ভর্তুকি মূল্যের কেরোসিন সরবরাহ বাতিল হচ্ছে রেশনে

keroseneনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ ডিসেম্বর৷৷ ডিবিটি’র (ডাইরেক্ট ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার) আওতায় নিয়ে আসা হবে কেরোসিন৷ প্রচলিত প্রথা পরিবর্তন করে সরাসরি রেশনে ভর্তূকিতে মিলবে না এই জ্বালানি তেল৷ কারণ, খুব শীঘ্রই ভর্তুকি মূল্যে কেরোসিন গণবন্টন ব্যবস্থা থেকে তুলে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ সূত্রের খবর, গ্যাসের মত কেরোসিনও পুরো টাকা দিয়ে কিনতে হবে গ্রাহকদের৷ গণবন্টন ব্যবস্থায় যে পরিমাণ কেরোসিন প্রাপ্য ততটা ভর্তুকি সরাসরি ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার৷
সূত্রের খবর, নীল রংয়ের কেরোসিন তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ তার বদলে বাজারে মিলবে সাদা কেরোসিন৷ সাদা কেরোসিন কিনতে ভোক্তার দিতে হবে লিটার প্রতি ৫০ টাকা৷ ফলে, কোন রেশনকার্ডধারী তার প্রাপ্য দুই লিটার কেরোসিন ১০০ টাকা দিয়ে কিনলে, ভর্তুকির টাকা সরাসরি ঐ ভোক্তার একাউন্টে পৌঁছে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এখন ১৭ টাকা লিটার কেরোসিনের মূল্য৷ সেক্ষেত্রে কেরোসিন কিনলেই ২লিটারে ভর্তুকিবাবদ ৫৬ টাকা প্রতি মাসে গ্রাহকদের একাউন্টে পাঠাবে কেন্দ্র৷
সরাসরি ভর্তুকি মূল্যে গণবন্টন ব্যবস্থায় কেরোসিন সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পেছনে কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, সারা দেশেই লুট চলছে ভর্তুকি মূল্যে কেরোসিনের৷ ইতিমধ্যে হিসেব বহির্ভূত ৩৪ লক্ষ লিটার কেরোসিন বরাদ্দ উত্তরপ্রদেেেশর জন্য কেটে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ সূত্র অনুসারে জানা গেছে, রাজ্যের জন্য গণবন্টন ব্যবস্থায় বরাদ্দকৃত কেরোসিনের থেকে ১৮ লক্ষ লিটার কম দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ ফলে, এখন গণবন্টন ব্যবস্থায় কেরোসিন সরবরাহে মহা সমস্যায় পড়েছে খাদ্য দপ্তর৷
সূত্রের খবর, এক ঝটকায় গণবন্টন ব্যবস্থায় কেরোসিন বন্ধ করা হবে না৷ পর্যালোচনা করে দেখা হবে রাজ্যে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের পরিস্থিতি কি পর্যায়ে রয়েছে৷ তারপর বিবেচনা করা হবে কেরোসিন সরবরাহ এডিসি না নন এডিসি এলাকায় হচ্ছে সেই বিষয়টি৷ চাহিদার সাথে হিসেবের পুরো তথ্য মিলিয়ে দেখার পরই রাজ্যে সরাসরি গণবন্টন ব্যবস্থায় কেরোসিন সরবরাহ বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার৷ অবশ্য রাজ্য সরকার বলছে, কেন্দ্র চাইছে ত্রিপুরাকে কেরোসিন মুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা দিতে৷ এবিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরাকে কেরোসিন মুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা দিতে চাইছে৷ কিন্তু কেন্দ্রের এই ইচ্ছা ত্রিপুরার মত পরিকাঠামোতে সম্ভব বলে মনে করেন না খাদ্যমন্ত্রী৷ তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে পর্যাপ্ত রান্নার গ্যাসের জোগান নেই৷ প্রতিমাসেই ব্যাকলগ থাকে৷ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় অনেক সময়ই ব্যাকলগ বেড়ে যায়৷ সেক্ষেত্রে কেরোসিন অনেকটাই জ্বালানির কাজে সহায়তা করে৷ ফলে, রাজ্যকে কেরোসিন মুক্ত হিসেবে আগামীদিনে বিবেচনা করা সঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেন খাদ্যমন্ত্রী৷
অবশ্য, কেরোসিনের ডিবিটি চালু হতে আরো কিছুটা সময় বাকি আছে৷ যতদূর জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের শেষের দিকে এই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ ফলে, ধারণা করা হচ্ছে রাজ্যেও কেরোসিনের যেভাবে লুট চলছে, তাতে লাগাম টানবে কেন্দ্র৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *