আগরতলায় গোদামে মজুত বিস্তর ফেন্সিডিল বাজেয়াপ্ত, দুনম্বরি বিলেতি মদ তৈরীর কারখানায় হানা খোয়াইয়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/খোয়াই, ৩ জানুয়ারী৷৷ রাজধানী আগরতলা শহরের কাছে ইন্দ্রনগরে বিপুল সংখ্যায় নেশা সামগ্রী

আগরতলায় ইন্দ্রনগরে গোদামে উদ্ধার ফেন্সিডিল৷ মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব ছবি৷
আগরতলায় ইন্দ্রনগরে গোদামে উদ্ধার ফেন্সিডিল৷ মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব ছবি৷

ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়েছে৷ একটি গোদামে এই নেশা সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছিল৷ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিএসএফের কাছে খবর যায় যে ইন্দ্রনগর এলাকায় একটি গোদামে এই নেশা সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে৷ সেই খবরের ভিত্তিতে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানায়৷ সোই মোতাবেক পুলিশ ও বিএসএফ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে সাফল্য পেয়েছে৷
সংবাদে প্রকাশ, প্রায় পাঁচ মাস আগে ইন্দ্রনগরের বাসিন্দা প্রদীপ দাস চৌধুরী তার দ্বিতল বিশিষ্ট বাড়িতে একটি গোদামঘর ভাড়ায় দেন বিশাল রোডওয়েস এর কর্ণধার অপু চক্রবর্তীর কাছে৷ চুক্তি মোতাবেক ঐ গোদামে জুতো, কাপড় সহ অন্যান্য বৈধ সামগ্রী রাখবে৷ কোন অবৈধ সামগ্রী রাখা নিষেধ৷ কিন্তু পাঁচ মাস ধরে ঐ গোদামে মজুত করা হচ্ছিল বেআইনী নেশা সামগ্রী ফেন্সিডিল৷ এই বিষয়ে গোদামের মালিক তথা বাড়ির মালিক প্রদীপ দাস চৌধুরী জানিয়েছেন ভাড়া দেওয়ার কিছুদিন পরই বেআইনী সামগ্রী মজুত করার বিষয়টি তিনি আঁচ করতে পারেন৷ তবে, বিষয়টি তিনি কাউকে কিছু বলেননি৷ আজ যখন পুলিশ ও বিএসএফ অভিযান চালিয়েছে তখন তিনি জানান বিষয়টি আজ থেকে তিনমাস আগেই বুঝতে পারেন৷ তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রায় তিনমাস পর আজ ডিএল-১জি-সি-৪৯৯২ নম্বরের ট্রাকে করে ফেন্সিডিল আনা হয়েছে৷আশ্চর্য্যের বিষয় হল বাড়ির মালিক হয়ে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি৷ এতে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, অবাক করার বিষয় হচ্ছে, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরাও যে নিষ্ক্রীয় হয়ে রয়েছে তার প্রমাণ দিল বিএসএফ৷ সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর জি কোম্পানীর কাছে ফেন্সিডিলের মজুত ভান্ডারের খবর চলে যায়, যেখানে শহরের পুলিশ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে৷ জানা গিয়েছে, বিএসএফের কাছে গোপন সূত্রে সংবাদ যায় একটি ট্রাকে করে বিস্তর পরিমাণে ফেন্সিডিল ঐ গোদামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ সেই খবরের ভিত্তিতে পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এনসিসি থানার ওসি, জিবি ফাঁড়ির ওসি সহ বিশাল সংখ্যায় পুলিশ ও বিএসএফ জওয়ানরা ইন্দ্রনগর এলাকায় পৌঁছে৷ সেখানে গিয়ে সন্দিগ্দ ট্রাকটি আটক করে৷ দেখা গিয়েছে আটক করা ট্রাকটি খালি৷ ট্রাকের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে

খোয়াইয়ের হাতকাটায় কারখানায় হানা দিয়ে উদ্ধার নকল মদ ৷ মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব ছবি৷
খোয়াইয়ের হাতকাটায় কারখানায় হানা দিয়ে উদ্ধার নকল মদ ৷ মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব ছবি৷

জানা গিয়েছে ফেন্সিডিলের গোদামাটির হদিশ৷ সেখানে গিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে৷ দেখা গিয়েছে প্রায় দশ হাজার বোতল ফেন্সিডিল পেটিপ্যাক অবস্থায় রয়েছে৷ পুলিশ ও বিএসএফ জওয়ানরা সব ফেন্সিডিল বাজেয়াপ্ত করেছে৷ পুলিশ সুপার অভিজিৎ সপ্তর্ষি জানিয়েছেন বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তার করা হবে৷ তদন্তের মাধ্যমে এই গোদাম যিনি ভাড়ায় নিয়েছেন এবং ফেন্সিডিলের মালিককেও গ্রেপ্তার করা হবে৷ প্রসঙ্গত, রাজধানী আগরতলা শহরের বিভিন্ন গোদামে যদি পুলিশ অভিযান চালায় তাহলে বিস্তর পরিমাণে ফেন্সিডিল বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে৷ তথ্যাভিজ্ঞ মহলের অভিমত বিভিন্ন থানাকে ম্যানেজ করে ফেন্সিডিল চোরাচালনকারীরা অবাধে ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে যাচ্ছে৷ শুধু তাই নয় চুড়াইবাড়ি বিক্রয়কর দপ্তরের অফিসার ও কর্মীদের মাসোহারা দিয়ে রাজ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে এই বেআইনী ফেন্সিডিল৷
এদিকে, এসডিপিও সহ এসআই এর নেতৃত্বে মঙ্গলবার স ন্ধ্যায় খোয়াই রামচন্দ্রঘাট এলাকার হাতকাটা বাজারের পাশে স্থানীয় পরিতোষ দেব এর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় নকল বিলেতি মদ৷ যার পরিমাণ ৬০ কার্টন৷ সে সাথে খালি বোতল সহ অন্যান্য জিনিসপত্রও উদ্ধার হয়েছে৷ বোতলের মোখা লাগানোর যন্ত্র উদ্ধার হয়নি৷ যদিও বাড়ির মালিক পরিতোষ দেব পলাতক৷ বিগত দিনে একমাত্র জাগরণ পত্রিকাতেই তথ্য সহকারে বারবার সংবাদ প্রকাশ করে নকল বিলেতি মদের মালিকদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে৷ অথচ খোয়াই শহরে এবং আশপাশ এলাকায় রয়েছে প্রচুর নকল বিলেতি মদ তৈরির কারখানা৷ পুলিশ প্রশাসন সব জেনেশুনেও মাঝে মধ্যে অভিযান চালায়৷ বর্তমানে তেলিয়ামুড়ার এসডিপিও লাকি চৌহান এর অভিযান দেখে হয়ত কিছুটা লজ্জাবোধ হয়েছে খোয়াই থানা বাবুদের৷ এজন্যই শহর ছেড়ে হাতকাটা বাজারের পাশে অভিযান চালানো হয়েছে৷ অথচ এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রায় ১০ বছর যাবত ব্যবসা করছে পরিতোষ দেব৷ উনার বাড়ির পাশেই অর্থাৎ সিমানার মধ্যেই রয়েছে একটি পুলিশ চৌকি৷ তারপরও কিভাবে ১০ বছর যাবত পরিতোষ দেব বেআইনী মদের ব্যবসা করছে৷ আর এদিকে খোয়াই শহরে নকল মদ তৈরির কারখানাগুলো খঁুজে পাচ্ছেন না খোয়াই থানাবাবুরা৷ বর্তমানে কোরাক্স, ট্যাবলেট, গাজায় রমরমা খোয়াই শহর৷ আর খোয়াই থানার কুড়ি হাত দূরেই চলছে নকল বিলেতি মদ সহ এন্ডিং, জুয়া, নেশা কারবারীদের রমরমা বাণিজ্য৷