ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ আদান প্রদানে ভারত ও বাংলার মৈত্রির নয়া অধ্যায়ের সূচনা ২৩শে

INDO-BANGLAনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ মার্চ৷৷ ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং কক্সবাজার থেকে ১০ জিবি ব্যান্ডউইথ আমদানির মাধ্যমে আগরতলায় ইন্টারনেট গেটওয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে আগামী ২৩ মার্চ৷ দুই রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী বিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ঐতিহাসিক মুহুর্তের সূচনা করবেন বলে জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী মানিক দে৷ এদিন উদ্বোধনী মুহুর্তে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ গ্রহণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও৷
পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশকে একশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় দুই রাষ্ট্রের মধ্যে৷ সম্প্রতি বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্যও চূড়ান্ত করা হয়েছে৷ বাংলাদেশ ত্রিপুরা থেকে প্রতি ইউনিট ভারতীয় মুদ্রায় ৫ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিদ্যুৎ ক্রয় করবে৷ তবে, ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি – নো পেমেন্ট’ এর ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ভারত তথা ত্রিপুরা থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করবে৷ এদিকে, কক্সবাজার থেকে ১০ জিবি ব্যান্ডউইথ আমদানী করবে ভারত৷ তাতে ইন্টারনেট গেইটওয়ে হচ্ছে আগরতলা৷ ভারতে মুম্বাই এবং চেন্নাইয়ের পর তৃতীয় ইন্টারনেট গেইটওয়ে মানচিত্রে যুক্ত হতে যাচ্ছে আগরতলা৷ স্বাভাবিকভাবেই এই ইন্টারনেট গেইটওয়ের দৌলতে উত্তর পূর্ব সহ সমগ্র পূর্ব ভারত ইন্টারনেট পরিষেবায় উপকৃত হবে৷ গত ১১ জুলাই কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী রবি শংকর আগরতলায় ইন্টারনেট গেইটওয়ের ভিত্তি প্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেছিলেন৷ ব্যান্ডউইথ আমদানীর জন্য আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ করা হয়েছে৷ গত বছরের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় দুই রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) ও বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানী লিঃ (বিএসসিসিএল) আখাউড়ায় ইন্টারনেটের আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথ লিজ দেওয়ার ঐ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ বাংলাদেশ থেকে আমদানীর জন্য প্রতি ব্যান্ডউইথের দাম ধরা হয়েছে ১০ ডলার৷
এদিন, বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি বিদেশ মন্ত্রক রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে ২৩ মার্চ বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ আমদানীর উদ্বোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করে৷ এদিকে, বিএসএনএলের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে৷ বিএসএনএল রাজ্য শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে ১০ জিবি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার শুরু হয়েছে৷ তাতে, রাজ্যের ইন্টারনেট গ্রাহকরা এর ন্যুনতম সুবিধা ইতিমধ্যেই পাচ্ছেন বলে দাবী বিএসএনএলের৷ সংস্থাটির রাজ্য শাখার জেনারেল ম্যানেজার আর রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন, ইন্টারেনট ব্যান্ডউইথ আমদানীর ফলে সমগ্র পূর্বোত্তর সহ পূর্ব ভারত দারুন উপকৃত হবে৷ ইন্টারনেটকে পঁুজি করে নতুন শিল্প সম্ভাবনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলেও তিনি দাবি করেন৷
এদিকে, গত ফেব্রুয়ারী থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হবার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) সম্পন্ন না হওয়ায় বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আমদানি করা যাচ্ছিল না৷ গত ৯ জানুয়ারী ঢাকায় বাংলাদেশের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে বৈঠক করেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী মানিক দে৷ ওই বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে দাম চুড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হয়৷ প্রতি ইউনিটের দাম নির্ধারণ করা হয় সাড়ে ৫ রুপি, যা বাংলাদেশি অর্থে ৬ টাকা ৪১ পয়সা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *