দুয়েক দিনের মধ্যেই মনোরঞ্জন আচার্য্যের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

Cong Protestনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জানুয়ারি৷৷ সিপিএমের বহিষৃকত বিধায়ক মনোরঞ্জন আচার্যের বিরুদ্ধে আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিধানসভায় জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷
উল্লেখ্য, অমরপুরে সিপিএম পার্টি অফিসে জনৈকা নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠে মনোরঞ্জন আচার্যের বিরুদ্ধে৷ এই ঘটনায় দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়৷ এবং বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিতে বলা হয়৷ দলীয় নির্দেশে মনোরঞ্জন আচার্য্য বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন৷
[vsw id=”VYfLF0sjL1Y” source=”youtube” width=”325″ height=”244″ autoplay=”yes”]মনোরঞ্জন আচার্য্যর নাবালিকাকে শ্লীলতাহানি ইস্যুতে এদিন বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনেন বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায় বর্মণ৷ অধ্যক্ষ এই প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ায় বিধানসভা অধিবেশনে বিরোধী বেঞ্চের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ তাঁরা এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য দাবি করেন৷ অধিবেশনের প্রথমার্ধে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে এই ইস্যুতে কোন বক্তব্য রাখতে সম্মত হননি৷ তাতে বিরোধীরা ওয়েলে নেমে গিয়ে হৈ হট্টগোল শুরু করেন৷ বিরোধীদের হৈ হট্টগোলের মধ্যেই অধ্যক্ষ অধিবেশনের প্রথমার্ধ মুলতুবি ঘোষণা করেন৷ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পুনরায় বিরোধী বেঞ্চের সদস্যরা একই দাবিতে সোচ্চার হন৷ তখন অধ্যক্ষ বিরোধীদের হৈ হট্টগোলের মধ্যেই শোক প্রস্তাব পাঠ করেন৷ শোক প্রস্তাব পাঠ শেষ হওয়ার পর অধ্যক্ষ বিরোধী বেঞ্চের সদস্যদের অনুরোধ জানান, মুখ্যমন্ত্রী সভায় উপস্থিত হলে তাঁকে এই ইস্যুতে বক্তব্য রাখতে অনুরোধ জানাবেন৷ তাতে বিরোধী বেঞ্চের সদস্যরা আশ্বস্ত হন এবং হৈ হট্টগোল বন্ধ করে দেন৷ এরপর মুখ্যমন্ত্রী সভায় উপস্থিত হয়ে মনোরঞ্জন আচার্য ইস্যুতে জানান, ইতিমধ্যে পুলিশ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷ ১৬৪ ভিত্তিতে নির্যাতিতার বাবা-মা ও দাদুর বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়েছে৷ পাশাপাশি অভিযুক্তকে নোটিশ জারি করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী সভায় জানান, অভিযুক্ত মনোরঞ্জন আচার্য্য নোটিশের জবাব দেওয়ার জন্য ১৫ দিনের সময় চেয়েছিলেন৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে সাতদিনের সময় দিয়েছিল৷ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর পুনরায় তাঁকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে৷ এই ইস্যুতে পুলিশেরপ্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে৷ দুই একদিনের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সভায় আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷
এদিকে, বিরোধী দলের অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অভিযুক্তকে মামলা থেকে রেহাই দিতে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ নির্যাতিতার বক্তব্যের পাল্টা হিসেবে বাবা-মা ও দাদুর বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়েছে৷ তাতে আদালতে দুই ধরনের বয়ান জমা দেওয়া হবে৷ এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, যদি নির্যাতিতার বাবা-মা ও দাদুর বয়ান সত্য হয়ে থাকে তাহলে মনোরঞ্জন আচার্য্য চক্রান্তের শিকার৷ আর যদি নির্যাতিতার বয়ান সত্য হয়ে থাকে তাহলে তিনি গুরুতর অপরাধী৷ তবে উভয় ক্ষেত্রেই সিপিএম মনোরঞ্জন আচার্য্যকে বাঁচানোর প্রয়াস নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা৷ তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, অতীতে কোন সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি৷ পাশাপাশি বিধায়ক রতন লাল নাথ প্রশ্ণ তুলেন, পস্কো আইনে কাউকেই নোটিশ পাঠানোর বিধান নেই, কিন্তু মনোরঞ্জন আচার্য্যের ক্ষেত্রে কেন নোটিশ পাঠানো হল৷ এদিন বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করে বলেন, পুর ও নগর নির্বাচন সমাপ্ত হতেই মনোরঞ্জন আচার্য্যর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেয়৷ অথচ ঘটনার ১৬দিন পর থানায় জিডি এন্ট্রি হয়৷ আর বিভিন্ন দিক দিয়ে চাপের মুখে পড়ে অবশেষে গত ১৫ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে সুয়োমুটো মামলা নেয় পুলিশ৷ বিরোধী দলের বক্তব্য ঘটনার পর পরই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছিল৷ কিন্তু সমস্ত কিছু জনসমক্ষে চলে আসায় অনেকটা বাধ্য হয়েই শাসক দল সিপিএম মনোরঞ্জন আচার্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে৷ অতীতের মামলাগুলির মতই এই যাত্রাতেও মনোরঞ্জন আচার্যের ক্ষেত্রে কোন ধরনের আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে না বলে অভিযোগ তুলে বিরোধী দল কংগ্রেস৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *