BRAKING NEWS

পরিকাঠামো দূর্বলতায় পঠন পাঠন লাটে বিভিন্ন সুকলে, অভয়নগরে পথ অবরোধ ছাত্রছাত্রীদের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জুন ৷৷ রাজধানী আগরতলা শহর এলাকার অভয়নগরের নজরুল স্মৃতি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবিতে পথ অবরোধ করে৷
রাজধানী আগরতলা শহর এলাকার বনেদি সুকলগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও অভয়নগরের নজরুল স্মৃতি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের তেমন কোন উদ্যোগ নেয়নি৷ পরিকাঠামোর অভাবে অভয়নগর নজরুল স্মৃতি বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন লাটে উঠেছে৷ বিদ্যালয়ে পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, প্রয়োজনীয় ক্লাস রুম নেই৷ সুকল এলাকাটি জঙ্গলে পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে৷ এসব সমস্যার কথা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ বিদ্যালয় শিক্ষাস্তরের নজরে আনা হয়েছে৷ কিন্তু এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি৷ তাতে ক্ষুব্ধ হয়েই ছাত্রছাত্রীরা আজ পথ অবরোধ করে৷
অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা অবরোধস্থলে ছুটে যান৷ দাবি পূরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়৷ এই আশ্বাসের ভিত্তিতেই অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয় ছাত্রছাত্রীরা৷ দাবি পূরণ না হলে আরো বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হঁুশিয়ারি দিয়েছে ছাত্রছাত্রীরা৷
এদিকে, রাজ্যের বিদ্যালয় গুলিতে গুনগত শিক্ষার জন্য রাজ্য সরকার সিসিই পদ্ধতি চালু করেছে৷ কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যালয় গুলিতে প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অভাব ও পরিহকাঠামো গত বিভিন্ন সমস্যার জন্য গুনগত শিক্ষা অধরাই রয়ে গেল৷ তারপরও সপ্তমের কান্ডারীরা বরাবরই দাবী করে আসছে রাজ্যে নাকি শিক্ষা বিপ্লব চলছে৷
দীর্ঘদিন যাবত পরিকাঠামোহীনতায় ভুগছে অমরপুর মহকুমার খেদারনাথ দুই নং কলোনীতে অবস্থিত শচিন্দ্র কুমার পাড়া মডেল নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালটি৷ ১৯৬- ইং সালে স্থাপিত প্রাচীনমত ওই বিদ্যালয়টি বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে৷ মান্ধাতা আমলে নির্মীত বিদ্যালয়ের দালান বাড়ীগুলির জীর্ন দশা৷ ওয়ালে বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে৷ মাথায় উপরের সিলিং গুলি ভেঙ্গে পরছে৷ যে কোন সময় বড় রকমের দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে বিদ্যালয়ে পঠন পাঠন করতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের৷ শিক্ষকরাও অজানা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে৷ বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের স্বল্পতা রয়েছে৷ প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মাত্র তিনটি শ্রেণীকক্ষ রয়েছে৷ যার ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের একটি কক্ষে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর এক সাথে একটি কক্ষে পঠন পাঠন করানো হয়৷ আর যার ই হোক এতে করে যে গুনগত শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব নয় তা সহজে অনুমেয়৷ পাশাপাশি বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাব রয়েছে৷ বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র তিনজন৷ যার মধ্যে একজন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রায়ই বিভিন্ন অফিসিয়াল কাজে ব্যস্তু থাকেন৷ ফলে বেশীর ভাগ সময় দুইজন শিক্ষককেই বিদ্যালয়ে পাঠদান করতে হয়৷ বিশেষ কারনে যদি কোন শিক্ষক ছুটি নিয়ে থাকে, তাহলে বিদ্যালয় পরিচালন করা কষ্ট কর হয়ে পরে৷ শিক্ষক স্বল্পতার জন্য সিসিই পদ্ধতি অনুসরন করে গুনগত শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না৷ ফলে রাজ্য সরকার বিদ্যালয়ে সিসিই পদ্ধতি চালু করলেও এডিসি এলাকার বেশীর ভাগ বিদ্যালয়ে যে ওই পদ্ধতি সঠিক ভাবে অনুসরন করা হয় না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ এই ব্যাপারে এডিসি প্রশাসনের শিক্ষা দপ্তরের ভূমিকাত যথেষ্ট প্রশ্ণ চিহ্ণের মুখে৷
শচীন্দ্র কুমার পাড়া মডেল নিন্ম বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের আরেকটি প্রধান সমস্যা হল পানীয় জলের অভাব৷ প্রাচীনতম বিদ্যালয়টিতে আজ পর্যন্ত পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা করতে পারেন নি বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর৷ বছর দুয়েক আগে বিদ্যালয়ের পাশে কেটি হাইড্রেন পয়েন্ট স্থাপন করা হলেও আজ পর্যন্ত ওই পয়েন্ট দিয়ে জল পরিষেবা করা হয় নি৷ পানীয় জলের তেষ্টা মেটাতে ছাত্র-ছাত্রী সহ শিক্ষকরা বাড়ী থেকে বোতল দিয়ে জল নিয়ে আসে৷ জলের অভাবে বিদ্যালয়ের মিড ডে মিল পরিচালনা করতে ব্যাঘাত দেখা দিচ্ছে৷ বিদ্যালয়ে শৌচাগার থাকলেও জলের অভাবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না৷ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রানকিশোর সাহা জানান, পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট বহুবার জানালেও কোন কাজ হচ্ছে না৷ দীর্ঘ দিন যাবত বিদ্যালয়টি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে৷ আবার বিদ্যালয়টির নামের মধ্যে মডেল কথাটি রয়েছে৷ অর্থাৎ শিক্ষা দপ্তরের মর্ডেল সুকলের তালিকায় বিদ্যালয়টি রয়েছে৷ কিন্তু মডেল রাজ্যের ওই মডেল বিদ্যালয়টির প্রতি শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের কোন নজরদারী নেই বললে চলে৷ ফলে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার অভিভাবক মহল৷ অভিভাবকদের দাবী বিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তর যেন দ্রুত কার্যকারী ভূমিকা গ্রহন করে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *