অকাল বর্ষণে কৃষিতে ক্ষতি প্রায় ১০০ কোটি

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ নভেম্বর৷৷ অকাল বর্ষণে রাজ্যে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি৷ সূত্র অনুসারে জানা

বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ ধান চাষ৷ খোয়াইয়ে তোলা নিজস্ব ছবি৷
বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ ধান চাষ৷ খোয়াইয়ে তোলা নিজস্ব ছবি৷

গেছে, কয়েকদিন আগে ভারী বৃষ্টিপাতে রাজ্যে ৯৮৮৪ হেক্টর জমিতে কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে৷ তাতে প্রায় ৬৪ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ সূত্র অনুসারে আরো জানা গেছে, বেশিরভাগই ছিল ধানের ফসল৷ এছাড়া শাকসবজি, ডাল শস্য এবং পানের বরাজ ক্ষতি হয়েছে৷ এদিকে, সিপাহিজলা জেলায় সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে৷ ক্ষতির পরিমাণের দিক দিয়ে এরপর রয়েছে খোয়াই জেলা৷ তারপর ক্রমান্বয়ে গোমতী, পশ্চিম, ধলাই, উত্তর এবং ঊনকোটি জেলাতে কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে৷ এই সংক্রান্ত রিপোর্ট কৃষি দপ্তরের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে৷
রাজ্যে বর্তমানে কৃষি ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ৫০ হাজার হেক্টর জমি ব্যবহৃত হচ্ছে৷ ভারী বৃষ্টিপাতে কৃষিক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে তাতে মারাত্মক বিপদে পড়েছেন কৃষকরা৷ স্বাভাবিকভাবেই সরকারের সহায়তার প্রয়োজনীয়তা আবশ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এখন দেখার বিষয় রাজ্য সরকার কৃষকদের দিকে সহায়তার হাত কিভাবে বাড়িয়ে দেয়৷ যতদূর জানা গেছে, আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতির পরিমাণ মারাত্মক হওয়ায় রাজ্য সরকার কৃষকদের সরাসরি অর্থ দিয়ে সহায়তা করবে কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে৷ কৃষি দপ্তরের একটি সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অন্যান্য দিকগুলিও ভেবে দেখছে রাজ্য সরকার৷
এদিকে, শাক সবজি, থেকে শুরু করে অন্যান্য কৃষি উৎপাদিত সামগ্রীর দাম দিন দিন লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে৷ এর সাথে নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্রেরও দাম ক্রমেই বাড়ছে৷ তাতে, রাজ্যের নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত মানুষের হেঁসেল সামলানো মুশকিল করে দিয়েছে বাজারদর৷ মুষ্টিমেয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে বাজারে আনাজপাতির দাম বাড়ছে৷ বিশেষ করে আলো, সবজি, মাছ, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ ডালের দাম প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷ ভাত এবং ডাল দুটি গ্রামে চিরন্তন প্রযোজ্য হয়৷ আর বোধহয় ভাতের সঙ্গে ডাল গ্রামের প্রযোজ্য খাবার হবে না৷ কারণ মুগ ডাল, মুসুরি ডাল এবং অন্যান্য ডাল জাতীয় জিনিসের দাম শুনলে মাথায় বাজ পড়বে৷ তেমনি কাচালঙ্কা ১০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি করা হচ্ছে৷ বৃষ্টির ফলে এখন কাঁচা লঙ্কার দাম ১৫০ টাকা প্রতিকিলো৷ আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে৷ অথচ সমস্ত কৃষকরা প্রচুর আলুর উৎপাদন করেছিলেন৷ কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে আলু কিনে৷ হিমঘরে রেখে এখন আলু বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছেন৷ এইভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা মুনাফা লুটছে৷ এবার কার্তিক মাসের প্রবল বৃষ্টির ফলে সবজি এখন হাতে নাগালের বাইরে চলে গেছে৷ কৃষকদের সব রকমের সবজি জলে পচে নষ্ট হয়ে গেছে৷ কৃষকরা ভেবে পাচ্ছেন না কি করবেন৷ কথায় আছে মাছ এবং দুধে ভাতে বাঙালি৷ এখন আর বাঙালিদের মাছ আর দুধের দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে৷ পূর্বে বাঙালিরা হাতের কবজি ডুবিয়ে দুধ দিয়ে খেত, সে স্বপ্ণ এখন অধরা রয়ে যাচ্ছে৷