মা ও ছেলেকে নৃশংস খুন ডুকলিতে

DEADনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ ফেব্রুয়ারি৷৷ রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ পূর্ব ডুকলির একটি বাড়িতে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে৷ নিহতরা হল মা ও পুত্র৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ নিহতরা হল গৌরী চক্রবর্তী ও তার ছেলে দেবব্রত চক্রবর্তী৷ গৃহকর্তা দুলাল চক্রবর্তী বাড়িতে ছিলেন না৷ তিনি  লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ির পুরোহিত৷ গতকাল বাড়ি থেকে মন্দিরে চলে এসে রাত দশটা নাগাদ বাড়িতে ফোন করেছিলেন৷ কিন্তু ফোন সুইচ অফ দেখিয়েছিল৷  আজ সকালেও আটটা নাগাদ ফোন করেন৷ তখনও সুইচ অফ দেখায়৷ কিছুক্ষণ বাদেই তার কাছে ফোন আসে স্ত্রী অসুস্থ৷ সে ফোন পেয়েই তিনি লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির থেকে বাড়িতে যান৷ বাড়িতে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে রয়েছে৷ ছেলেও নিখোঁজ৷ ঘটনায় রীতিমত বিধবস্ত হয়ে পড়েন তিনি৷ ঘটনার খবরপেয়ে ছুটে যায় পুলিশ৷ এরই মধ্যে গৌরী চক্রবর্তী মৃতদেহটি ঘর থেকে  উঠোনে বের করে নিয়ে আসা  হয়৷ ঘটনাস্থলে ছুটে যান পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার বিজয় নাগও৷ প্রথম দিকে সন্দেহ হয়েছিল হয়ত মাকে হত্যার সঙ্গে ছেলে জড়িত থাকতে পারে৷ কিন্তু কিছুক্ষণ বাদে তল্লাশি চালানোর সময় দেখা যায়, বাড়ির পাশেই একটি পুকুরের পাড়ে রক্তের ছাপ রয়েছে৷ রক্তের ছিটে ফোঁটা পুকুরের জলের দিকে রয়েছে৷ তাতে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়৷ পুকুরে তল্লাশি চালানো হয়৷ তল্লাশি চালিয়ে পুকুর থেকে দেবব্রত চক্রবর্তীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ ডগ স্কোয়াড এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে৷ প্রয়োজনীয় তথ্য পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে নিয়ে যাওয়া হয়৷ ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার বিজয় নাগ জানান, নিহত গৌরী চক্রবর্তীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে৷ তার নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে৷ তার পুত্র দেবব্রত চক্রবর্তীর গলায় দাড়ালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ণ রয়েছে৷ শ্বাসনালি কেটে তাকে হত্যা করা হয়েছে৷ জোড়া খুনের ঘটনায় পুলিশ রীতিমত হতভম্ব হয়ে পড়ে৷ গোটা এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ ডগস্কোয়াড নিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালায়৷ সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করে পুলিশ৷ জানা যায়, কিছুদিন আগে ঐ যুবকের সঙ্গে মোবাইল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নাকি দেবব্রত’র বচসা হয়েছিল৷ কিন্তু এই জোড়া হত্যাকান্ডে আটক ব্যক্তি আদৌও জড়িত রয়েছে কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি৷ পুলিশ এবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এই বিষয়ে জানাতে অস্বীকার করেছে৷ তবে এটি যে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড সে সম্পর্কে কারোর কোন সন্দেহ নেই৷ জানা গেছে, গৌরী চক্রবর্তীর সোনার গয়নাগাটিও নিয়ে গেছে খুনীরা৷ কি কারণে এই হত্যাকান্ড ঘটেছে সে সম্পর্কে এলাকার লোকজনও কিছুই বলতে পারছেন না৷ জেলা পুলিশ সুপার জানান, এলাকার লোকজনরা জানিয়েছে, দুলাল চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে এলাকার কারোর কোন বিবাদও ছিল না৷ একই কথা শুনিয়েছেন দুলাল চক্রবর্তী নিজেও৷ স্বাভাবিক কারণেই জোড়া হত্যাকান্ড ঘিরে কি রহস্য আত্মগোপন করে রয়েছে তা নিয়ে জনমনে কৌতুহল বাড়ছে৷ পাশাপাশি রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ এলাকায় এই ধরনের হত্যাকান্ড ঘিরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়েও নতুন করে নানা প্রশ্ণ দেখা দিয়েছে৷ উল্লেখ্য, আগরতলা শহর ও শহরতলী এলাকায় এই ধরনের খুন খারাপির ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে৷ তাতে এসব এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষও আতঙ্কগ্রস্ত৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *