নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ আগষ্ট৷৷ রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনায় একের পর এক সংযোজন হচ্ছে, কখনো টিসিএস অফিসার, কখনো পুলিশ অফিসার কিংবা রাজ্যের ‘বীরবন্ধু’ বলে পরিচিত গর্বের টিএসআর বাহিনীর জওয়ানরা৷ একাংশ রক্ষকদের যৌন ব্যাভিচারে গোটা অরক্ষা প্রশাসনকে কালিমালিপ্ত করছে৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে যৌন ব্যাভিচারের ঘটনায় আরক্ষা বিভাগের কর্মীদের যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠে এসেছে৷
গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক টিএসআর জওয়ানের বিরুদ্ধে৷ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে বিলোনীয়া থানার অধীন দক্ষিণ মির্জাপুর গ্রামে৷ এই বিষয়ে ধর্ষিতা বিলোনীয়া মহিলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে৷ মামলা নিলেও পুলিশ অভিযুক্ত টিএসআর জওয়ানকে গ্রেপ্তার করেনি৷ পুলিশের বক্তব্য অভিযুক্ত টিএসআর জওয়ান পালিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷ অভিযুক্ত টিএসআর জওয়ানকে গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছে স্থানীয় জনগণ৷
এদিকে, পূর্ব আগরতলা মহিলা থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেছে সতের বছরের এক সুকল পড়ুয়া ছাত্রীর অভিভাবক৷ অভিযুক্তের নাম রঞ্জিত দেবনাথ৷ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ঐ সুকল পড়ুয়া কিশোরীকে ধর্ষণ করে৷ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে জুলাইয়ের সাত তারিখে৷ এই ব্যাপারে আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় একটি মামলা হয়েছে৷ মামলার নম্বর ৩৮/১৬৷ মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার এসআই কমলা রানী দাস জানিয়েছেন শীঘ্রই অভিযুক্ত রঞ্জিত দেবনাথকে গ্রেপ্তার করা হবে৷ বর্তমানে সে পালিয়ে বেরাচ্ছে৷
কথিত স্বর্ণযুগে প্রতিদিন রাজ্যের কোথাও না কোথাও নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে৷ রাষ্ট্রপতির কালার্সপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারও এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাছে যুক্ত হয়ে পড়ছে৷ জানা গিয়েছে, থানার পুলিশ কোয়ার্টারে এক মহিলা কনস্টেবল ও পুরুষ কনস্টেবলের অবৈধ যৌন মিলন ঘিরে রীতিমতো ছিঃ ছিঃ রব পড়েছে৷ ঘটনা বক্সনগর কলমচৌড়া থানায়৷ ঐ পুরুষ ও মহিলা কনস্টেবল রাত বারোটায় যৌন মিলনের সময় হাতেনাতে পাকড়া্য করে থানারই এক পুলিশ অফিসার৷
২০১৫ সালে রাজ্যের সবচেয়ে ভালো থানা হিসাবে বর্ষসেরা পুরস্কারটি পায় কলমচৌড়া থানা৷ তারপর কিছুদিন পর সেরা ওসি হিসাবে রাজ্যের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারটি পান কলমচৌড়া থানার প্রাক্তন ওসি অমল চক্রবর্তী৷ সম্প্রতি কলমচৌড়া থানায় সদ্য নিযুক্ত ওসি প্রভাত চন্দ্র শীল আসার মাস যেতে না যেতেই বিভন্ন দুর্নীতি, কুকর্ম মাথাচাড়া দিচ্ছে থানা এলাকায়৷ ওসি অমলবাবুর সাজানো বাগান তছনছ করতে চলেছে বর্তমান আরক্ষা কর্মীরা৷ এমনই অভিমত বক্সনগর এলাকার জনগণের৷
গত কিছুদিন যাবত কিছু পুলিশ অফিসার মহিলা সংক্রান্ত বিষয়ে কুকর্মের কথা শোনা যাচ্ছে বক্সনগরে৷ এলাকায় রব উঠেছে কলমচৌড়া থানায় এক সাব ইনস্পেক্টর ও এক মহিলা পুলিশ কর্মীর মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে৷ তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে আগামী দিনে৷
এদিকে, শুক্রবার রাত বারোটা নাগাদ কলংকিত সাব ইনস্পেকটরের বদলে হাতে নাতে ধরা পড়ল এক পুরুষ কনস্টেবল ও এক মহিলা কনস্টেবলের কুকর্ম৷ জানা গিয়েছে, পুরুষ কনস্টেবলের নাম শান্তনু দে৷ তার বাড়ি আগরতলা এ ডি নগরে এবং মহিলা কনস্টেবলের নাম মিনতি অধিকারী৷ তার বাড়ি বিলোনীয়ায়৷ শুক্রবার রাত বারোটা নাগাদ মহিলা পুলিশ কর্মীর কোয়ার্টারে চিৎকার শুনে থানার কর্তব্যরত এস অই গোপালবাবু সহ আর কয়েকজন পুলিশকর্মী ঘরে ঢুকেন৷ দুজনকেই আপত্তিজনক অবস্থায় দেখেন তারা৷ শনিবার সকালে এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়৷ এদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে থানার ওসি জানিয়েছেন, ঐ পুরষ কনস্টেবল ও মহিলা কনস্টেবলের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে৷ তাদের পরে বিয়ে হবে৷ তবে জানা যায় বিষয়টি জানতে পেরে এসডিপিও ওসির কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন৷ এই ঘটনায় স্থানীয় জনমনে প্রশ্ণ উঠেছে থানার কোয়ার্টারে অবৈধ সম্পর্কের কি করে মধ্যেই ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়েছে পুলিশ৷
এদিকে, বিশালগড় এসডিএম এলাকায় স্থানীয় এক ভাড়াটিয়া বাড়িতে অবাধে চলছে দেহব্যবসা৷ দুই যুবতীকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করানোর অভিযোগ উঠেছে এলাকারই এক মাঝ বয়সী মহিলার বিরুদ্ধে৷ এলাকার মানুষ ঘটনা জানতে পেরে বিশালগড় থানায় গণ স্বাক্ষর নিয়ে একটি ডেপুটেশন দিয়েছে৷ অভিযুক্ত মহিলার নাম মিনতি দাস৷ তার বিরুদ্ধে ছত্রিশ জন নারী পুরুষ মিলিত হয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন৷ তারা জানান বিগত দুই বছর ধরে মিনতি দাস এলাকার পরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে৷ দিন দুপুরে বা রাতের অন্ধকারে অসংখ্য খদ্দের তার বাড়িতে আসা যাওয়া করে৷ বিষয়টি এলাকার মানুষ প্রত্যক্ষ করে৷ তাই তারা একজোট হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷ পুলিশের কাছে দাবী জানানো হয়েছে যাতে অবিলম্বে ঐ মহিলার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়৷ ঐ মহিলার বিরুদ্ধে এর আগেও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে৷