BRAKING NEWS

বিশালগড় ও সোনামুড়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা কবলিত সহস্রাধিক পরিবার, আগরতলা-সাব্রুম জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্তব্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা, জনজীবন বিপর্য্যস্ত

নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ১৮ জুলাই৷৷ রবিবার ও সোমবারের বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা৷ নিম্নাঞ্চল

আগরতলা-সাব্রুম জাতীয় সড়কের চড়িলাম বাজারে তোলা নিজস্ব ছবি৷
আগরতলা-সাব্রুম জাতীয় সড়কের চড়িলাম বাজারে তোলা নিজস্ব ছবি৷

প্লাবিত হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে৷ বিশালগড়ে আগরতলা- সাব্রুম জাতীয় সড়ক জলের তলায় ডুবে গেছে৷ ফলে জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে পড়েছে৷ ফলে বহু সংখ্যক যানবাহন আটকে পড়েছে৷ দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে৷ বিশালগড় ও চড়িলাম এলাকার বহু বাড়িঘর জলপ্লাবিত হয়েছে৷ রাজ্যের অন্যান্য স্থানেও নদীগুলিতে জল ক্রমশ ফঁুসছে৷ নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হলেও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি৷ আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৪ ঘন্টাতেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷ বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হলে বন্যা অবশ্যাম্ভাবী৷ প্রশাসন সর্বত্র পরিস্থিতির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলেছে৷ এদিকে, বৃষ্টির ফলে সোমবারও জনজীবন আংশিক বিঘ্নিত হয়েছে৷ বৃষ্টির জলে প্লাবিত গোটা বিশালগড়৷ বিশালগড়ের আনাচে কানাচে দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র জলের স্রোত৷ এই জলের জন্য বেহাল অবস্থায় দাঁড়িয়ে আগরতলা-সাব্রুম জাতীয় সড়কের চড়িলাম পুরান বাড়ি এলাকা৷ এমনকি বিশালগড় মধ্যবাজার, পূর্ব লক্ষ্মীবিল রোড, ধবজনগর সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জলের তলায় রাস্তাঘাট৷ এলাকাবাসীদের অভিযোগ জলমগ্ণ অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনিক স্তরে নীরব ভূমিকা পালন করছে৷ এক পশলা বৃষ্টির কারণে বহু ঘরবাড়ি ছাড়াও ক্ষতি হয়েছে বিশালগড় বাজারের বহু দোকানপাট৷
এদিকে, গতকাল রাতে প্রবল বৃষ্টির কারণে সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় মহকুমা ও সোনামুড়া মহকুমায় মোট ১০৭৫ টি পরিবার বন্যার কবলে পড়ে এবং চড়িলাম এলাকায় ৪৪ নং জাতীয় সড়কের তিনটি স্থান কিছু সময়ের জন্য জলমগ্ণ হয়৷ রাজস্ব দপ্তরের উপসচিব এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই সংবাদি জানান৷ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়৷ জাতীয় সড়ক জলমগ্ণ হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়৷ রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷ এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিশালগড়, চরিলাম ও দূর্লভনারায়ণ এলাকায় মোট তিনটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়৷ তাতে ৪০টি পরিবার শিবিরে আশ্রয় নেয়৷ সিপাহীজলা জেলার প্রশাসন ত্রাণ কাজে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷ বন্য পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ন নজর রাখছেন৷
রবিবারের প্রবল বৃষ্টিতে চড়িলামের উপর জাতীয় সড়ক টানা তিন চার ঘন্টা যানচলাচল বন্ধ হয়ে থাকে৷ বর্ষা কালে বহু রাজ্যেই কমবেশী বন্যা হয়৷ কিন্তু ত্রিপুরার বন্যা একটু ভিন্ন প্রকৃতির৷ ত্রিপুরার বিখ্যাত নদী গোমতী ও বিজয় এর উৎসমূখে বৃষ্টিপাতের ফলে নদীগুলির জল বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করেছে৷ তাছাড়া চড়িলামের রাঙ্গাপানী নদীর অতিবর্ষনে অতিরিক্ত জলরাশিকে ধরে রাখতে না পারায় ফলে নদীর জলে নিচু স্থানগুলি জলমগ্ণ হয়ে উঠেছে৷ মানুষের দুগতির সীমা পার হয়েগেছে৷ টানা তিনবৎসর পর আজ সোমবার চড়িলাম এলাকায় বহুস্থানে জলমগ্ণ হয়ে ৪৪নং জাতীয় সড়ক কৃত্রিম সমুদ্রে রূপায়িত হয়েছে৷ ফলে এলাকার বহুমানুষ এখন ঘরছাড়া হয়ে আছে৷ পঞ্চায়েত সহযোগিতায় এলাকায় বন্যা কবলিত স্থানের জনগনকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে নিয়ে আসেন৷ এবং তাদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বন্টন করা হয়৷ শত শত দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে, বহু গবাদি পশু জলের নিচে আটকে পড়েছে৷ বহু অমূল্য সম্পদ জলের নিচে ডুবে গেছে৷ অবশ্য পঞ্চায়েত সহযোগিতায় এলাকার প্রধান ও ভিডিও শান্তনু বিকাশ দাস এলাকায় বন্যা কবলিত স্থানে গিয়ে তাদের সান্তনা দিয়ে আসেন৷ যারা বিপদগ্রস্থ তাদেরকে নিরাপদ স্থানে আনার ব্যবস্থা করেন৷ আজ বন্যায় জাতীয় সড়ক টানা তিন চার ঘন্টা যাবৎ বন্ধ হয়ে থাকে, ফলে বহু দূর দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা তাদের সঠিক সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারেননি৷ বিশেষ করে চড়িলামে বন্যা হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে পরিমল চৌমূহনী থেকে শুরু করে পুরানবাড়ী এঢ়াকায় বহু জনসাধারনের৷ বহু চাষযোগ্য ফসল বন্যায় জলের নীচে ডুবে গেছে৷ এলাকায় বহু মানুষের অভিযোগ যে এখন বন্যা হওয়ার অন্য একটি কারণ রেল রাস্তায় বাঁধ দেওয়ার জল সঠিক ভাবে নিষ্কাসন হচ্ছেনা তাই বন্যা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *