BRAKING NEWS

বেআইনী দখল

উন্নয়নমূলক কাজের প্রধান বাধা হইয়া দাঁড়ায় জমি সমস্যা৷ বিশেষ করিয়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রশ্ণে রাস্তা প্রশস্ত করা কিংবা উড়াল পুলের মতো প্রকল্প রূপায়ানের ক্ষেত্রে জমি সমস্যা দেখা দিয়াছে৷ এই সমস্যা হইতে উত্তরণের লক্ষ্যে সরকার জমি অধিগ্রহণ করিতে পারেন৷ কিন্তু অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন শর্ত সাম্প্রতিক কালে আরোপিত হইয়াছে৷ জোত জমিতে বহু অর্থ ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্প ভাঙ্গিয়া অধিগ্রহণ করা কিংবা কৃষিজমি কৃষকদের সম্মতি না নিয়া সরকারী শক্তি প্রয়োগ মানিয়া নেওয়া যায় না৷ সম্পত্তির অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার৷ এক্ষেত্রে সরকার উন্নয়নের নামে এমন করিতে পারেন না যাহাতে সংবিধানের মৌলিক অধিকার ভুলুন্ঠিত হয়৷ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সরকারী DSC_00061 (69)জমিতেই বেআইনী নির্মাণ হইয়াছে৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে কিংবা নিগমের একাংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার কর্মীর নজরদারীর অভাবে শহর আগরতলাই নহে রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই বেআইনী নির্মাণ কাজ চলিতেছে৷ বিশাল ইমারত তৈরী হইয়াছে৷ বিশেষ করিয়া রাজধানী শহর বা পুর এলাকায় বেআইনী বহু ইমারত গড়িয়া উঠিয়াছে৷ সরকারী জমি দখল করিয়া একের পর এক ইমারত গড়িয়া উঠে কিভাবে? পুর নিগমের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার কর্মীরা এইসব বেআইনী বাড়ী ঘর নির্মাণ হইতে থাকিলে সেখানে ব্যবস্থা নিতে পারেন না কেন? এই শহরে সরকারী জমি দখল করিয়া এত এত বেআইনী নির্মাণ হইলেও নিগম সেখানে চোখে টুলি পরিয়া থাকে? এক্ষেত্রে এমন অভিযোগও আছে নিগমের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার কর্মীরা দক্ষিণার বিনিময়ে এইসব বেআইনী ইমারত নির্মাণে পরোক্ষে সহায়তা করিয়া থাকেন৷ এই শহরের পুর এলাকায় এমন বেআইনী নির্মাণের সংখ্যা কম হইবে না৷ সরকারী জমির উপর ইমারত নির্মাণ করার সময়ই তো তাহা প্রতিহত করা উচিত৷ নিগম কার্য্যত সেক্ষেত্রে ব্যর্থ৷ আর এই ব্যর্থতার কারণে সমস্যা বাড়িয়াই চলে৷
আগরতলা-বিশালগড় জাতীয় সড়ক যেকোনও সময় প্রশস্ত হইতে পারে জানার পরও সরকারী জমিতে ইমারত গড়িয়া তুলিয়াছে অনেকেই৷ তাঁহারা কিভাবে পুর নিগমের প্ল্যান পাশ করাইয়াছেন৷ যদি প্ল্যান অনুমোদন না করাইয়া ইমারত তৈরী হয় নিগম সেখানে কী ভূমিকা পালন করে? আগরতলা-বিশালগড় জাতীয় সড়ক প্রশস্ত করা এবং যানজট এড়াইতে উড়াল পুলের তাগিদ অনেক আগেই উঠিয়াছে৷ রাজ্য সরকার উড়াল পুলের তৈরীর কাজও শুরু করিয়াছেন৷ খুব স্বাভাবিক ভাবেই সরকার বেআইনী জমি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট মালিকদের নোটিশও দিয়াছেন৷ অনুরোধ আলোচনা চলিয়াছে৷ এরই মধ্যে কয়েকজন মালিক বেআইনী দখল রাখিতে বা ইমারত বাঁচাইতে আদালতের দ্বারস্থও হইয়াছেন৷ সেখানে তাহাদের হার হইয়াছে৷ শেষ পর্য্যন্ত সরকার বেআইনী ইমারত ভাঙ্গিয়া ফেলিতে সিদ্ধান্ত নিয়াছে৷ রবিবার সকালেই নিগম, পশ্চিম জেলা প্রশাসন বিশাল টিএসআর ও পুলিশ বাহিনী নিয়া বেআইনী ইমারত ভাঙ্গিতে এলাকায় নামিয়া পড়ে৷ কিছু ইমারত মালিক প্রতিরোধ গড়িতে চাইলে তাহা প্রতিহত করে নিরাপত্তা রক্ষীরা৷ প্রবল উত্তেজনা সত্বেও বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে নাই৷ বেশ কয়েকজন ইমারত মালিক নিজেরাই দখলিকৃত জায়গা ছাড়িয়া দেন৷ কয়েকজন ইমারত মালিক সরকারী প্রকল্প রূপায়নে অংশ নেন৷ আসলে, সরকারী জমিতে ইমারত গড়িয়া তোলা যেমন অন্যায় তেমনি নিগমের কর্তাদের এইসব অন্যায় বা বেআইনী কাজ গোঁড়াতেই বন্ধ করিয়া না দেওয়া অন্যায়৷ এই শহর আগরতলার প্রাণ কেন্দ্র কামানচৌমুহনী হইতে পোস্টফিস চৌমুহনী ও অন্যান্য জায়গায় যেসব হকার ছিলেন তাহাদের তুলিয়া অন্যত্র পুণর্বাসন দেওয়া হইয়াছে৷ এই কাজ করিতে প্রশাসনের বা পুর নিগমের অনেক কাঠ খড় পোড়াইতে হইয়াছে৷ কিন্তু, এখন আবার শহরের ঐ জায়গায় বেআইনী দোকানী বসিয়া পড়িয়াছে৷ সরকারী উদ্যোগের এই দ্বিচারিতা সমস্যাকে বাড়াইয়া চলে৷ উড়াল পুল নির্মাণে যে জমি সমস্যা দেখা দিয়াছিল তাহা সামাল দেওয়া সম্ভব হইয়াছে৷ উড়াল পুলের জন্য যে অগ্ণিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হইয়াছিল সেখানে প্রশাসনের সেই কর্তারা মাথা ঠান্ডা রাখিয়া সমাধা করিয়াছেন৷ শহর আগরতলায় বিভিন্ন স্থানে যেসব হকাররা আবার রাজপথ দখল করিয়া দোকান খুলিয়াছে তাহা কোন্ শক্তির ইন্ধন তাহাই এখন খঁুজিয়া মুখোশ ছিড়িয়া ফেলিবার হিম্মত কি আছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *