নীতিগত ফারাক বিস্তর তাই কংগ্রেসের সাথে জোটের প্রশ্ণই আসেনা, বললেন গৌতম দাশ

Gautam Dasনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ ফেব্রুয়ারী৷৷ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কমিউনিস্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর রঞ্জন বর্মন ইতিহাস বিকৃতি করেছেন বলে কটাক্ষ সিপিএম রাজ্য কমিটির মুখপাত্র গৌতম দাশ৷ রবিবার নিজ বাসভবনে শ্রী বর্মনের সাংবাদিক সম্মেলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সমীরবাবু উগ্র কমিউনিস্ট বিদ্বেষের পরিচয় দিয়েছেন৷ তাতে তিনি নিম্ন রুচির পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি সিপিএমের নামে কুৎসা রটিয়েছেন বলে গৌতমবাবু উষ্মা প্রকাশ করেন৷
এদিন তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ১৯২০ সালে ভারতের প্রথম কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়৷ ১৯২১ সালে পার্টি কংগ্রেসের আমেদাবাদ অধিবেশনে পূর্ণ স্বরাজ দাবি করেন কমিউনিস্টরা৷ অবিভিক্ত কমিউনিস্ট পার্টি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে৷ শ্রমিক কৃষকদের স্বার্থে আন্দোলন করেছে৷ শ্রী দাশের দাবি কমিউনিস্ট পতাকা নিয়ে নৌ বিদ্রোহ হয়েছে৷ এমনকি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শংকর দয়াল শর্মাও সংসদে সিপিএমের প্রশংসা করেছেন৷ তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, সিপিএম কখনো চীনের হয়ে শ্লোগান দেয়নি৷ বরং সিপিএমকে দুর্বল করতে বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেস র এবং সেনা বাহিনী ব্যবহার করেছে৷ তিনি তথ্য তুলে ধরে জানান, ১৯৫৯ সালে কেরলে সিআইএ এবং ১৯৭২ সালে পশ্চিমবঙ্গে র ব্যবহার করা হয়েছে সিপিএমের বিরুদ্ধে৷ সমীর বর্মন প্রসঙ্গে শ্রী দাশের কাটক্ষ কংগ্রেস-টিইউজেএস রাজ্যে ক্ষমতায় থাকাকালীন জঙ্গলের রাজত্ব কায়েম করেছিল৷ এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি শ্রী বর্মনের বক্তব্যের তীব্র ভাষায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷
কংগ্রেসের সাথে জোটের প্রশ্ণে গৌতমবাবুর দাবি সিপিএম তাদের কাছে যায়নি৷ বরং কংগ্রেস চাইছে সিপিএমের সাথে সমঝোতা করতে৷ তিনি বলেন, জনবিরোধী নীতি এবং স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে সারা দেশে কংগ্রেসের অস্তিত্ব সংকটের মুখে৷ তাদের সাথে নীতিগতভাবে বিস্তর ফারাক রয়েছে সিপিএমের৷ ফলে কংগ্রেসের সাথে জোটের প্রশ্ণই আসেনা বলে তিনি দাবি করেন৷
এদিকে, জেএনইউ ইস্যুতে ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়া কুমারের গ্রেপ্তারী প্রসঙ্গে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধুনো করেন গৌতম বাবু৷ তাঁর বক্তব্য কানহাইয়া কুমার জেএনইউ ক্যাম্পাসে দেশবিরোধী শ্লোগান দেয়নি৷ কমিউনিস্ট শক্তিকে দুর্বল করতেই বিজেপির মদতে ঐ ছাত্রনেতাকে জেলে ঢুকানো হয়েছে৷ এদিকে, বিজেপি আরএসএস কমিউনিস্টদের দেশপ্রেম নিয়ে যে প্রশ্ণ তুলেছে তার বিরোধীতা করে তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে দেশপ্রেমের সার্টিফিকেট নিতে হবে না৷ আর এস এসের লক্ষ্য ধর্মনিরপেক্ষতার নাম করে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার৷ মিথ্যার ভিত্তিতে উগ্র হিন্দুত্বের জিগির তোলার পিছনে মুখ্য কারণ হচ্ছে গত কুড়ি মাসের শাসনে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সবটাই খেলাপ করেছে৷ এদিন তিনি জানান, জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় বামফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে সারা দেশে আগামী ২৩-২৫ ফেব্রুয়ারী মিছিল ও সভা সংগঠিত করবে৷ যেহেতু রাজ্যে ভিলেজ কমিটির নির্বাচন ২৪ ফেব্রুয়ারী সেক্ষেত্রে রাজ্য বামফ্রন্ট কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারী সর্বত্র মিছিল ও সভা সংগঠিত করার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *