রাজ্য ভাগ করে উপজাতিদের উন্নয়ন সম্ভব নয় ঃ মুখ্যমন্ত্রী

Khumulungনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জানুয়ারি ৷৷ রাজ্যের উন্নয়ন যথেষ্ট হয়েছে এই ভাবনা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার জানতে চাইলেন উন্নয়নের জন্য আর কি করতে হবে৷ এজন্য যারা এখনো মনে করছেন রাজ্যের উন্নয়ন হচ্ছে না তাদের সামনাসামনি হতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তখন আলোচনার মাধ্যমে ত্রুটিগুলি ধরিয়ে দেওয়া হলে এর সংশোধন করা হবে৷ কিন্তু আলাদা রাজ্য বা সন্ত্রাসবাদ করে কোন উন্নয়ন হয় না দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি৷ সোমবার খুমুলুঙ পলিটেকনিক কলেজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী আলাদা রাজ্যের বিরোধিতা করে বলেন, রাজ্যভাগ করে উপজাতিদের উন্নয়ন সম্ভব নয়৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের উন্নয়নের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন৷ তাঁর দাবি, বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে রাজ্যের তেমন কোন উন্নয়নই হয়নি৷ ১৯৭৮ সাল থেকে এই লক্ষ্যে পরিকল্পনা নিয়ে এরাজ্যের উপজাতি-অউপজাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অগ্রগতি ও উন্নতির জন্য কাজ করে চলেছে৷ তিনি বলেন, দৈনন্দিন জীবনের উপযোগী পরিকাঠামো তেমন ছিল না৷ রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে বিশেষ করে উপজাতি এলাকায় এবং পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিকল্পনা ছিল না৷ কাজের সন্ধানে মানুষ রাজ্যন্তরী হতেন৷ এখন বর্হিরাজ্য থেকে ত্রিপুরায় মানুষ আসে কাজের সন্ধানে৷ বিভেদকামী শক্তি দীর্ঘ সময়ব্যাপী সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা চালিয়ে গেছে৷ কিন্তু এরাজ্যের শান্তিকামী ও গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ জাতি-উপজাতি সৌভ্রাতৃত্বকে বজায় রেখে সবকিছুকে উপেক্ষা করে সরকারের পাশে থেকেছে৷ কিন্তু একটা অংশ এখনো এই রাজ্যকে ভাগ করার স্লোগান তুলে ঐক্য নষ্টের জন্য সচেষ্ট বলে আইপিএফটিকেই নাম না করে কটাক্ষ করেছেন৷ তিনি সকল গণতান্ত্রিক সচেতনতাসম্পন্ন মানুষকে এদের বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানান৷
উপজাতিদের মাতৃভাষা ককবরককে বামফ্রন্ট সরকারই সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে৷ এই দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন আলাদা রাজ্য তৈরি করে উপজাতিদের উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ সেটা ভুলপথ৷ তিনি বলেন, অন্য রাজ্যের মানুষ ত্রিপুরায় এসে এডিসি এলাকার উন্নয়ন দেখে অবাক হন৷ বিস্মিত হন৷ উন্নয়নের জন্য অগ্রগতির জন্য আর কি করতে হবে, এই প্রশ্ণ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনো যারা মনে করছেন রাজ্যের উন্নয়ন হচ্ছে না, তারা একসাথে বসুক, আলোচনা করে ত্রুটিগুলি ধরিয়ে দিক, প্রয়োজনে সংশোধন করা হবে৷ কিন্তু আলাদা রাজ্য বা সন্ত্রাসবাদ করে কোন উন্নয়ন হয় না বলে এদিন তিনি প্রত্যয়ের সাথে জানান৷
এদিকে, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, পড়াশুনার বিকল্প আর কিছুই নাই৷ তাই ছাত্রছাত্রীদের কাজ হবে পড়াশুনার প্রতি মনোযোগী হওয়া৷ তিনি সকলকে বিদ্যা অর্জনের জন্য কঠিন অধ্যাবসায়ের পরামর্শ দেন৷ পাশাপাশি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, তারা যেন ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাদানের বিষয়ে আরো সচেতন ও যত্নবান হন৷
এদিন এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে, এডিসির মুখ্যকার্যনির্বাহী সদস্য রাধাচরণ দেববর্মা, বিধায়ক মনোরঞ্জন দেববর্মা এবং এমডিসি সুকুমার দেববর্মা৷ এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অঞ্জন কুমার ঘোষ এবং পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রিন্সিপাল তন্ময় জয় দেব৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *