নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজধানীর দক্ষিণাঞ্চল মিলন চক্র এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে শ্লীলতহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে উঠেছে৷ ছাত্র টিএসইউ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার আগরতলায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করেছে৷ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবীতে আগরতলা পশ্চিম মহিলা থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে৷ অপরদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীটি যে এলাকায় ভাড়া থাকত ঐ এলাকার লোকজন ছাত্রীটির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনেছেন৷ ছাত্রীটি বাড়ির মালিককে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে৷ ছাত্রীটির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায় ডেপুটেশন প্রদান করেছে৷
সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী মিলনচক্র এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকত৷ বাড়ির মালিক নিজেই নাকি ছাত্রীটির শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করে৷ বাড়ির মালিকের নাম মৃণাল কান্তি মজুমদার৷ এই ব্যাপারে পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায় দুটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে৷
ঘটনার বিবরণ দিয়ে ঐ যুবতী জানিয়েছেন, এদিন সকালে দা খোঁজার বাহানায় বাড়ির মালিক মৃণাল মজুমদার ভাড়াটিয়া ঐ যুবতীর ঘরে ঢুকে৷ যুবতী কিছু বুঝে ওঠার আগেই মৃণাল তাকে ঝাপটে ধরে৷ সঙ্গে সঙ্গেই মেয়েটি চিৎকার করলে মৃণাল ঘর থেকে বেরিয়ে যায়৷ মেয়েটির চিৎকার শুনে আশেপাশের বাড়ির লোকজন ছুটে যায়৷ আতঙ্কগ্রস্থ অবস্থায় নির্যাতিতা যুবতী চলে আসেন পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায়৷ বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন তিনি৷ মামলার নম্বর ৬৯/১৬৷ তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৫৪(বি) ও ৪৪৮ ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে৷
এদিকে, অভিযুক্ত মৃণাল কান্তি মজুমদার শনিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন৷ পুলিশ তাকে আদালতে তুলছে৷ পুলিশ বিচারকের কাছে অভিযুক্তকে তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছে৷ অন্যদিকে, শনিবার দুপুরে ছাত্র সংগঠন টিএসইউর তরফ থেকে রাজধানী আগরতলায় একটি বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করা হয়েছে৷ ছাত্র সংগঠনটির দাবী অভিযুক্ত ইঞ্জিনীয়ারকে অবিলেম্ব গ্রেপ্তার করতে হবে৷ এই দাবীতে টিএসইউর পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায় যান এবং পুলিশ আধিকীরকের কাছে স্মারকলিপি তুলে দিয়েছেন৷
শ্লীলতাহানির মামলায় অভিযুক্ত মৃণাল কান্তি মজুমদারকে আইনী ঝামেলা থেকে মুক্ত করার দাবীতে শনিবার দুপুরে শ্রী মজুমদারের বাড়ির আশেপাশের কয়েকজন মহিলা ডেপুটেশন দিয়েছেন পশ্চিম আগরতলা মহিলা থানায়৷ প্রতিবেশী মহিলাদের বক্তব্য মৃণাল কান্তি মজুমদারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা৷ শ্রীমজুমদার অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি৷ পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে৷ তিনি এই ধরনের কোন কাজই করতে পারেন না৷
একের পর এক নারী সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের জনমনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ছে৷ কখনো থানার অভ্যন্তরে মহিলা পুলিশ কর্মীকে ধর্ষণ, কখনো টিসিএস অফিসার কর্তৃক ধর্ষণ, এখন পুর্ত্ত দপ্তরের ইঞ্জিনীয়ার কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর শ্লীলতাহানি৷ একের পর এক নারী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটে চলেছে রাজ্যের গ্রাম পাহাড় থেকে শুরু করে রাজধানী আগরতলা শহরে৷ এই ধরনের ঘটনার উত্তরোত্তর বৃদ্ধিতে তথ্যাভিজ্ঞ মহলে রীতিমতো উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে৷
2016-09-04