কংগ্রেসের সাথে জোটের পথ খুলা রেখে কৌশলী সিদ্ধান্ত সিপিআইএম’র

Congress CPIMনিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ১৮ ফেব্রুয়ারি৷৷ কংগ্রেসের সাথে জোটের প্রশ্ণে কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআইএম৷ দুদিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে জোট নিয়ে মতবিরোধের মাঝেই কংগ্রেসের জন্য জোটের পথ খুলে রাখল ইয়েচুরিরা৷ বৃহস্পতিবার বৈঠক শেষে সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল৷ তাতে কার্যত কৌশলে জোটের পথ খুলে রাখল সিপিএম৷ আর তাই নাম না করে জোট বার্তা দিল কংগ্রেসকে৷
এদিন, ইয়েচুরি বলেন, সিপিএমের পলিটব্যুরো সিদ্ধান্ত নিয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হবে৷ পশ্চিমবঙ্গকে লক্ষ্য রেখে স্লোগান হবে তৃণমূলকে হারাও, বিজেপিকে সরাও৷ তবে, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যে কংগ্রেসও রয়েছে কিনা সে প্রশ্ণের সরাসরি কোন উত্তর দিলেন না ইয়েচুরি৷ তাতে প্রশ্ণের মুখে সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বরা৷ তাদের মতে, কংগ্রেসের তরফে প্রস্তাব এলে বিবেচনা করে দেখা হবে৷ সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবে দলের রাজ্য কমিটি৷
সূত্রের খবর, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে প্রথম দিনেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে জোরালো সওয়াল করেছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র-গৌতম দেবরা৷ বৈঠকের প্রথমদিনে কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ সদস্যই ঘোষিত জোটের বিপক্ষে ছিলেন৷ সূত্র অনুসারে জানা গেছে, এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নামটি এড়িয়ে জোট নিয়ে মধ্যপন্থার খোঁজে ছিলেন সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেড৷ এমন একটা মধ্যপন্থা বের করতে হবে যাতে বামফ্রন্টের বাইরে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তি এক মঞ্চে আসতে পারে৷
ঐ বৈঠকে কারাত অনুগামীরা কংগ্রেসের সাথে জোটের প্রশ্ণে তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন বলে সূত্র অনুসারে জানা গেছে৷ তাতে জোট নিয়ে সিপিএমে দুই লবিতে মতবিরোধ চরমে উঠে৷ সীতারাম ইয়েচুরি অবশ্য বঙ্গ ব্রিগেডের সাথে সহমত পোষণ করে জোটের পক্ষেই ছিলেন৷ কিন্তু পলিটব্যুরোর অধিকাংশ সদস্য জোটের বিরোধিতায় সওয়াল করলে মধ্যপন্থা নিয়ে ভাবতে বাধ্য হন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বরা৷ কারণ, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি কেরালা, তামিলনাড়ু, পুডুচেরি এবং আসামে বিধানসভা নির্বাচন৷ কেরলে বামেদের প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস৷ এছাড়া তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকের সাথে গত লোকসভা নির্বাচনে জোট গঠনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সত্ত্বেও অবশেষে তা ভেস্তে গিয়েছিল৷ এদিকে, ডিএমকের সাথে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস৷ ফলে, তামিলনাড়ুতেও মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে হচ্ছে সিপিএমকে৷ এছাড়া পুডুচেরি এবং আসামে সংগঠন বিস্তারের ক্ষেত্রেও মধ্যপন্থা প্রয়োজন পড়বে বামেদের৷ কার্যত, সে সমস্ত ভাবনাতেই সীলমোহর দিল সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ তাদের যুক্তি, কংগ্রেসের তরফে জোটের আবেদন মিললেই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ তাতে বঙ্গ ব্রিগেড এবং কেরল লবি উভয়ের দাবি বজায় রাখা সম্ভব হবে৷