BRAKING NEWS

প্রতিবন্ধী কল্যাণে কে কি করলেন, বুক উঁচিয়ে জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রের রাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ আগষ্ট৷৷ রাজ্যে দক্ষতা বৃদ্ধির বিভিন্ন প্রকল্পে প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী কর্মসূচীর Photo 1সাথে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রতিবন্ধীদের সরকারি চাকুরীতে কিছু পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে৷ আজ সকালে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত সামাজিক আধিকারিতা শিবির ও প্রতিবন্ধীদের মধ্যে চলন সামগ্রী বিতরণী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একথা বলেন৷ কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা এলিমকো -র উদ্যোগে এবং পশ্চিম জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষ্ণপাল গুরজার৷ এই অনুষ্ঠানের পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার ৫২৬ জন প্রতিবন্ধীর মধ্যে ৮৮০ টি চলন সামগ্রী বিতরণী করা হয়৷ এডিআইপি প্রকল্পে এজন্য ব্যয় হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা৷
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, রাজ্যে ৮০ হাজারের মতো প্রতিবন্ধী রয়েছেন৷ প্রায় ১৫ হাজার প্রতিবন্ধীকে বিভিন্ন সামাজিক ভাতা দেওয়া হচ্ছে৷ তিনি বলেন, সবাইকে সরকারি চাকরী দেওয়া সম্ভব নয়৷ আমরা চাই প্রতিবন্ধীরা নিজেদের পায়ে দাঁড়ান৷ মুখ্যমন্ত্রী স্ব-সহায়ক দল গড়েও বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধীদের যুক্ত করে স্বাবলম্বী করে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন৷ তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সরকার সবরকম সহযোগিতা করবে৷ প্রতিবন্ধীদের হতাশ হবার কিছু নেই৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজ বা পরিবারের বোঝা নন৷ বিশ্বে অনেক প্রতিবন্ধী আছেন যারা সমস্ত রকম প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজেদের স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন৷
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষ্ণপাল গুরজার বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে রাজ্যে কম্পোজিট রিজিওন্যাল সেন্টার এবং কমিউনিটি রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার গড়ে তুলবে৷ রাজ্যকে ব্রেইল মেশিন ক্রয়ের জন্যও দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে৷ তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা যাতে সচেতন হয়, নিজেদের অধিকার বুঝতে পারে সেই লক্ষ্যে সারা দেশে এ ধরণের শিবির করা হচ্ছে৷ সারা দেশে প্রতিবন্ধীরা যাতে সমান সুযোগ পান সেজন্যে ইউনিভার্সাল পরিচয় পত্র চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ত্রিপুরার দশ হাজার শ্রবণ যন্ত্র দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷ আশি শতাংশের উপর প্রতিবন্ধীদের কেন্দ্রীয় সরকার ও সাংসদ এলাকা উন্নয়ণ তহবিলের সহায়তার ব্যাটারি চালিত মোটর সাইকেল দেওয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷
সম্মানীয় অতিথির ভাষণে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী বিজিতা নাথ কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে নানা প্রকল্পে হাতে নিয়েছি৷ রাজ্যে রয়েছে দৃষ্টিহীনদের জন্য ২টি বিদ্যালয় ও ১টি মূক ও বধিরদের জন্য বিদ্যালয়৷ ৪টি জেলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে৷ রাজ্যে চাকুরীতে প্রতিবন্ধীদের জন্য ৩ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে৷ তিনি রাজ্যের নতুন ৪ জেলায় ৪টি জেলা প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ার জন্য কেন্দ্রয়ী মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন৷
অনুষ্ঠানে সাংসদ ঝর্ণা দাস বৈদ্য, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অনীস কুমার আস্থী বক্তব্য রাখেন৷ স্বাগত ভাষণ দেন পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডাঃ মিলিন্দ রামটেকে৷ উপস্থিত ছিলেন এলিমকো কোম্পানীর সি এম ডি -ডি আর সারিণ, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব চৈতন্য মূর্তি৷
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী গুরজার প্রতিবন্ধী দিপালী আচার্য্যের হাতে স্মার্ট ক্যান্স তুলে দেন৷ মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ প্রতিবন্ধীদের মধ্যে ট্রাই সাইকেল, হুইল চেয়ার, ওয়াকিং স্টিক, ব্রেইলী কিট, শ্রবণ যন্ত্র ইত্যাদি তুলে দেন৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ কুমার দাস৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *