জলপাইগুড়ি, ২৩ আগস্ট (হি.স): জলপাইগুড়ি জিলা পরিষদে তৃণমূল নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দাবী করার পর জিলা পরিষদ কার | কে কিভাবে দখল নিচ্ছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে| ২০১৪ সালের সংশোধিত পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী জিলা পরিষদের সভাধিপতি এবং সহকারি সভাধিপতি-এর প্রথম বৈঠকের দিন থেকে আগামী আড়াই বছরের মধ্যে কোনও জিলা পরিষদই অনাস্থা আনা যাবেনা| এই অবস্থায় রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের পরবর্তী নির্দেশিকার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন জলপাইগুড়ি জিলা পরিষদের প্রশাসনিক মহল| জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে তৃণমূলের জিলা পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব আনার আবেদনপত্র জমা পড়ার পর বিভাগীয় কমিশনার অনাস্থা বৈঠক ডাকেন কি না সেদিকেও সকলে নজরে রাখছেন| জলপাইগুড়ি জিলা পরিষদের গত ২০১৩ সালের ত্রিস্তর নির্বাচনে বামেদের দখলে যায়| ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে জলপাইগুড়ি জিলা পরিষদের (অবিভক্ত) সভাধিপতি সিপিএমের নুরজাহানবেগম এবং আরএসপি সহকারি সভাধিপতি যশিন্তিকা লাকড়া শপথ নেন এবং প্রথম বৈঠক করেন| কিন্তু জলপাইগুড়ি জিলা পরিষদের সভাধিপতির প্রথম মিটিং-র দিন কোনটি ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস না কি ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর দিনটিকে মানা হচ্ছে কি না এই বিষয়ে জিলা পরিষদের অতিরিক্ত জিলা শাসক তথা মুখ্য কার্য্য নির্বাহী অম্লানজ্যোতি সাহা পরিষ্কার কিছুই জানান নি| পুরো বিষয়টি জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরের উপর ছেড়ে দিয়েছেন| নুরজাহান বেগম তৃণমূলে যেতে পারেন এমন জল্পনা মঙ্গলবার সারাদিন ধরেই চলে তার সমস্ত মোবাইল বন্ধ থাকার কারনে| নুরজাহান বেগম যেহেতু সভাধিপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেননি, তাই তিনি জিলা পরিষদে এলে নৈতিকতার দিক থেকে তাকে কেউ বাঁধা দিতেও পারবেন না| কিন্তু যেহেতু বামেদের ৬ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেবার ফলে দলত্যাগী ধজেন রায় (জনস্বাস্থ্য), গোবিন্দ রায় (কৃষি) এবং কৃষনা রায় (শিক্ষা) বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ| তাই জিলা পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির কোনও বৈঠক ডাকলে সেখানে সদস্যদের মধ্যে দ্বিমত তৈরি হতে পারে| তাই জিলা পরিষদের সাধারণ সভায় কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা করাই যেতে পারে বলে অম্লানজ্যোতি সাহা জানিয়েছেন| খুব শীঘ্রই জিলা পরিষদে অনাস্থা আনতে চলেছেন বলে জিলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য অমরনাথ ঝাঁ জানিয়েছেন| তবে এই মুহুর্তে জিলা পরিষদের এই অচল অবস্থার মধ্যে কেয়ারটেকার বসানোর সরকারি নির্দেশ নেই বলে জিলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে| এদিকে বিভাগীয় কমিশনার বরুন রায় চোপড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে অংশ নেবার কারনে তার প্রতিক্রিয়া মেলেনি| এদিন বিকেল সাড়ে পাচটা পর্যন্ত বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে তৃণমূলের তরফে কোনও অনাস্থা জমা পড়েনি বলে জানা যায়নি| সোমবার জিলা পরিষদের ১৫ জন বাম সদস্যের মধ্যে ৬ জন তৃণমূলে যোগ দেন| বর্তমানে জলপাইগুড়ি জিলা পরিষদে তৃণমূলের আসন দাড়িয়েছে ১০ জন, বামেরা ৯ টি আসন নিয়ে সংখ্যালগিষ্ট রয়েছে| এদিকে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে বামেদের বাকি ৯ জন সদস্য সদস্যার মধ্যে আরও ৩ থেকে ৪ জন তৃণমূলে যেতে পারেন|