BRAKING NEWS

শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মুখ্যমন্ত্রী বললেন সন্ত্রাসবাদ গোটা বিশ্বের কাছে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর৷৷ সন্ত্রাসবাদ শুধু আমাদের দেশের কাছেই নয়, সারা বিশ্বের কাছেই এটা এখন বড়

শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ সন্ত্রাসবাদীদের ব্যবহার করে যারা প্রতিনিয়ত আমাদের দেশের পরিস্থিতিতে জটিল করে তুলছে তাদের এই কার্যকলাপের নিন্দা জানাচ্ছি৷ যারা দেশের শান্তি, সম্প্রীতি, সুস্থিতি চান, এই নিন্দনীয় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ করা দরকার৷ আজ সকালে কল্যাণপরের পাগলাবাড়ি ভিলেজস্থিত গাইরিং পাড়ায় সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের নাগরোটায় সন্ত্রাসবাদী আক্রমণে নিহত ভারতীয় সেনা বাহিনীর জওয়ান শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার বাসভবনে সাংবাদিকদের কাছে এই অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ তিনি বলেন, দেশের জন্য চিত্তরঞ্জন দেববর্মার আত্মবলিদান বেদনাদায়ক৷ তিনি এবং তার মতো আরো অনেকে এভাবেই দেশের জন্য আত্মদান করেছেন৷ তাঁদের এই আত্মবলিদান দেশপ্রেমের উচ্চতর নিদর্শন৷ আমি তাঁদের সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি৷ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার আজ সকালে আগরতলা থেকে গাইরিং পাড়ায় এসে শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার বাসভবনে তাঁর বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ভাই ও পরিবার পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন৷ তিনি তাঁদের সমবেদনা জানান৷ এসময় উপস্থিত ছিলেন শহীদ অরুণ দেববর্মা ও অমরদীপ দেববর্মা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, এলাকাবাসী, পাগলাবাড়ি ভিলেজের চেয়ারপার্সন সহ অন্যান্যরা৷ এছাড়াও ছিলেন বিধায়ক পদ্মকুমার দেববর্মা ও বিশ্বজিৎ দত্ত, ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ড রঞ্জিত দেববর্মা, খোয়াই জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার ও অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা৷ মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার শহীদ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গেই পৃথক পৃথকভাবে কথা বলেন৷ শহীদ চিত্তরঞ্জনের মা ও বাবাকে তিনি বলেন, চিত্তরঞ্জন দেববর্মা দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন করেছেন৷ আমরা সবাই তাঁর এই আত্মদানের জন্য গর্বিত৷ শহীদ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁদের পাশে রাজ্য সরকার সব সময় থাকবে, প্রয়োজনে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে৷ শহীদ চিত্তরঞ্জনের মেয়ে ও ছেলের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তোমরা মানুষের মতো মানুষ হও৷ তোমাদের বাবা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন৷ বাবার স্মৃতি, তাঁর এই মহান আত্মদানের কথা সব সময় মনের মধ্যে জাগরুক করে রাখবে৷ আর যতই উচ্চ শিক্ষিত হও না কেন, তোমাদের মাতৃভাষাকে কখনো ভুলে যাবে না, মাতৃভাষা মায়ের মতো৷ শহীদ চিত্তরঞ্জনের বাবা ও মা শহীদদের স্মৃতিরক্ষায় এই গাইরিং পাড়াতেই কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রীকে৷ সরকারিভাবে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন৷ এছাড়াও জেলাশাসককে নির্দেশ দেন সেনাবাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নিতে শহীদ পরিবারে সহায়তা প্রদানে তারা কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ পরিবার পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার শহীদ চিত্তরঞ্জনের সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন এবং পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে শহীদ চিত্তরঞ্জনের মায়ের আবেদন ছিল, শহীদ পুত্রের সমাধিস্থানটির উন্নতি বিধান করতে৷ মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গেই জেলাশাসককে নির্দেশ দেন, আগামী ১৩ ডিসেম্বর ধর্মীয় বিধান অনযায়ী ক্রিয়াকর্ম সম্পন্ন হবার পর শহীদের সমাধিস্থানটির উন্নয়নে উদ্যোগ নিতে৷
এদিকে, শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিপ্লব দেব৷ পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন৷
রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিপ্লব দেব কল্যাণপুরস্থিত গাইরিংপাড়াতে বীর শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার বাড়িতে যান৷ তিনি চিত্তরঞ্জন দেববর্মার শোকাহত পরিবারের সাথে কথা বলেন৷ যদিও পরিবারটি আর্থিকভাবে ভুগছেন৷ তাই সরকারি ভাবে সাহায্যের জন্যে অনুরোধ করেন৷ যদিও এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার রবিবার সকালে বীর শহীদ চিত্তরঞ্জন দেববর্মার বাড়িতে গিয়ে থাকলে রাজ্য সরকারের পক্ষে আর্থিক ভাবে সাহায্যের ব্যাপারে কিছু বলেননি৷ তবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিপ্লব দেব পরিবারের লোকদের আশ্বাস দেয় মানিক সরকার যা করেননি তারা করবেন৷ আর্থিকভাবে সাহায্য করবেন বীর শহীদদের পরিবারকে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *