নিজস্ব প্রতিনিধি, বক্সনগর, ২ সেপ্ঢেম্বর৷৷ সোনামুড়া মহকুমা পাচার বাণিজ্যের মৃগয়া ভূমি বলা হয়ে থাকে৷ যখন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া হয়নি, সে সময় থেকেই অবাধে পাচারের করিডোর হিসেবে খ্যাতি লাভ করে আসছে৷ কিন্তু ঐ সময় বাংলাদেশী পাচারকারীও সীমান্ত প্রহরীর মধ্যে প্রায়ই খন্ডযুদ্ধ বেঁধে যেত৷ পাচারকারীরাও এলোপাথারি মালামালা এপার-ওপার করতে দ্বিধাবোধ করতেন না৷ সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পাচারের রূপরেখা ও পরিবর্তন হয়ে গেছে৷ বর্তমানে গোটা সীমান্তে সুরক্ষা বলের সঙ্গে দহরম ও মহরমের মাধ্যম তৈরি করে এক শ্রেণীর লাইন ম্যান নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করে বিএসএফকে হাতের পুতুল বানিয়ে লুটে খাচ্ছে গোটা সীমান্তে৷ অতীতে, বিএসএফ ঘোষ নামক বস্তুটি কি তা কিন্তু জানা ছিল না৷ সে জন্য ধরপাকড় করে শুল্ক বিভাগের নিকট অধিক মালামাল জমা দিতেন৷ শুল্ক দপ্তর অকসেন ডেকে মালপত্র বিক্রি করে সরকারি রাজস্ব জমা দেবার ফলেই আয়ের উৎস বৃদ্ধি পেত৷ এখন সীমান্তে পাচার বাণিজ্য আরো রমরমা নির্দিষ্ট গেইট দিয়ে রাতের আঁধারে ও দিনের সুযোগ বুঝে এপার ও করে নিচ্ছে পাচারকারীর দল৷ শুধু পাচার হচ্ছে যে তা নয়, নিত্য দিন বাড়ছে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা৷ যা আগামীদিনে বিপদের অশনি সংকেত দিচ্ছে৷ বক্সনগরের গোটা সীমান্তবর্তী এলাকায় দিয়েই প্রতিদিন পাচার হচ্ছে গাঁজা, কোরেক্স, ফেন্সিডিল, জিরা, মশলা, বিভিন্ন গাড়ির অটোরক পার্টস, ইলেকট্রিকের সাজসরঞ্জাম গরু ওষুধ ইত্যাদি৷ ওপার থেকে উঠে আসছে টমটম চালিত অটো রিক্সার ব্যাটরি, মটরের ডাল মাছ বেকারির ময়দা মিকচার মেশিন, ইলিশ মাছ, ড্রাম, কৃষির যন্ত্রাংশ ইত্যাদি৷ সীমান্তে কাঁটাতার বেড়া প্রায় ৯৫ শতাংশ হয়ে গেছে৷ আর সেখানে কর্তব্যরত অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা রয়েছে বিএসএফ আজ তাদের দায়দায়িত্ব ও কতর্ব্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ণচিহ্ণের মুখে৷ কেননা তাঁরকাটা বেড়ার ওপারে যাদের জমি আছে অর্থাৎ সাধারণ কৃষক সঠিক সময়ে জমিতে, সার ওষুধ, কীটনাশক সেচ ব্যবস্থা, ধান কাটার মরশুমে আসা যাওয়ার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়৷ সীমা সুরক্ষা বলের জওয়ানরা৷ আর তাদের মর্জি ভাল হলে গেইট খুলে দেবে, মর্জির ব্যতিক্রম হলেই বিপদ ঘটে৷ গত বৎসরে পশ্চিম কলমচৌরা সীমান্তে গ্রামবাসীর সঙ্গে ওপার থেকে নিজের জমির ধান এপারে আনার বিষয় নিয়ে জওয়ানদের সঙ্গে খন্ডযুদ্ধ অবশেষে কমলচৌরা থানার ওসি অমল চক্রবর্তী উত্তেজিত জনগণকে সামাল দেন৷ সীমান্তে থাকা সাধারণ মানুষের প্রশ্ণ আমাদের জন্য কানুকা দোহাই অর্থাৎ সাহেবের পারমিশন অথবা সিওর পারমিশন লাগবে, কিন্তু পাচারকারীরা মাল পাচার করে নিচ্ছে তখন কার পারমিশনের প্রয়োজন হয়? আমরা তো সাধারণ কৃষক মানুষ আমাদের নিকট হইতে তো কোন প্রকার উৎকোচ পাবে না জওয়ানরা৷ যার ফলে কষ্ট ও ভোগান্তির স্বীকার আমরাই চাষাভূষার দল৷ তাদের আরো প্রশ্ণ বাংলাদেশ থেকে এসে ঘুরে ফিরে গরু ক্রয় করে সীমান্ত পার করে ব্যবসা বাণিজ্য করে তার বেলা পারমিশনের প্রয়োজন নয় কেন? জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে যে বেড়া যদি খেত খায়, তাহলে আর বেড়া দিয়ে লাভ কি? বিএসএফ জওয়ানরা কি পারবে অতীতের সুনাম ফিরিয়ে আনতে৷ তাই এখন দেখার বিষয় হচ্ছে সীমাসুরক্ষা বলের ঊধর্বতন কতৃপক্ষ কি ভূমিকা গ্রহণ করে৷
2016-09-03