নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ জানুয়ারি৷৷ হাপানিয়ার আগরতলা আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে আজ থেকে শুরু হয়েছে ২৬ তম শিল্প ও বাণিজ্য মেলা৷ মেলা চলবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত৷ আজ সন্ধ্যায় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী মেলার উদ্বোধন করেন৷ এ বারের মেলার মোট ২১৫টি ষ্টল রয়েছে৷ এর মধ্যে বাংলাদেশের শিল্প ও বাণিজ্য উদ্যোগীদের ষ্টল রয়েছে ৪৫টি৷
মেলার উদ্বোধন করে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী বলেন, ত্রিপুরা হচ্ছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সিংহ দুয়ার৷ শিল্প ও বাণিজ্যের বিকাশে এ রাজ্যের সম্ভাবনা যেমন বিপুল তেমনি পূর্ব ও উত্তর পূর্ব ভারতের শিল্প বাণিজ্যের বিকাশেও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে৷ তিনি বলেন, পূর্ব ভারতকে শিল্প ও বাণিজ্যের দিক থেকে বর্হিমূখী করতে গেলে আমাদের সবচেয়ে বড় অবলম্বন বাংলাদেশ এবং তারপর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি৷ এই সম্ভাবনার কথা মনে রেখেই এ্যাক্ট ইষ্ট পলিসিকে বাস্তবায়নের জন্য ত্রিপুরাকে ভিত্তি করে পরিকল্পনা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়েছে৷ শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার পরিকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশের একটা সহায়ক ভূমিকা রয়েছে৷ বাংলাদেশের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই৷ আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ও খাদ্য সামগ্রী খুব অল্প সময়ে চলে আসছে৷ আমরা চাই দু’দেশের পারষ্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে৷ শিল্প ও বাণিজ্যিক সম্প্রসাণে দুদেশের জনগণের মধ্যে যে সৌভাতৃত্ববোধ রয়েছে তা আরও সুদৃঢ় হবে৷ আখাউড়া – আগরতলা রেল সংযোগ স্থাপিত হলে দুদেশের সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে ৷ তা ত্রিপুরার শিল্প ও বাণিজ্যের বিকাশেও একটা ভূমিকা নেবে৷
তিনি বলেন, রেল গোটা দেশকে যুক্ত করে৷ আগরতলা পর্যন্ত ব্রড গেজ হয়ে গেছে৷ ২০১৭ সালের মধ্যে তা সাব্রুম পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ এই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও রাজ্যের অভ্যন্তরে শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের যে সহজলভ্যতা রয়েছে থাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের উদ্যোগীদের শিল্প স্থাপনে এগিয়ে আসতে তিনি আহ্বান জানান৷ শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর উদ্যোগীদের সবরকম সহায়তা দেবে৷
উদ্বোধনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথি ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেন, বাংলাদেশের সাথে ত্রিপুরার সম্পর্ক ঐতিহাসিক৷ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিপুরার অবদানের কথা তিনি স্মরম করে বলেন, এই বিশ্বায়েেনর যুগে আমরা একে অপরের উপর নির্ভর করে এগিয়ে যাবো৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরার উন্নয়নের এক অপার সম্ভাবনা রয়েছে৷ এই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে দুদেশের পারষ্পরিক আস্থা ও সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে হবে৷ বিনিয়োগের মাধ্যমে উভয় দেশের সমঝোতা এই অঞ্চলের উন্নয়নের পথকে সুগম করবে৷ তিনি বলেন, আপনার প্রগতি -আমাদেরও প্রগতি৷ তিনি আরও বলেন, আগরতলা ঢাকা হয়ে দুদেশের মধ্যে সড়ক পথে যোগাযোগ চালু হয়েছে৷ পরিকল্পনা করে নদী পথে দুদেশের যোগাযোগ সুগম হতে পারে৷ সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত বলেন, ত্রিপুরার এক বিশাল শিল্প সম্ভাবনা রয়েছে৷ উন্নত রেল যোগাযোগ ও বাংলাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ এই সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করছে৷ রাজ্যের গ্যাস ও কৃষি এবং উদ্যানজাত কাঁচা মাল নিয়ে রাজ্যে শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ বিদ্যুতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি৷ এই স্বয়ম্ভরতা শিল্প বিকাশে ভূমিকা নেমে৷ তাছাড়া, বক্তব্য রাখেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা ভি জি জেনার৷ সভাপতিত্ব করেন দপ্তরের প্রধান সচিব এম নাগারাজু৷
2016-01-30