BRAKING NEWS

ঘুমন্ত দুই ছেলেকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে আত্মহত্যার চেষ্টা বাবার, তিনজনই হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ২৬ জুন৷৷ মানসিকভাবে অসুস্থ পিতা ধারালো দা নিয়ে হামলা চালাল নিজেরই ছেলেদের উপর৷ একজন নয়, বড় ও মেজ ছেলের প্রাণ কেড়ে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পিতা৷ কিন্তু রক্তের বন্যা বইলেও আপাতত এক ছেলে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হবার অপেক্ষা করছে৷ অপর ছেলে গুরুতর জখম অবস্থায় জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে৷ কিন্তু ছেলেদের উপর আক্রমণ করার পর নিজের জীবন শেষ করতে দড়ি বেঁধে ঝুলে পড়লেন পিতাও৷ যদিও উনার স্ত্রী এবং প্রতিবেশীর তৎপরতায় ছেলেদের সাথে আক্রমণাত্মক পিতার প্রাণ আপাতত বেঁচে গেল৷ তবে ঘাতক পিতাও বর্তমানে জিবি হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন৷ এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী হল খোয়াইয়ের চরগণকী এলাকা৷ ঘটনা রবিবার ভোরে৷
ঘুমের মধ্যেই পিতা দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করল নিজেরই দুই সুকল পড়ুয়া পুত্রকে৷ পরে পিতা নিজের ব াড়িতেই ফাঁসিতে আত্মহত্যার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়৷ এই মর্মান্তিক ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় খোয়াই জেলার চরণগণকী গ্রামে৷ দুর্ঘটনার পর পিতা ও তার এক পুত্রকে খোয়াই জেলা হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয় জিবি হাসপাতালে৷ চাঞ্চল্যকর এই দুর্ঘটনাটি ঘটে খোয়াই থানাধীন চরগণকী চরগণকী গ্রামে রবিবার ভোরে৷ ঘটনার বিবরণে জানা যায় চরগণকী গ্রামের বাসিন্দা শিবময় চক্রবর্তী পেশায় সরকারি কর্মচারী৷ তিনি আজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে হাতে দা নিয়ে নিজেরই দুই পুত্র সন্তানকে ঘুমন্ত অবস্থায় কুপাতে শুরু করে৷ ঘরের খাটে তখন শিবময় চক্রবর্তীর বড় ছেলে বিশ্বময় ও মেজ ছেলে শিববরামকৃষ্ণ ঘুমে অচেতন৷ পিতা শিবময় এর দায়ের কুপে বড় ছেলের ঘাড় ও মুখে মারাত্মক জখম হয় এবং মেজ ছেলের পিটে পড়ে দায়ের কুপ৷ হঠাৎ এভাবে পিতা দা দিয়ে কুপাতে থাকায় দুই জখম পুত্র চিৎকার করতে তাকে৷ চিৎকার শুনে তাদের মা অপর বিছানা থেকে ছোট ছেলেকে নিয়ে এগিয়ে এসেই দেখতে পায় ছেলেরা বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করচে৷ এই ধরনের ভয়াবহ অবস্থা থেকে শিব ময়ের স্ত্রী বাঁচানোর আত্ম চিৎকার শুরু করলে পাশের বাড়ির এক ভদ্রলোক উত্তম চক্রবর্তী দৌড়ে আসেন৷ তিনি এসে রক্তাক্ত ও জখম দুই ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন৷ এরই ফাঁকে জি আর এস কর্মী তথা ঘাতক পিতা নিজের বাড়িতেই ফাঁসিতে ঝুলে পড়েন৷ দুই জখম চাত্রকে প্রতিবেশী উত্তম বাবু হাসপাতালে পাঠিয়ে শিবময়কে ধরতে বাড়িতে গিয়ে দেখেন শিবময় ফাঁসির দড়িতে ছটফট করছে৷ ঠিক তৎক্ষণাৎ উত্তম বাবু দ্রুত ফাঁসির দড়ি দা দিয়ে কেটে দেন৷ মুহূর্তেই খবর পেয়ে গ্রামের আরো কয়েকজন ছুটে আসেন শিবময় চক্রবর্তীর বাড়িতে৷ পরে জ্ঞানহীন অবস্থায় শিবময়কে নিয়ে যাওয়া হয় খোয়াই জেলা হাসপাতালে৷ পিতার দায়ের কুপে যে দুই সুকল পড়ুয়া পুত্র জখম হয় তাদের মধ্যে জখম গুরুতর হওয়াতে বিশ্বময় চক্রবর্তী(১৫) কে ভোরেই পাঠানো হয় জিবি হাসপাতালে৷ আর শিবরামকৃষ্ণ চক্রবর্তীকে (১১) প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়৷ অপর দিকে ঘাতক পিতা শিবময় চক্রবর্তীকেও পাঠানো হয় জিবিতে৷ শহর সংলগ্ণ গ্রাম চরগণকীতে এ ধরনের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ স্থানীয় মানুষ জানায় শিবময়ের মেজ ছেলেটি খোয়াই নবোদয় সুকলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশুনা করছে৷ গতকালই সে নবোদয় থেকে বাড়িতে এসেছিল৷ শিবময়ের বড় ছেলের শ্রীকৃষ্ণ সুকলের দশম শ্রেণীর ছাত্র৷ হঠাৎ কি কারণে শিবময় নিজের স ন্তানদের হত্যার উদ্দেশ্যে দা দিয়ে কুপাতে তৎপর হয় সে বিষয়ে গ্রামের মানুষ কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি৷ তবে শিবময় চক্রবর্তীর কিছু মস্তিষ্ক বিকার রয়েছে বলে অনেকেই জানান৷ মস্তিষ্কে বিকার না অন্য কোন কারণ রয়েছে এই ঘটনায় তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *