ ভর্তূকি দেবে রাজ্য সরকার৷ মূলত, সমস্ত সরকারী পরিষেবা এবং কাজকর্ম ডিজিট্যালের আওতায় আনা, রাজ্যের ডিজিট্যাল পরিকাঠামো শক্তিশালী করা, আইটি সেক্টরে দক্ষতা বিকাশ, প্রশিক্ষণ এবং স্বনির্ভর করে তোলা, সর্বোপরি ত্রিপুরাকে আইটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আকর্ষনীয় স্থানে পরিণত করার লক্ষ্যেই নতুন আইটি নীতির প্রনয়ণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান সচিব৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *