নিজস্ব প্রতিনিধি, খোয়াই, ৫ জুন৷৷ ক্রমাগত বিরোধী রাজনৈতিক দলের চাপের ফলে পুলিশ দুই দফায় নিকুঞ্জ বর্মণ হত্যা কান্ডে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করল৷ নিকুঞ্জ বর্মণ হত্যাকান্ড নিয়ে বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস ইত্যাদি বিরোধী দল গুলি যখন পুলিশকে প্রচন্ড চাপে ফেলে দেয় তখন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা শহরে মিছিল করে জানান দেয় নিকুঞ্জের হত্যাকারী সিটুর সমথির্ত নয়৷ পুলিশ এই হত্যাকান্ডে দুই দফায় গ্রেপ্তার করে মনোজিৎ চক্রবর্তী, রতন দাস, রাম কুমার দেববর্মা, সুধন্য দেববর্মা এবং প্রদীপ গোপ৷ এই হত্যাকান্ডে মূল অভিযুক্ত সুধীর দাস গুপ্ত পুলিশের নাগালের বাইরে৷ গতকাল রাতে গ্রেপ্তার হওয়া মনোজিৎ চক্রবর্তী এবং রতন দাসকে আজ দুপুরে আদালতে তোলে পুলিশ পাঁচ দিনের জন্য রিমান্ডে চায়৷ এস ডি জে এম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি দুলাল শুক্ল দাস পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করে৷ এই মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসেবে খোয়াই থানার ওসি নারায়ণ চক্রবর্তীর নাম জেলা পুলিশ সুপার রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে জানালেও আজ আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবি জানান এই মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই দুর্গা প্রসাদ রাঙ্খল৷ তদন্তকারী অফিসার আদালতকে জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে নিকুঞ্জ আগরতলা থেকে খোয়াই আসে টি আর ০ ১ সি-১২৪৭ নাম্বারের বাসে করে৷ ঐ বাসের ড্রাইভার, কন্ট্রাকটার ও খলোশি নিকুঞ্জকে নৃপেল চক্রবর্তী এডিনিওতে নামতে দেয় নি৷ তারা গাড়ী চালিয়ে সোজা চলে যায় পুরাতন বাজার বাস সেন্টিকেটে৷ সেখানে নিকুঞ্জকে গাড়ী থেকে নামিয়ে তারা মারধর করতে থাকে৷ ঐ সময় সুবীর দাশগুপ্ত ঘটনাস্থলে এসে সেও নিকুঞ্জকে মারতে থাকে৷ পুলিশ আদালতে জানায় ঘটনা চলার সময় অওাগরতলা থেকে শেষ বাসটি টি আর ০ ১ বি-১২৩১ খোয়াই বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়ায় এবং বাসের ড্রাইভার মনোজিৎ এবং কন্ট্রাকটার রতন দাস ও নিকুঞ্জকে মারধরে হাত লাগায়৷ আজ আদালতে ঐ দুই শ্রমিককে নিয়ে আসা হলে ড্রাইভার মনোজিৎ চক্রবর্তী স্ত্রী গীতা চক্রবর্তী অভিযোগ তোলেন ওনার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে এই হত্যাকান্ডে৷ গীতা চক্রবর্তী জানান ওনার স্বামী এই ঘটনায় যুক্ত থাকলে তিনি বাসস্ট্যান্ডে থাকতেন না৷ পালিয়েই যেতেন সুবীরের মত৷ মনোজিৎ এর স্ত্রী জানান শনিবার সকালে তিনি গাড়ী চালানোর জন্য বাস স্ট্যান্ডে গেলে থানার পুলিশ ওনাকে এবং রতন দাসকে থানায় ডেকে নিয়ে যান সুবীরের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে৷ যেহেতু সুবীরের টি আর ০১ বি -১২৩১ বাস গাড়ীটি তিনি চালান৷ শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদেরকে থানায় জিজ্ঞেসাবাদের বাহানায় বসিয়ে রেখে রাত দশটায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷ মনোজিৎ এর স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে জানায় নির্দোষ স্বামীকে হত্যাকান্ডের কেইসে ফাঁসিয়ে দিয়েছে৷ ছেলে মিশন চক্রবর্তী জানায় তার বাবাকে ফাঁসানো হয়েছে৷
ঘটনার দিন তার বাবা রাত নয় টায় পুরাতন বাজার বাসস্ট্যান্ডে যায় গাড়ী নিয়ে৷ এই মারধরের ঘটনা ঘটে আরও আগে৷ অন্য দিকে গ্রেপ্তার হওয়া রামকুমার , সুধন্য ও প্রদীপকে থানায় পাঠায় এই মারধরের বিষয়ে তথ্য জানার জন্য ওসি নাকি ডেকেছে এই বলে৷ সেই মাত্র তারা থানায় গিয়ে ওসির সঙ্গে দেখা করেন তেমনি তাদের গ্রেপ্তার করা হয়৷ নিকুঞ্জ বর্মন হত্যাকান্ড ইস্যুতে পাঁচজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হলেও সেই সুবীর দাশগুপ্ত পুলিশের নাগালের বাইরে৷ প্রকৃত খুনিকে গ্রেপ্তার না করে পুলিশ যাদের গারদে ঢুকিয়েছে তারা আদৌ এই ঘটনার সঙ্গে কতটা জড়িত তা নিয়ে গুঞ্জন অব্যাহত খোয়াইতে৷