BRAKING NEWS

ধস পড়ে সড়ক পথে ফের বিচ্ছিন্ন ত্রিপুরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, তেলিয়ামুড়া, চুড়াইবাড়ি, ৫ জুন৷৷ জাতীয় সড়কের যন্ত্রণা পিছু ছাড়ছেনা আপামর রাজ্যবাসীকে৷ একই সাথে যানবাহন চালকদেরও৷ বর্ষার মরশুম শুরুর আগেই থেকেই জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থায় নাভিশ্বাস৷ তার উপর আঠারমুড়ায় ধস পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে৷ সড়ক পথে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে ত্রিপুরা৷ এদিকে, আসামের ভেতরে লোয়ারপোয়ায় বিধবস্ত হয়ে থাকা জাতীয় সড়কের অবস্থা সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন রাজ্যটির নয়া সরকারের অফিসার ও নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা৷ দীর্ঘদিন ধরে লোয়ারপোয়া নিয়ে অভিযোগের পাহাড়৷ আসাম সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসার ও জনপ্রতিনিধিরা এই সমস্যা থেকে নিস্তার দেওয়ার জন্য কোন কার্য্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি৷ তবে বিজেপির নেতৃত্বাধীন নয়া সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর রবিবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের একটি টিম লোয়ারপোয়া সফর করেছে৷ এই লোয়ারপোয়া নিয়ে ত্রিপুরা সরকার কেন্দ্রের ও তৎকালীন তরুণ গগৈ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল৷ কিন্তু নিটফল শূন্য৷ এখন নয়া সরকার আসামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ এই নতুন সরকার কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ নিয়ে লোয়ারপোয়ার যন্ত্রণা থেকে কতটা মুক্তি দিতে পারবে সেটাই প্রশ্ণ৷
Nh visit picএদিকে, আঠারমুড়ায় ধস পড়ে যান চলাচল স্তব্ধ৷ শনিবার রাতে জাতীয় সড়কের আঠারমুড়া পাহাড়রের ৪৩ মাইল এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে ধস পড়ে৷ বড় আকারের ধস পড়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ ছোট বড় সব ধরনের যানবাহন আটকা পড়ে গিয়েছে৷ চবিবশ ঘন্টা অতিক্রান্ত হতে চলেছে এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি৷ শত শত যানবাহন পাড়ারের মধ্যে আটকা পড়ে রয়েছে৷ যাত্রী সাধারণ মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়েছে৷ উভয় দিকের যানবাহনগুলির যাত্রীরা গাড়ি নিয়ে ফিরে গিয়েছেন৷
সংবাদে প্রকাশ শনিবার সন্ধ্যারাতে আঠারমুড়ে পাহাড়ের বেশ কয়েকটি স্থানে ধস পড়ে৷ তখন ঐ সড়কে যানবাহন চলাচল করছিল৷ আচমকা ধস পড়ায় রাস্তায় মাটি জমে গিয়েছে৷ বিআরও এর কর্মীরা ড্রজার নিয়ে মাটি সরানোর কাজে হাত লাগায় রবিবার সকালে৷ কিন্তু দিনভর চেষ্টা চালিয়েও ধসে পড়া মাটি পুরোপুরি সরানো সম্ভব হয়নি৷ সেখানে আটকা পড়া যান চালকরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ৷ তাদের অভিযোগ বিআরও এর কর্মীরা বর্ষার আগে রাস্তা সংস্কারের কাজ করেনি৷ একই সঙ্গে পাহাড়ের পাশে ড্রেন সংস্কার করারও উদ্যোগ নেয়নি৷ এই পরিস্থিতিতে বিপদের ঝঁুকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে তাদের৷ বিআরও এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ধসে পড়া মাটি পরিস্কার করে জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে৷ প্রসঙ্গত, একদিকে আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের আসামের লোয়ারপোয়ায় রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য যান চলাচল স্তব্ধ হয়েছিল৷ বহু কষ্টে ঐ এলাকা থেকে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে রাজ্যে আসলেও শেষ রক্ষা হলনা৷ এবার আঠারমুড়ায় ধসে আটকা পড়ে গিয়েছে যান চালকরা৷
অবশেষে ঘুম ভাঙল অসম সরকারের৷ দীর্ঘদিন থেকে অসম ত্রিপুরা ৬নং জাতীয় সড়কের বেহাল দশা থাকার ফলেও রাজ্য সরকারের কোন হেলদোল দেখা না গেলেও অসমের সরকার পরিবর্তনের পর অসম আগরতলা জাতীয় সড়কের উদ্যোগে হাতে নেয় রাজ্যের বিজেপি সরকার৷ অবশেষে আজ এনএইচএন্ড বিল্ডিং কমিশনার অজয় বরদলৈ, পিডব্লিউডি কমিশনার মোহন চন্দ্র বড়ো ঐ ৬নং জাতীয় সড়কের লোহার পোয়া থেকে ত্রিপুরা অসম সীমান্ত চুড়াইবাড়ি পর্যন্ত দশ কিলোমিটার পথ পরিদর্শন করেন৷ কমিশনারের সাথে জরাজীর্ণ পথটি পরিদর্শনে আসেন বিজেপি দলের বার্তাবাড়ি সমষ্টির বিধায়ক কৃপানাথ মল্ল এবং পাথারকান্দি সমষ্টির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল৷ বিধায়ক ও কমিশারগণ সরজমিনে ঐ দশ কিলোমিটার পথ পরিদর্শন করেন৷ এবং সাংবাদিকদের সামনে বলেন অসমের বরাক উপত্যকার অবহেলিত পথ এটি৷ দীর্ঘদিন থেকে এই পথটি পুননির্মাণের চেষ্টা করলেও বাস্তবে তা হয়নি৷ এই সড়কটি ত্রিপুরা রাজ্যের লাইফ লাইনও বটে৷ দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে নির্মাণ সংস্থা এআরএসএস এ পথটি সংস্কারের নামে ধোকাবাজি করে এসেছিল৷ একদিন কাজ করে তিনদিন কাজ ফেলে রাখত, অবশেষে এবিসিআই নামক নির্মাণ সংস্থার কাছে ৬নং জাতীয় সড়কের কাজের দায়িত্ব দেয়৷ বর্তমানে এবিসি আই সঠিকভাবে দিনরাত পথ সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ যদি আবহাওয়া তেমন খারাপ না থাকে তাহলে মাসের মধ্যে জাতীয় সড়কটি সম্পূর্ণরূপে সংস্কার সম্পূর্ণ৷ তাছাড়া কমিশনার অজয় বরদলৈ বলেন, বর্তমানের রাজ্য সরকার অসমের সবকটি পথ মেরামতির কাজে উদ্যোগও নেবে৷ এখন দেখার বিষয় কবে নাগাদ এই ৬নং জাতীয় সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী হয় এবং ত্রিপুরাবাসীর সমর যাতনা নির্মূল হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *