BRAKING NEWS

সরকারী কর্মীদের একশ শতাংশ রাজনীতি মুক্ত থাকতে হবে বলে সতর্ক করলেন রাজ্যপাল

Governor Voterনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ জানুয়ারী ৷৷ সরকারী আমলাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ণ তুলেছেন রাজ্যপাল তথাগত রায়৷ পাশাপাশি তাঁদের সংবিধানের প্রধান শর্ত রাজনীতি বিমুক্ত থাকার পাঠ পড়িয়েছেন তিনি৷ সোমবার জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল সরকারী আমলাদের মনে করিয়ে দেন, সংবিধানের প্রধান শর্ত পূরণ করার ক্ষেত্রে রাজনীতি বিমুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে৷ এটা ভুললে চলবে না৷ এটা ভুলে যাওয়া মানেই হচ্ছে গণতন্ত্রকে বিকৃত করা৷
[vsw id=”uF_dxirmlDw” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]এদিন তিনি সরকারী আধিকারীকদের সাথে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মৌলিক তফাৎ রয়েছে, সে কথাও পরিস্কার করে দেন৷ তাঁর বক্তব্য, যারা নির্বাচিত হন তাঁরা স্বাভাবিকভাবে রাজনীতির মানুষ৷ কিন্তু যারা নির্বাচিত হননা তাঁরা সম্পূর্ণভাবে রাজনীতি মুক্ত মানুষ৷ আর গণতন্ত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শর্ত অনুযায়ী স্থায়ী সরকারী কর্মচারীরা যারা ৬০ বছর পর্যন্ত চাকুরী করবেন তাঁদের ১০০ শতাংশ রাজনীতি মুক্ত থাকতে হবে বলে সতর্ক করে দেন৷
রাজনীতির মানুষ এবং রাজনীতিমুক্ত মানুষের মধ্যে তফাৎ বিশ্লেষণ করে রাজ্যপাল আরো বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সরকারের নীতি ঠিক করবেন৷ আর সেই নীতি রূপায়ন করবেন আধিকারীকরা৷ কিন্তু সেই নীতি রূপায়নের ক্ষেত্রে কিংবা ভোট প্রক্রিয়া চালানোর বা অন্য কোন সময় আমাদের গণতন্ত্র এবং সংবিধানের অন্যতম প্রধান শর্ত মোতাবেক তাঁদের সম্পূর্ণ রাজনীতি বিমুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে৷ আর তাঁরা যদি রাজনীতি বিমুক্ত হয়ে কাজ না করেন তাহলে সংবিধানের প্রধান শর্ত পূরণ হবে না৷ রাজ্যপাল সরকারী আমলাদের স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, জনগণের পরিষেবায় রাজনৈতিক নিরপক্ষেতা অন্যতম প্রধান শর্ত৷ আর এটা অনেকেই অনেক সময় ভুলে যান বলে তিনি সরকারী আমলাদের কটাক্ষ করেন৷ পাশাপাশি তাঁদের এও মনে করিয়ে দেন যে এই শর্ত ভূললে চলবে না৷ কারণ এটা ভূলা মানে হচ্ছে গণতন্ত্রকে বিকৃত করে ফেলা৷
মূলতঃ অনুষ্ঠানে রাজ্যপালের আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিভিন্ন বক্তা ভোটার দিবসের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করেন৷ তাতে ফুটে উঠে, একই ব্যক্তির নামে একাধিক ভোটার কার্ডের বিষয়টি৷ এদিন রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার প্রশ্ণে সরকারী আমলাদের পক্ষপাতমুক্ত হওয়ার বিষয়ে সওয়াল করেন৷ তিনি স্পষ্ট করে দেন, নির্বাচন কমিশন সরকার দ্বারা নিযুক্ত ঠিকই৷ কিন্তু নিযুক্ত হওয়ার পর কমিশন সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ৷ ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে যাতে পক্ষপাতের ছায়া না পড়ে সেবিষয়ে সচেষ্ট৷ তবে, একই ব্যক্তির একাধিক ভোটার কার্ডের প্রশ্ণে কমিশনের নিরপেক্ষতায় আমলাদের ভূমিকা নিয়েই এদিন রাজ্যপাল প্রশ্ণ তুলেছেন বলে মনে করছেন তথ্যভিজ্ঞ মহল৷
উল্লেখ্য, সোমবার ছিল ষষ্ঠ জাতীয় ভোটার দিবস৷ এবছর জাতীয় ভোটার দিবস মূল ভাবনা ছিল সর্বাত্মক এবং গুণগত অংশগ্রহণ৷ এই উপলক্ষ্যে আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়৷ সকালে প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল তথাগত রায়৷ এই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল সহ অন্যান্য অতিথিগণ নতুন ভোটারদের হাতে সচিত্র পরিচয় পত্র তুলে দেন৷ নতুন ভোটারদের শপথ বাক্য পাঠ করান সদর মহকুমা শাসক মানিকলাল দাস৷ এদিন, অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জি কামেশ্বর রাও ভোটার দিবসের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করে বলেন, ভোটদানে যুব সম্প্রদায়ের ভোটারদের উজ্জীবিত করা, তাদের মধ্যে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গর্ববোধ জাগানো এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করাই মূল লক্ষ্য৷ স্বাগত ভাষণ দেন রাজ্যের মুখ্যনির্বাচন আধিকারিক এস কে রাকেশ৷ ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন পশ্চিম জেলার জেলাশাসক ড মিলিন্দ রামটেকে৷ এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মুখ্যনির্বাচন আধিকারিক দেবাশিষ মোদক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *