BRAKING NEWS

পিএমইজিপি প্রকল্পে ঋণ প্রদানে তালবাহানা, রাজ্যের ব্যাঙ্কগুলিকে শাসালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ ফেব্রুয়ারী৷৷ পিএমইজিপি প্রকল্পে ঋণ প্রদানে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক তালবাহানা করছে৷ রাজ্যের এই অভিযোগে কেন্দ্রীয় মাইক্রো, স্মল ও মিডিয়াম এন্টাপ্রাইজ রাষ্ট্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং ব্যাঙ্কগুলির আধিকারীকদের কড়া দাওয়াই দিয়েছেন৷ ঋণ প্রদানে কেন অভিযোগ উঠছে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে ব্যাঙ্কগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন৷ পাশাপাশি আগামীদিনে এধরনের কোন গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলেও তিনি কড়া বার্তা দিয়েছেন৷

বৃহস্পতিবার আগরতলায় প্রজ্ঞা ভবনে রাজ্যের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আধিকারীকদের সাথে বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং৷ নিজস্ব ছবি৷
বৃহস্পতিবার আগরতলায় প্রজ্ঞা ভবনে রাজ্যের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের আধিকারীকদের সাথে বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং৷ নিজস্ব ছবি৷

বৃহস্পতিবার আগরতলায় প্রজ্ঞা ভবনে আয়োজিত ব্যাঙ্কার্স রিভিউ মিটিংয়ে রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী পিএমইজিপি প্রকল্পে ঋণ প্রদানে বিভিন্ন ব্যাঙ্কগুলির ভূমিকা তুলে ধরেন৷ তাতে উঠে আসে অধিকাংশ রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক এই প্রকল্পে ঋণ প্রদানে চরম গাফিলতির প্রমাণ রেখেছেন৷ তথ্য উপস্থাপন করে শ্রীচক্রবর্তী জানান এসবিআই, ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক, ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক, ইউবিআই এবং ইউকো ব্যাঙ্ক ছাড়া আর কোন ব্যাঙ্ক পিএমইজিপি প্রকল্পে ঋণ প্রদান করেনি৷ মোট ২৭টি ব্যাঙ্ক রয়েছে রাজ্যে৷ তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলির পারফরম্যান্স খুবই খারাপ৷ পিএমইজিপি প্রকল্পে সর্বাধিক ঋণ প্রদান করেছে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক৷ এছাড়াও এসবিআই, ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক, ইউকো এবং ইউবিআই ব্যাঙ্ক এই প্রকল্পে ঋণ প্রদান করেছে৷ রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলির উদ্দেশ্যে উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, কেবলমাত্র বাণিজ্যিক দিক ভেবে কাজ করলে চলবে না৷ প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে হবে৷ এদিন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের আধিকারিকদের কাছে ঋণ প্রদানে তালবাহানার কারণ জানতে চান৷ কিন্তু উপস্থিত আধিকারিকরা সঠিক কোন কারণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ তাতে চটে লাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন, এধরনের অভিযোগ আগামীদিনে বরদাস্ত করা হবে না৷ সমস্যা থাকলে তা সঠিক কারণ দেখিয়ে জানাতে হবে৷ তা না হলে রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে এধরনের প্রকল্পে ব্যাঙ্কগুলিকে যথার্থ ভূমিকা নিতেই হবে৷
ব্যাঙ্কগুলির উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, কেবল ব্যবসা করলে চলবে না৷ রাজ্যে বিনিয়োগ করতে হবে৷ সেক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা পরিবর্তন আনতে হবে৷ ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কেবল বড়দের দেখলে হবে না৷ ছোট এবং মাঝারি গ্রুপের ঋণ গ্রহীতাদেরও সমানভাবে দেখতে হবে৷ মন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য আর্থিক সংগতির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা৷ ব্যাঙ্ক থেকে এই প্রকল্পে ঋণ গ্রহণ করে বাণিজ্য শুরু করলে নূ্যনতম ছয়জন বেকারের কর্মসংস্থান সম্ভব বলে তিনি দাবি করেন৷ সেক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিকে আন্তরিকতার সাথে সুযোগ সুবিধা প্রদান করার নির্দেশ দেন তিনি৷
এদিন মহাকরণে ব্যাঙ্কার্সদের রিভিউ মিটিং প্রসঙ্গে রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী জানিয়েছেন, যেসব ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদানে তালবাহানা করছে তাদেরকে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট শিল্প মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং৷ শ্রীচক্রবর্তী তথ্য তুলে ধরে জানান, রাজ্যে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অফ কমার্স, এক্সিস ব্যাঙ্ক, আইডিবিআই, ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র, ইয়েস ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি, সিন্দ ব্যাঙ্ক এবং কানাডা ব্যাঙ্ক পিএমইজিপি প্রকল্পে একটি ঋণও অনুমোদন করেনি৷ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এই রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলি প্রতিবছর কেবল সিডি রেশিও বাড়িয়ে দেখানোর চেষ্টা করে৷ এরই পাশাপাশি তিনি জানান, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে পিএমইজি প্রকল্পে বর্তমানে সুবিধাভোগীর সংখ্যা দেড় হাজার, তা বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দিল্লি ফিরে গিয়ে তা ভেবে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *