BRAKING NEWS

বিধানসভায় রাজ্যপাল : অসমের নিরাপত্তা, সুশাসন ও সকল ক্ষেত্রে সম-উন্নয়নের লক্ষ্য সৰ্বা সরকারের

গুয়াহাটি, ০২ জুন, (হি.স.) : একটি সুরক্ষিত অসম, বিকশিত অসম এবং সৰ্বশ্ৰেষ্ঠ অসম গড়ে তোলার মাধ্যমে অসমকে গৌরবের এক নতুন শিখরে নিয়ে যেতে সৰ্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্যের নবনিৰ্বাচিত মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদির সকলের সঙ্গে সকলের বিকাশ (সব-কা সাথ, সব-কা বিকাশ)-এর আদৰ্শ শিরোধার্য করেই রাজ্যের গৌরবোজ্জ্জ্বল পরম্পরা ও সংস্কৃতি রক্ষার মাধ্যমে অসমকে দেশের মধ্যে একটি আদৰ্শ রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলবে নতুন সরকার। চতুৰ্দশ অসম বিধানসভার প্ৰথম অধিবেশনের আজকের দ্বিতীয় দিন রাজ্যপাল পদ্মনাভ বালাকৃষ্ণ আচাৰ্য এভাবেই তাঁর ভাষণ শুরু করেন।

রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে বলেন, মহাপুরুষ শ্ৰীমন্ত শংকরদেব, মহাপুরুষ মাধবদেব এবং আজান পীরের দেশ অসমে মহান মনীষীবর্গের আদৰ্শ অটুট রেখে আত্মোৎসৰ্গ মনোভাব ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করাই সরকারের মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন জাতি জনজাতি, জনগোষ্ঠী, ধৰ্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘু, মহিলা, শিশু, গ্ৰাম ও শহরাঞ্চলের মানুষ, বেকার যুবক-যুবতী ও বিভিন্ন ক্ষেত্ৰে পশ্চাদপদ জনতাকে সম্মিলিত করে সমাজের সকল শ্ৰেণির জনসাধারণকে সুরক্ষিত রাখাই হবে এই সরকারের অগ্ৰাধিকারের বিষয়। স্বচ্ছ, দক্ষ এবং প্রতিশ্রুতিপূর্ণ প্ৰশাসনের মাধ্যমে দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে পরিষেবা প্ৰদান করে অসমকে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের উন্নয়নের তালিকায় শীৰ্ষ স্থানে নিয়ে যেতে এই সরকার বদ্ধপরিকর।

রাজ্যপাল জানান, অসমের অপরিসীম প্ৰাকৃতিক সম্পদ ও মানবসম্পদের সৰ্বাধিক ব্যবহার এবং আধুনিক গোলকীয় প্ৰযুক্তি ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা কৌশলসমূহের উপযু্ক্ত ব্যবহার করে অসমের সর্বাঙ্গীন বিকাশ সাধন করা হবে।

বিধানসভায় রাজ্যপালের অভিভাষণে নতুন সরকারের পরিকল্পনা ও অগ্ৰাধিকার সংবলিত বিষয়গুলিও ওঠে আসে। বলেন, বিগত তিন দশকেরও বেশি সময় উগ্রপন্থী কাৰ্যকলাপের মুখোমুখি হওয়ায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখন এই পরিস্থিতি থেকে ওঠে এসে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে শক্তিশালী করা তোলা, দুৰ্যোগপ্ৰবণ মণ্ডলগুলিকে শনাক্ত করে নতুন পুলিশ থানা বা পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন, পুলিশ বাহিনীর পরিকাঠামো শক্তিশালী করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। এছাড়া মহিলাদের সুরক্ষার প্ৰতি লক্ষ্য রেখে সকল পুলিশ থানায় একটি করে মহিলা সেল স্থাপন করা হবে বলেও জানান রাজ্যপাল। একইভাবে ঐতিহাসিক অসম চুক্তির যথার্থ বাস্তবায়ন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সুরক্ষা, অনুপ্ৰবেশকারীদের হাতাত থেকে সত্ৰ ও অন্যান্য ধৰ্মীয়-সাস্কৃতিক এবং পরিবেশজনিত ভূমিগুলিকে সুরক্ষা প্রদান, আইনি প্রক্রিয়ায় সন্দেহজনক নাগরিকদের দ্বারা সরকারি জমিগুলিকে বেদখলমুক্ত করা, নিৰ্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি সিল করার ওপরও সরকার যে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে তা-ও জানান রাজ্যপাল।

এদিকে, সকল সন্দেহজনক লোকের নাগরিকত্ব পরীক্ষার মাধ্যমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র নবায়ন প্রক্রিয়া সময়মতো সম্পূর্ণ করার প্রতিও সরকার প্রদত্ত প্ৰতিশ্ৰুতির কথা স্মরণ করেন তিনি। তাছাড়া রাজ্যের সৰ্বস্তরের বিকাশ ও ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নীতকরণের দ্বারা আৰ্থিক উন্নয়ন ও বিকাশের ধারা ত্বরান্বিত করা, নিয়োগ ও দারিদ্র্য নিৰ্মূলকরণের ব্যবস্থা, পঞ্চায়েত ও গ্ৰামোন্নয়ন, নগরোন্নয়ন, গুয়াহাটি মহানগর উন্নয়ন, হস্ততাঁত, বস্ত্ৰ ও রেশম, চা শিল্প, জলসেচ, জলসম্পদ, বন্যা ও ভাঙন রোধ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যক্ষেত্র-সহ রাজ্যের সামগ্ৰিক উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার গৃহীত লক্ষ্যগুলি সম্পর্কে রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, রাজ্য বিধানসভায় আজ সম্পূৰ্ণ শান্তিপূৰ্ণ ও নিরল পরিবেশে তাঁর ৫১ পৃষ্ঠার ভাষণ পেশ করেন রাজ্যপাল। প্ৰথমে অসমিয়া ভাযায় ভাষণ শুরু করলেও পরবর্তীতে তাঁর পুরো অভিভাষণ ইংরেজিতে পাঠ করেন তিনি।-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *